• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

আজ আন্তর্জাতিক ন্যাশ দিবস

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২১  

আজ ১০ জুন, আন্তর্জাতিক ন্যাশ দিবস। ফ্যাটি লিভার সম্বন্ধে ব্যাপক জন সচেতনতা তৈরীর জন্য প্রতি বছর আন্তর্জাতিক ন্যাশ দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশে ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক ন্যাশ দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে দিবসটি।

দেশে লিভার বিশেষজ্ঞরা ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক ন্যাশ দিবস’ উদযাপনের মাধ্যমে একদিকে যেমন দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য আরো ভালোভাবে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চায়, তেমনি জাতির পিতার শতবার্ষিকীতে তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদনও অন্যতম উদ্দেশ্য।

বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে মেদ-ভুঁড়ি, ডায়াবেটিস, ডিজলিপিডেমিয়া বা রক্তে অতিরিক্ত চর্বি, হাইপারটেনশন বা অতিরিক্ত রক্তচাপ, হাইপোথাইরয়েডিজম আর মহিলাদের পলিসিস্টিক ওভারি ফ্যাটি লিভারের মূল কারণ।

প্রসঙ্গত, মানুষ দিনে দিনে ফাস্ট ফুডের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। গত কয়েক বছরে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে এমন পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো। রাজধানীর নামিদামি মার্কেট, আন্তর্জাতিক চেন রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে অলিগলি, এমনকি দেশের শহরাঞ্চলে ফাস্ট ফুডের দোকান। অতি তৈলাক্ত, চর্বিযুক্ত ও অতিমাত্রায় লবণ ও বিটলবণ ব্যবহার করে নানা দেশি-বিদেশি রেসিপির খাবার পরিবেশন করে এ দোকানগুলো। আর এ খাবারের চাহিদাও ব্যাপক। মুখরোচক হওয়ায় এখন ঘরে ঘরে এসব ফাস্ট ফুড বানানোর প্রচলন শুরু হয়েছে।

বিশেষ করে শিশু ও নারীদের এসব খাবারের প্রতি ঝোঁক বেশি। আর এসব ফাস্ট ফুডই এখন ভয়ানক বিপদ বয়ে এনেছে বাংলাদেশের জন্য। লিভারের মারাত্মক সব রোগের ঝুঁকির জন্য বিশেষজ্ঞরা দায়ী করছেন এমন অস্বাস্থ্যকর খাদ্যকে। এসব অস্বাস্থ্যকর খাদ্য থেকে ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিস, এমনকি লিভার ক্যান্সার পর্যন্ত হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের তথ্য অনুসারে বাংলাদেশে ৩০ শতাংশ বা সাড়ে চার কোটি মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। এর চেয়েও আরো ভয়ের তথ্য হলো—এই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তদের মধ্যে ৩৬ থেকে ৫৪ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়েছে অস্বাস্থ্যকর খাবারজনিত লিভারের রোগ বা নন-অ্যালকোহলিক স্টিয়েটোহেপাটাইটিসে (ন্যাশ)। 

রোগটির পরিচিতি নতুন হলেও বিশ্বব্যাপী এই ন্যাশ এখন মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে একইভাবে বিস্তার ঘটছে ন্যাশের। 

ফ্যাটি লিভারের সবচাইতে কার্যকর চিকিৎসাটির নাম ‘লাইফ স্টাইল মডিফিকেশন’ বা ‘যাপিত জীবনযাত্রার পরিবর্তন’। অতিরিক্ত শর্করা আর চর্বি জাতীয় খাবারগুলো না খেয়ে আর পাশাপাশি সপ্তাহে অন্তত পাঁচটি দিন আধ ঘন্টা করে হেঁটে আমরা আমাদের লিভারটাকে ফ্যাট মুক্ত রাখতে পারি। পাশাপাশি যে সব রোগের কারণে লিভারে জমে অতিরিক্ত চর্বি সে সব রোগেরও চিকিৎসা করতে হবে। সঙ্গে ব্যবহার করা যায় ওবিটাকলিক এসিড, পায়োগ্লিটাজোন, ভিটামিন ই, ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডের মতন ওষুধগুলো, যেগুলো রোগ আর রোগীর অবস্থা ভেদে ভালই কাজ করে। আর চিকিৎসার আগে যেহেতু রোগ নির্ণয়টা জরুরি, তার জন্য একটা ভালো এবডোমিনাল আল্ট্রাসাউন্ড আর ফাইব্রোস্ক্যান খুবই কার্যকর।

তবে মনে রাখতে হবে আর দশটি রোগের মতই ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রেও চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। আর এর জন্য চাই জনসচেতনতা।