• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

বদলে গেল কফিন, কবর খুঁড়েও হলো না দাফন

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২৩  

গ্রিস প্রবাসী আফছর মিয়া। ২৮ ফেব্রুয়ারি লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গ্রিসের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর খবরে শোকের মাতম চলছে বাড়িতে। মরদেহ আসার খবরে প্রস্তুত করা হয় খাটিয়া। পাড়ার মসজিদে মসজিদে মাইকে ঘোষণা করা হয়েছে জানাজার সময়সূচি। দাফনের জন্য খোঁড়া হয় কবর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি জানাজা, করা হয়নি দাফনও। কারণ, কফিন খুলে জানা গেল, মরদেহটি আফছর নয়, অন্যজনের।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্বপাগলা ইউনিয়নের দামোধরতপীর গ্রামে। মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ির জালাল মিয়া মরদেহ ভুল করে সুনামগঞ্জের দামোধরতপীর গ্রামের আফছর মিয়ার ঠিকানায় পাঠানোয় এমন ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, পূর্বপাগলা ইউনিয়নের দামোধরতপী গ্রামের মরহুম জমসিদ আলীর বড় ছেলে আফছর মিয়া গত ২৮ ফেব্রুয়ারি লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গ্রিসের এথেন্সের সুতরি হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুর সময় তার অপর ভাই মো. এমরান মিয়াও সেখানে ছিলেন। মৃত্যুর চারদিন পর মরদেহ দেশে আনার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এমরান দেশে ফেরেন।

শুক্রবার আফছরের মরদেহ দেশে আসার কথা ছিল। আফছর মিয়ার কফিনে যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছিল। ওই ঠিকানায় শুক্রবার রাত ৩টার দিকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি লাশবাহী গাড়িও এসে পৌঁছায়। আফছর মিয়ার স্বজনদের কান্নায় ওই সময় ভারী হয়ে ওঠে বাতাস। গ্রামের মাইকে জানাজার সময়ের ঘোষণা দেওয়া হয়। খোঁড়া হয় কবর। কিন্তু ফ্রিজিংভ্যান থেকে মরদেহ নামানোর পর বাঁধে বিপত্তি। দেখা যায়, মরদেহটি আফছর মিয়ার নয়।

পুলিশ ও আফছর মিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, যে মরদেহটি আফছর মিয়ার বাড়িতে এসে পৌঁছে সেটি জালাল মিয়া নামে এক ব্যক্তির। তার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার শিলনপুর গ্রামে। তার বাবা শফিক উদ্দিন। তিনিও গ্রিস প্রবাসী ছিলেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ে তিনি মারা যান। আগামী ১৩ মার্চ তার মরদেহ দেশে আসার কথা। ভুলবশত আফছর মিয়ার নাম সম্বলিত স্টিকারটি জালাল মিয়ার কফিনে এবং জালাল মিয়ার স্টিকার আফছর মিয়ার কফিনে লাগিয়ে দেওয়ায় একজনের মরদেহ আরেকজনের ঠিকানায় চলে আসে।

আফছর মিয়ার মরদেহ এখনো গ্রিসের এথেন্সে আছে। আগামী ১৩ মার্চ জালাল মিয়ার মরদেহ যে ফ্লাইটে আসার কথা রয়েছে, ওই ফ্লাইটে আফছরের কফিন আসবে বলে জানিয়েন স্বজনরা।

আফছর মিয়ার ভাগ্নে তোফায়েল আহমদ কামরান বলেন, মামার মরদেহ রিসিভ করতে শুক্রবার ঢাকা এয়ারপোর্টে যাই। সেখানে সব প্রক্রিয়া শেষ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে রাত ৩টা ২০ মিনিটে এসে পৌঁছাই। এর মধ্যেই মাইকে জানাজার নামাজ কখন হবে জানিয়ে দেওয়া হয়। ভোর থেকে কবর খোঁড়া হয়। সকাল ১০টার দিকে যখন কফিন খোলা হয়, তখন দেখা যায় মরদেহটি মামার নয়। এরপর আমরা পুলিশে খবর দিই। পুলিশ এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে এই মরদেহ মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ির। তার নাম জালাল মিয়া।

জালাল মিয়ার ছোট ভাই আলমগীর হোসেন বলেন, আমার ভাইয়ের মরদেহ সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে পাঠাচ্ছে পুলিশ। ওখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমি মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি।

শান্তিগঞ্জ থানার ওসি মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থলে আসি। অনেক চেষ্টা করে জালাল উদ্দিনের ঠিকানা ও ফোন নম্বর পাই। তাদের সঙ্গে কথা বলি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।