• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

শরীয়তপুরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৮ মার্চ ২০২১  

শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ নানা আয়োজন ও কর্মসূচির মাধ্য দিয়ে সারা দেশের মতো শরীয়তপুর জেলা সদরসহ অপর ৫ উপজেলা শহরে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। এবারের নারী দিবসের স্লোগান হলো ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’।

দিবসটি উপলক্ষে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচীর মধ্যে ছিল র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সেলাই মেশিন বিতরণ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা, ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও সম্মাননা প্রদান করা হয়।

শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ শামীম হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র এ্যাড. পারভেজ রহমান জন, সদর উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সামিনা ইয়াছমিন, জাতীয় মহিলা সংস্থার শরীয়তপুর জেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. রওশন আরা বেগম। আলোচনা শেষে মহিলা সংস্থার সহায়তায় ২০ জন অসচ্ছল নারীর হাতে সেলাই মেশিন ও সমাজে বিভিন্ন অবদানের জন্য ৫ নারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকারি লাঠিয়াল বাহিনীর দমননিপীড়ন। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্ব প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ, জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এর পর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহাগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয় ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নারীদের সম অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ নারী দিবস পালিত হতে লাগল। অতঃপর ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় রাষ্ট্রসংঘ। এর পর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি। নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে।

এবার আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে “করোনা কালে নারী নেতৃত্ব, গর্বে নতুন সমতার বিশ্ব”। বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায় ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একের পর এক কর্মসূচি নিয়ে নারীদের এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন। তার প্রচেষ্টার ফলে শিক্ষা, কর্ম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নারীরা প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি এগিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। আজ সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি-নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে। কিন্তু ক্ষমতা প্রাপ্তি ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের এখনো বড় ধরণের বাধার মুখোমুখি হতে হয়। পরিশেষে বলা যায় যে, আসুন আমরা নিশ্চিত করি প্রতিটি নারী ও প্রতিটি কিশোরীও আমাদের সবার জীবনের ওপর প্রভাব ফেলে, এবং তাদের ভূমিকা আমাদের জীবনে অনেক, সুতরাং তারাও সমাজকে পরিসেবা ও অবকাঠামোর আকার দিতে পারে।