• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২১  

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম অভিযুক্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা, নবম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করা হয়েছে। 

এর মধ্যে রয়েছে কোরআন খতম, স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, সুবিধাবঞ্চিত নারীদের সেলাই মেশিন বিতরণ, দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ঔষধ বিতরণ, ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং, কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা, তবারক বিতরণ। শওকত আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন মসজিদ ও মন্দিরে দোয়া-প্রার্থনা আয়োজন করা হয়।

স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, কর্ণেল শওকত আলীর স্ত্রী মিজ মাজেদা শওকত আলী, ছেলে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী, শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র পারভেজ রহমান জন, নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ রাশেদুজ্জামান, শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার, নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খোকন, নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনি সংকর কর, নড়িয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. কামাল হোসেন মৃধা প্রমূখ । 

শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) শওকত আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। আমাদের অত্যন্ত শোকের দিন, বেদনার দিন, অভিভাবক হারানোর দিন। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন।

যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী বলেন, বাংলাদেশের কিংবদন্তি যাদের হাত ধরে আমাদের লাল সবুজের পতাকা, আমাদের বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে যারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধে গিয়েছিলেন তাদেরই একজন জাতীয় বীর কর্ণেল শওকত আলী। আমার পরিবারের চাওয়ার কিছু নেই, পাওয়ার কিছু নেই। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহচর ও শওকত আলীর সন্তান। আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এটাই আমাদের গর্ব। আমার বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন আমার বাবাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।

মিজ মাজেদা শওকত আলী বলেন, জাতীয় বীর কর্ণেল শওকত আলী শুধু আমার স্বামীই ছিলেন না, তিনি আমার অভিভাবক ছিলেন। নেতা কর্মী ও কাছের লোকদের বেলায়ও পারিবারিক সেই ভাবনা-আদর্শ কাজ করত তার মাঝে। আপনারা আমার স্বামীর জন্য পরকালীন শান্তির জন্য দোয়া করবেন।

পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি প্রয়াত নেতা নড়িয়ার মাটি ও মানুষের অত্যন্ত প্রিয় নেতা কর্ণেল শওকত আলীকে। নেতার জন্য মাগফেরাত কামনা করি, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।

তিনি বলেন, কর্ণেল শওকত আলী একজন ইতিহাস। দীর্ঘদিন তিনি এই এলাকায় ছিলেন। আমরা সবাই তার সম্পর্কে জানি। আমি শুধু বলতে চাই, তার অভাব অপূরনীয়।

সাবেক ডেপুটি স্পিকার কর্নেল শওকত আলী শরীয়তপুর-২ আসন থেকে ছয়বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি দুই ছেলে ও এক কন্যার জনক।

পাকিস্তান আমলে ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করা হয়েছিল, তাতে শওকত আলীকেও আসামি করা হয়। তিনি বাংলা একাডেমি, জেলা আইনজীবী সমিতি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য, মুক্তিসংহতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং ৭১ ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।

গত বছরের ১৬ নভেম্বর মারা যান কর্ণেল শওকত আলী। কিডনি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত সমস্যায় তিনি ভুগছিলেন। পরে ২৯ অক্টোবর তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দীর্ঘ ১৮ দিন পর ওই হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

পরে জানাজা শেষে শরীয়তপুরের নড়িয়ায় এনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অবঃ) শওকত আলীকে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।