• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

এবারও জুলাইয়ে ডিসি সম্মেলন হচ্ছে না

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২১  

করোনা মহামারির কারণে এবারও জুলাই মাসে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নিয়ে সম্মেলন হচ্ছে না। গতবারও একই কারণে জুলাইয়ে এ সম্মেলন হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সম্মেলন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েও তা স্থগিত করা হয়। পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ না হওয়ায় আগামী জুলাই মাসে এই সম্মেলন হচ্ছে না বলে যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ) শেখ রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, দিন দিন সংক্রমণ পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করছে। ফলে জুলাই মাসে ডিসি সম্মেলন হচ্ছে না। পরিস্থিতি ভালো হলে সম্মেলন আয়োজন করা হবে। ভার্চুয়ালি সম্মেলন করার কোনো চিন্তা আছে কি-না জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব বলেন, এই পদ্ধতিতে সম্মেলন করার কোনো পরিকল্পনা এখনো নেই।

বিভিন্ন জেলা থেকে ডিসিদের প্রস্তাবগুলো এসেছে কি-না জানতে চাইলে শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর মাঠ প্রশাসন থেকে বেশ কিছু প্রস্তাব ও সুপারিশ এসেছে। সেগুলো বই আকারে প্রেসেও পাঠানো হয়েছিল। স্থগিতের সিদ্ধান্ত হওয়ায় পরে আর তা বই আকারে ছাপানো হয়নি। ডিসি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হলে আগের প্রস্তাবসহ নতুন প্রস্তাবের সমন্বয়ে নতুন করে কার্যপত্র ছাপানো হবে। সাধারণত প্রতি বছর ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জুলাই মাসে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসি সম্মেলন শুরু হয়েছিল ১৪ জুলাই থেকে। এর আগের বছরগুলোতেও জুলাই মাসে চার দিন ধরে সম্মেলন চললেও ২০১৯ সালে তা পাঁচ দিনব্যাপী হয়। সাধারণত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশন হয়। এ ছাড়া একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনা, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও একটি সমাপনী অনুষ্ঠান থাকে। ২০১৯ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রথমবারের মতো প্রধান বিচারপতি, তিন বাহিনী প্রধান, জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসাবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকেন। সর্বশেষ ডিসি সম্মেলনে ২৪টি কার্য-অধিবেশনে ৩৩৩টি প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। প্রতি বছর এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দেশের ৬৪ জেলার ডিসিদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের নীতিনির্ধারকরা। এ সম্মেলনের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য-অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সভাপতিত্ব করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা ডিসিদের দিকনির্দেশনা দিয়ে বক্তব্য দেন। সম্মেলন উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা লিখিতভাবে মাঠ প্রশাসনের সমস্যাগুলো নিয়ে প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। অধিবেশনের সময় এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনা বিভাগের একজন ডিসি বলেন, ডিসিদের জন্য এই সম্মেলন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট। মাঠ পর্যায়ের নানা সমস্যা এবং সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বাধাগুলো নিয়ে সম্মেলনে খোলামেলা আলোচনা হয়। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে এর মাধ্যমে নানা ধরনের দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। এমনকি স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের চাপ ও প্রভাব মোকাবিলায় সম্মেলন থেকে সহায়তা পাওয়া যায়। কিন্তু এবার যেভাবে জেলাগুলোতে লকডাউন চলছে তাতে মনে হচ্ছে না ডিসি সম্মেলন হবে।

রাজশাহী বিভাগের একজন ডিসি জানান, সীমান্তের জেলাসহ ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে লকডাউন চলছে। কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি সারা দেশে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এমতাবস্থায় ডিসি সম্মেলন করার মতো কোনো পরিস্থিতি দেশে নেই। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।