• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী বিলে যা ছিল

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১  

এদিন জাতীয় সংসদে সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী বিল উত্থাপন করা হয়। এই সংশোধনীতে যুদ্ধ বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে বাংলাদেশের যেকোনও অংশে নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষমতা দানের প্রস্তাব করা হয়।

আইন ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর উত্থাপন করেন, এই সংশোধনীতে সংবিধানের একটি অধ্যায় সংযোজন ছাড়াও সংসদকে নিবর্তনমূলক আটকের বিধান সম্বলিত আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দান করা হয়। সংসদের অধিবেশনের মধ্যবর্তী সময়ে ৬০ দিন হতে ১২০ দিন করা এবং সংবিধানের বিধান প্রয়োগ হতে সংবিধানের সংশোধনীসমূহ সংরক্ষণের প্রস্তাব করা হয়।

প্রস্তাবিত সংশোধনীতে জরুরি বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়। এতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে এমন জরুরি অবস্থা বিদ্যমান রয়েছে, যাতে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ অভ্যন্তরীণ গোলযোগের দ্বারা বাংলাদেশে কোনও অংশের নিরাপত্তা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন- তা হলে তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন। তবে সে ঘোষণার বৈধতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরের প্রয়োজন হবে। জরুরি অবস্থার ঘোষণাটি পরে কোনও ঘোষণা দ্বারা প্রত্যাহার করা যাবে এবং সংসদে উপস্থাপিত হবে। এই ঘোষণা ১২০ দিন অতিবাহিত হওয়ার আগে সংসদের প্রস্তাব অনুমোদিত না হলে উক্ত সময়ের অবসানে কার্যকর থাকবে না।

তবে যদি সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় অনুরূপ কোনও ঘোষণা জারি করা হয় কিংবা ১২০ দিনের মধ্যে সংসদ ভেঙে যায় তা হলে পুনর্গঠিত হওয়ার পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে ৩০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার আগে ঘোষণাটি অনুমোদন করে সংসদে প্রস্তাব গ্রহণ করতে হবে।

দৈনিক বাংলা, ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩দৈনিক বাংলা, ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩

মৌলিক অধিকার স্থগিত করার বিষয়ে

জরুরি অবস্থার সময় মৌলিক অধিকারগুলো স্থগিতকরণের প্রস্তাব করা হয়। এতে বলা হয়, জরুরি অবস্থা ঘোষণার কার্যকারিতাকালে রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা ঘোষণা করতে পারবেন যে, সংবিধানের তৃতীয় ভাগের অন্তর্গত মৌলিক অধিকারসমূহ বলবৎকরণের জন্য আদালতে মামলা রুজু করার অধিকার এবং আদালতে অনুরূপভাবে উল্লিখিত কোনও অধিকার বলবৎ করার জন্য কোনও আদালতে বিবেচনাধীন সকল মামলা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা কার্যকারিতাকালে কিংবা উক্ত আদেশের দ্বারা নির্ধারিত স্বল্পকালের জন্য স্থগিত থাকবে।

এই বিলে জরুরি অবস্থার সময় সংবিধানের কতিপয় অনুচ্ছেদের বিধান স্থগিত করার প্রস্তাব করা হয়। বিধানগুলো হচ্ছে চলাফেরার স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা, পেশা-বৃত্তির স্বাধীনতা ও সম্পত্তির অধিকার সম্পর্কিত।

দ্য অবজারভার, ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩দ্য অবজারভার, ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩

১২৫ বাঙালি ফিরবেন

এদিন বলা হয়, ২৮ আগস্টের দিল্লিচুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হতে যাচ্ছে। ঢাকা রাওয়ালপিন্ডি ও নয়াদিল্লি থেকে সরকারিভাবে ত্রিমুখী লোক বিনিময় শুরুর কথা এই দিন ঘোষণা করা হয়। এদিন সন্ধ্যায় ঢাকায় সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়, ২৮ আগস্ট দিল্লিচুক্তি বাস্তবায়ন একদিনের পর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। প্রথম দফায় ১২৫ জন আটক বাঙালি পাকিস্তান থেকে ফিরে আসছেন। খবরে বলা হয়, এই দিন নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেন, পাকিস্তান থেকে দুই হাজার বাঙালি এবং বাংলাদেশ থেকে দুই হাজার ৬শ পাকিস্তানি নাগরিক বিনিময়ে উভয় দেশের সরকার রাজি হয়েছে।

এক খবরে বলা হয়, এই দিন রাওয়ালপিন্ডিতে এক সহকারী মুখপাত্র বলেছেন, এদিন থেকে ত্রিমুখী লোক বিনিময় শুরু হচ্ছে।