• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

বিশ্বের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে: প্রধানমন্ত্রী

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২৩  

বিশ্বের চলমান অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকেও যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য তিনি সাশ্রয়ী ও নিজেদের খাদ্য নিজেদের উৎপাদন করার পরামর্শ দিয়েছেন।

রোববার (৪ জুন) প্রয়াত সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আফছারুল আমীনের শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

আফছারুল আমীন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত ২ জুন আফছারুল আমীন ঢাকার একটি হাসপতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তবু বলবো যে, স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাচ্ছে। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। যদিও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশন, পাল্টা স্যাংশনের কারণে বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি তেলের অভাব, জ্বালানির অভাব যার জন্য এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকা বিভিন্ন দেশেই কিন্তু জ্বালানির অভাব হচ্ছে। লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করা হচ্ছে। প্রত্যেকটা খাদ্য পণ্য থেকে শুরু করে সমস্ত পণ্যেও দাম বেড়ে গেছে। বহু মানুষ উন্নত দেশেও চাকরি হারাচ্ছে, এরকম একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সারা বিশ্বব্যাপী।

আমি জানি না আর কখনো এরকম অবস্থা হয়েছিল কিনা। হয়তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তো দুর্ভিক্ষ, মনন্তর দেখা দিয়েছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের অতিমারি, এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এর ফলে সারা বিশ্বেই খাদ্য মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, পরিচালন ব্যয়, পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতি এটা প্রত্যেকটা মানুষের জীবন অসহনীয় করে তুলেছে। বাংলাদেশে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি, আমাদের একটা ওয়াদা ছিল মানুষের ঘরে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছাবো, পৌঁছে দিয়েছিলাম। কিন্তু এই যে জ্বালানি তেল বা কয়লা বা গ্যাসের অভাব সারা বিশ্বব্যাপী, এখন তো অনেকটা কেনাই মুশকিল। ক্রয় করাও একটা অসম্ভব ব্যাপার হয়ে পড়েছে। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে কাতার, ওমানের সাথে আমাদের চুক্তি সই হয়ে গেছে। জলবিদ্যুৎ আমদানিরও ব্যবস্থা নিয়েছি। কয়লা কেনার জন্য ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আমরা আবার চালু করতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে অনুরোধ করবো বিদ্যুৎ ব্যবহারে একটু সাশ্রয়ী হতে হবে বা সব জিনিস ব্যবহারেই সাশ্রয়ী হতে হবে। তাছাড়া আমাদের খাদ্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে নিজেদের চেষ্টাই আমাদের করে যেতে হবে। কারণ বিশ্বের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আর কত দিন চলবে কেউ বলতে পারে না বা হয় তো বিশ্ব পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেও যেতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের রক্ষার জন্য, তাদের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে যা যা করার আমরা করে যাচ্ছি।

আফছারুল আমীনের স্মৃতি স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আফছারুল আমীন সাহেব ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগ করে এসেছেন, প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামেই অংশগ্রহণ করেছেন। নিবেদিত প্রাণ ছিলেন, দলের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা সত্যি অতুলনীয়। শুধু সংসদ সদস্য না, মন্ত্রী হিসেবেও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে অত্যন্ত সাফল্য দেখিয়েছেন। তাকে প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্ব দিলাম, বাস্তবে আজকে যে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা এত সাফল্য অর্জন করেছে, তার ভিত্তিটা কিন্তু তিনি করে দিয়ে গেছেন। তিনি নিজে ডাক্তার ছিলেন, বিনা পয়সায় রোগী দেখতেন, এমপি হওয়ার পরেও তার কাছ থেকে সকলে চিকিৎসা পেয়েছেন, এই গুণটা সকলের থাকে না, কিন্তু তার ছিল।

শোক প্রস্তাবের আলোচনায় আরও অংশ নেন আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ, নুরুল ইসলাম নাহিদ, মোতাহার হোসেন, সাইফুজ্জামান, মুহিবুল হাসান চৌধুরী, ওয়াসিকা আয়শা খান, জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু, মশিউর রহমান রাঙা। আলোচনার পর শোক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে সংসদে গৃহীত হয়।