• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

লেগুনার হেলপার হয়ে চালাতেন কিশোর গ্যাং, ছিলেন ভাড়াটে সন্ত্রাসীও

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩  

পড়াশোনা করেছেন তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। শুরুতে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ছিলেন। এরপর গত দু-তিন বছর আগে নিজেই ‘বিডিএসকে (ব্রেভ ডেঞ্জার স্ট্রং কিং)’ নামে একটি গ্যাং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। সেই গ্রুপের নেতৃত্বও দিচ্ছিলেন। পাশাপাশি ছদ্মবেশ নিয়ে বিভিন্ন সময় লেগুনার হেলপার হিসেবে কাজ করতেন।

এছাড়া গ্রুপের সদস্যদের মাধ্যমে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর ও বেড়িবাঁধ এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, আধিপত্য বিস্তার, বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। নিজে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করতেন।

বিডিএসকে গ্যাং গ্রুপের সেই প্রধানের নাম শ্রীনাথ মণ্ডল ওরফে হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয় (২২)। গ্রুপের বেশিরভাগ সদস্য লেগুনা চালানো ও রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। পাড়া-মহল্লায় নিজেদের কর্মকাণ্ড জানান দিতে যাকে-তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখমের অভিযোগও রয়েছে এ চক্রের বিরুদ্ধে।

গতকাল শনিবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, শ্যামলী ও বেড়িবাঁধ এলাকা এবং ফরিদপুরে অভিযান চালিয়ে বিডিএসকের আট সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

গ্রেফতাররা হলেন গ্রুপের প্রধান শ্রীনাথ মণ্ডল ওরফে হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয় (২২), মো. রবিন ইসলাম ওরফে এসএমসি রবিন (২০), মো. রাসেল ওরফে কালো রাসেল (২৫), মো. আলামিন ওরফে ডিশ আলামিন (২১), মো. লোমান ওরফে ঘাড় ত্যাড়া লোমান (২১), মো. আশিক ওরফে হিরো আশিক (১৯), মো. জোবায়ের ইসলাম ওরফে চিকনা জোবায়ের (১৯) ও মো. সুমন ওরফে বাইট্টা সুমন (২০)।

গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যমতে, মোহাম্মদপুরে চক্রের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি চাপাতি, একটি রামদা, একটি চাইনিজ কুড়াল, চারটি চাকু (বড় ও ছোট), দুটি হাঁসুয়া, একটি কাঁচি এবং একটি লোহার রড উদ্ধার করা হয়েছে।

লেগুনার হেলপার হয়ে চালাতেন কিশোর গ্যাং, ছিলেন ভাড়াটে সন্ত্রাসীও

রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, বিডিএসকে গ্যাং গ্রুপে প্রায় ২০-২৫ জন সদস্য রয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা সবুজ বাংলা গ্রুপ, টপ টেন গ্রুপ ও ভাই বন্ধু গ্রুপের সদস্য ছিলেন। তারা বিভিন্ন সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, আদাবর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করতেন। এছাড়া তারা মাদক সেবনসহ ওইসব এলাকায় মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

র‌্যাব জানায়, গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর আদাবর থানাধীন তিন রাস্তার মোড় এলাকায় এক ব্যক্তিকে জখম করে তার কাছে থাকা মোবাইল ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয় চক্রের সদস্যরা। একইভাবে ওই এলাকার এক কলেজ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে র‌্যাব কাজ শুরু করে। পরে জড়িত আট-দশজনকে শনাক্ত করা হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, বিভিন্ন পেশার আড়ালে গ্রুপের সদস্যরা এসব অপরাধে জড়িত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের কেউ কেউ বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হয়ে কারাগারেও থেকেছেন।