• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

রেলে কক্সবাজার ভ্রমণ, প্রকল্পে অগ্রগতি ৬৬ শতাংশ

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২২  

সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প। কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা সেতু, মেরিন ড্রাইভ, ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পের কাজ যখন শেষের দিকে, দেশের মানুষের চোখ তখন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণের দিকে।

২০২১ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ তা পিছিয়ে ২০২২ সালে শেষ করার ঘোষণা দেন। কিন্তু দেশের মানুষের বহুদিনের সেই রেলে কক্সবাজার ভ্রমণের স্বপ্ন কি নতুন বছরে পূরণ হবে, সেই প্রশ্ন সবার মনে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, রেললাইন নির্মাণ হলে ট্রেনে পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজারে প্রবেশ করতে পারবেন পর্যটকেরা। চট্টগ্রাম থেকে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে। এজন্য বিশেষ কোচ কেনা হবে। পর্যটন নগরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে সমুদ্রসৈকত থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ‘ঝিনুকাকৃতির’ রেলস্টেশন। এটি দেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশন হতে যাচ্ছে।

রেলপথটিতে ৮টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথমে কক্সবাজার ও পরের স্টেশনটি রামু। এরপর ইসলামাবাদ, ডুলাহাজারা, চকরিয়া, হারবাং, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণকাজ চলছে।

প্রকল্পের আওতায় ১২৮ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার, রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হচ্ছে। এছাড়া নির্মিত হচ্ছে চারটি বড় সেতুসহ ২৫টি সেতু। বড় সেতুগুলো হচ্ছে মাতামুহুরী নদী, মাতামুহুরী শাখা নদী, শঙ্খ ও বাঁকখালী নদীর ওপর।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা।

২০১৮ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুইভাগে কাজটি করছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ হয়েছে ৬৬ শতাংশ।  

রেল কর্মকর্তারা বলছেন, বর্ষা আর অধিগ্রহণ ঝামেলার কারণে কিছুটা কাজের বিঘ্ন ঘটে। এখন কাজ পুরোদমে চলছে। ২০২৩ সালের জুনে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে নতুন এই রেলপথ।

প্রকল্প নেওয়ার সময় ২০১৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। তা বাড়িয়ে করা হয় ২০১৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় ২০১৭ সালে। তখন প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা ঠিক করা হয় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু এ বছর প্রকল্পের কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয় রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম তুহিন বলেন, রেল চড়ে কক্সবাজার ভ্রমণ, এটি কল্পনার অতীত ছিল। এখন রেলপথ, স্টেশন নির্মাণ দেখে অবাক হচ্ছি। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সবসময় যানজটে পড়তে হতো। বিরক্ত হতাম। ট্রেন চালু হলে স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবো।

সরেজমিন দেখা যায়, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাহ থেকে রামু উপজেলার জোয়ারিয়া নালা পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার রেললাইন বসানো হয়েছে। কক্সবাজার-চকরিয়া অংশের ৫০ কিলোমিটার এলাকায় মাটির কাজের পাশাপাশি এগিয়ে চলছে রেললাইন বসানোর কাজ। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে চকরিয়া পর্যন্ত আরও প্রায় ৫০ কিলোমিটার অংশে ১৯টি সেতুর সব কটি তৈরি হয়ে গেছে। স্টেশন ভবন নির্মাণকাজ চলছে। বর্ষায় যে স্টেশনগুলোর কাজ করা যায়নি, সেগুলোর কাজও চলমান। তার মধ্যে ছয়টি স্টেশনের ছাদ তৈরি হয়ে গেছে। বর্ষার পানির জন্য রেলপথ বসাতে সেখানে সমস্যা হয়েছে, সেখানেও মাটি ভরাট করে রেলপথ বসানোর কাজ শেষ।  

প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান বলেন, আমরা চেষ্টা করছি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার। ইতিমধ্যে প্রকল্পটির প্রায় ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্ষায় কাজ করতে সমস্যা হয়েছে। এখন পুরোদমে কাজ চলছে। করোনা মহামারি, জমি অধিগ্রহণে জটিলতার কারণে কাজ কিছুটা গতি হারায়। তবে এখন পুরোদমে কাজ চলছে। আশা করছি, ২০২২ সালের জুনের (প্রকল্প মেয়াদ) মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবো।