• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

আর মাত্র ২ দিন: মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় দক্ষিণাঞ্চলবাসী

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২২  

আর মাত্র দুই দিন বাকী। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মাসেতুর দ্বার উন্মোচন হবে! রাজধানী ঢাকার সাথে সরাসরি যুক্ত হবে দক্ষিণাঞ্চলের পদ্মা বিধৌত জনপদ। এখন শুধু সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষা পদ্মার এপারের মানুষ। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক বিপ্লব সৃষ্টি হবে। রাজধানী ঢাকা চলে আসবে হাতের মুঠোয়। 

ইতোমধ্যে পদ্মাসেতুর জনসভাস্থল তৈরির শেষ পর্যায়ে রয়েছে মঞ্চ। লাখ লাখ মানুষের জন্য তৈরি করা হচ্ছে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠান উপভোগ করার ব্যবস্থা। পয়ঃনিষ্কাষণের জন্য নির্মান করা হচ্ছে ৫শত টয়লেট, থাকছে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা। নদী পথে আসা মানুষের জন্য তৈরি করা হচ্ছে ২০ টি পল্টুন। সব মিলিয়ে পদ্মাপাড়ে বইছে উৎসব।

পদ্মাপাড়ের চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষেরা জানান,'পদ্মাসেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেখতে আত্মীয়-স্বজনেরা বেড়াতে চলে এসেছে ইতোমধ্যে। এই এলাকার গ্রামের মানুষের মধ্যে বইছে আনন্দ-উদ্দীপনা। ২৫ তারিখের জন্য সবাই অপেক্ষায় রয়েছে। ঘরে ঘরে যেন ঈদের আনন্দদ বইছে।'

এদিকে শিবচর উপজেলা আওয়ামীলীগ সূত্রে জানা গেছে, জনসভায় অংশ নিতে ব্যপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ নিজ উদ্যোগে নেতা-কর্মী, সাধারণ লোকজন নিয়ে জনসভায় অংশ নেবে। উপজেলার শিরুয়াইল, দত্তপাড়া, নিখলী, বহেরাতলা এলাকার জন্য আড়িয়াল খাঁ নদীতে কমপক্ষে ৫০ টি লঞ্চ থাকছে। লঞ্চে করে জনসভায় অংশ নেবে এই এলাকার লোকজন। এছাড়া ৫ শতাধিক বাসসহ সকল প্রকার যানবাহন থাকছে জনসভায় অংশ নেবার জন্য।

শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি জানান,'আমাদের স্বপ্নের পদ্মাসেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এখন যেন সময় যেতেই চাচ্ছে না। ২৫ তারিখের জন্য অপেক্ষায় আছি। জনসভার মঞ্চ প্রস্তুতসহ চারপাশে সাজানো হচ্ছে। আলোক সজ্জা করা হচ্ছে। এ এক অন্য রকম আনন্দ!'

ষাটোর্ধ্ব মো. আবুল কাশেম নামের পদ্মাপাড়ের এক বাসিন্দা বলেন,'পদ্মায় সেতু হতে পারে এমন ভাবনা ছিল কল্পনাতেও ছিল না। ঝড়-বৃষ্টি, বর্ষায় ঢাকা যাওয়া ছিল এই এলাকার মানুষের কাছে সবচেয়ে কঠিন এবং কষ্টের। আমাদের এলাকায় তেমন রাস্তাঘাট ছিল না। বৃষ্টিতে কাদাপানি পায়ে মেখে চলতে হবে। একমাত্র পদ্মাসেতু পাল্টে দিয়েছে এই এলাকার চিত্র। আগে আমাদেরকে 'গাও-গেরামের' লোক বলতো। এখন এই এলাকায় অসংখ্য লোকজন ঘুরতে আসে। জমজমাট সব জায়গায়। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃতজ্ঞ।'

আহসান নামের কাওড়াকান্দি এলাকার এক যুবক বলেন,'সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেখতে বাড়ি চলে এসেছি। সেতু চালুর পর সেতুর উপর দিয়ে ঢাকা যাবো।'

মো.ইসমাইল নামের পদ্মাপাড়ের গ্রাম চরজানাজাত এলাকার এক যুবক বলেন,'পদ্মাসেতু নিয়ে আমাদের উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। এক বুক আবেগ পদ্মা সেতু নিয়ে। জনসভা হবে আমাদের শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে। পদ্মার পাড়েই। আমাদের এলাকায় উৎসবের আমেজ বইছে।'

২৫ জুন শনিবার। রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। উদ্বোধনকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ, নতুন সাজে সজ্জিত হচ্ছে জনসভাস্থল। থাকছে ৬ দিন ব্যাপী মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন। আর এসব ঘিরেই মানুষের মনে বিশেষ করে পদ্মাপাড়ের মানুষের ঘরে বইছে উৎসব!