• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

স্বপ্নজয়ের পর অপার সম্ভাবনার হাতছানি

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২২  

স্বপ্ন দেখে অনেকেই। কিন্তু শত বাধা মাড়িয়ে স্বপ্ন সত্যি করতে কজনই-বা পারে? প্রমত্তা পদ্মার বুকে একটি সেতু–বাংলাদেশের এ স্বপ্ন বহুদিনের। সময়ের স্রোতে জল গড়িয়েছে অনেক। পদ্মায় পলি জমে জেগেছে কত চর, আবার সর্বনাশা পদ্মা গিলে খেয়েছে গ্রামের পর গ্রাম।

শুরুটা বলতে গেলে ৪ জুলাই, ২০০১। এরপর কত চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ এ পদ্মার বুকে ঠায় দাঁড়িয়ে কোটি বাঙালির স্বপ্ন।

একটি ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে করতে স্বজনহারানো মানুষটা জানে এ সেতুর মূল্য কত। আবার ফেরিঘাটে অপেক্ষা করে ফসল নষ্ট করে বাড়ি ফেরার কৃষক জানে কত দামে কেনা এই সেতু।

একটি সেতু কেবল দুপাড়ের সংযোগই নয়, কোটি মানুষের স্বপ্নের বুনন।

সেতু উদ্বোধনের খুশি ব্যক্ত করতে গিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা যারা পদ্মাপারে বসবাস করি, আমাদের জন্য এটা একটা মাইলফলক।’

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের, বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের কাছে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল এ নৌপথ। আবার সড়কে চলতে হলেও নিতে হতো নৌপথের সাহায্য, সে ক্ষেত্রে একটি সেতু যেন বদলে দিচ্ছে ২১টি জেলার আর্থ-সামাজিক অবস্থা।

খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে: স্টিলার কন্সপায়ার কনক্রিটের একটি সেতু কীভাবে এত মানুষের স্বপ্ন পূরণ করবে? তবে এবার হিসাবটা মেলানো যাক–

এ বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, পদ্মাপারের মানুষ বহুদিন ধরে ভোগান্তির মধ্যে ছিল। এখন পদ্মা সেতুর মাধ্যমে তারা একটা বহুমাত্রিক যোগাযোগের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।

এবার সেই রাস্তা ধরেই হবে অদম্য অগ্রযাত্রার নতুন পথচলা। সেই পথ অমিত সম্ভাবনার।

সঠিক পরিকল্পনা আর তার সঠিক বাস্তবায়ন যদি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে এ অঞ্চল ঘিরেই গড়ে ওঠবে শিল্পাঞ্চল। দূরত্ব কম হওয়ায় গতি আসবে কৃষিপণ্য উৎপাদনে।

এফবিসিসিআইর ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘মোংলা পোর্ট থেকে সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টার ভেতরে পণ্য এসে ঢাকায় পৌঁছবে। এছাড়া ওই অঞ্চলে অনেক কলকারখানাও গড়ে ওঠবে। আমরাও এমনটা চাই।’  

প্রথমে স্বল্প পরিসরে এসব উন্নয়ন চোখে দেখা গেলেও দীর্ঘ মেয়াদে ধীরে ধীরে এর আরও ব্যাপক সুফল পাবে পুরো বাংলাদেশ।

অর্থনীতিবিদ সায়মা হক বিদিশা বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে অসুবিধা হয়, বড় বড় সেতু সেই অসুবিধা দূর করার পথ সুগম করে দেয়।

আপাতত অপেক্ষা। তারপর এ পথে লেখা হবে এক নতুন মহাকাব্য।