• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের কল্যাণে ৪০ বছর পর বুঝে পেয়েছে সম্পত্তি

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২২  

দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ভিক্ষা করে পেট চালান; অথচ সেই ভিক্ষুকই এখন ২৫ বিঘা জমির মালিক। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের কল্যাণে ৪০ বছর পর বুঝে পেয়েছেন তার সম্পত্তি। সেবাগ্রহীতারা বলছেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের ফলে নিশ্চিত হচ্ছে স্বচ্ছতা। কমছে জনভোগান্তি। ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে গ্রামেই মিলছে খতিয়ান ও পর্চাসহ ভূমিসংক্রান্ত যাবতীয় সেবা।

একসময় ভূমিসেবা মানেই ছিল দালালদের সীমাহীন দৌরাত্ম্য। ভূমি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দরজায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরনা দিতে হতো সাধারণ মানুষকে। ভূমি ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের পর কতটা বদলেছে সেই চিত্র?

জয়গুন বেওয়া। তার কথায়, বয়স পাঁচ কম আশি। প্রায় তিন যুগ আগে ব্রহ্মপুত্রের করাল গ্রাসে ভিটেমাটিসহ ২৫ বিঘা সম্পত্তি হারিয়ে গাইবান্ধার কামারজানি ছেড়ে থিতু হন নলডাঙ্গায়। সেই থেকে ভিক্ষা করে পেট চলছে তার। এত বছর পর কামারজানি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কেন এসেছেন?

এমন প্রশ্নে জয়গুন জানান, নদীর বুকে আবারও জেগে উঠেছে নিজের ভিটেমাটি। তবে তা অন্যের দখলে। তাই কাগজপত্রের খোঁজে ছুটে এসেছেন ডিজিটাল সেন্টারে। ঘুষ কিংবা ভোগান্তি ছাড়াই পেয়েছেন ১৮ বিঘা সম্পত্তির নথি।

জয়গুন বেওয়া বলেন, ‘ভিক্ষে করে ভাত খাই; আমার জমিজমা থাকতে আমি কেন ভিক্ষা করব? ২৫ বিঘার মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৮ বিঘা জমির কাগজপত্র পাইছি। যারা দখল করে আছে, তারা যদি ছাড়ি দেয় তাহলে ভালো। এজন্য কাগজপত্র নিয়া এ অফিসে আইছি।’

চল্লিশ বছর পর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে এসে ১৪ বিঘা জমির সন্ধান পেয়েছেন রংপুরে বসবাস করা কৃষক আসকার আলীও। তিনিও ভোগান্তি ছাড়া জমির কাগজ পাওয়ার কথা জানান।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌর ডিজিটাল সেন্টারে জমির খতিয়ান নিতে আসা ওসমান গণি জানান, এখন আর ৫০ কিলোমিটার দূরে জেলা সদরে যেতে হয় না। দিতে হয় না দালাল কিংবা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষও।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে পৌর ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা নূরুল আলম আনসারী বলেন, ‘আমার এখান থেকে গড়ে প্রতিদিন ২০টি খতিয়ানের আবেদন হয়। আমরা আবেদন অনুসারে মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

বর্তমানে ই-নামজারি, খারিজ, পর্চা ও খতিয়ান সরবরাহ, মৌজা ম্যাপ ও দলিলসহ ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা মিলছে ডিজিটাল সেন্টারে।

সেবাপ্রদানে উদ্যোক্তাদের আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তিনি বলেন, এ সেবাটাকে আপনারা একটি মহৎ সেবা হিসেবে গ্রহণ করবেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন। শুধু আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য এ সেবা নয়। সবাই সচেতন হোন।

২০১৬ সাল থেকে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ভূমিসেবা দিয়ে আসছে সরকার।