• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

বরিশালে নদীতীরের সম্পদ রক্ষায় ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২৩  

প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সম্পদ রক্ষায় ৫০০ কোটিরও বেশি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। এসব সম্পদের মধ্যে রয়েছে কৃষিজমি, ঘরবাড়ি, বিদ্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, বাজার, মসজিদ, পাকা রাস্তা এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অবকাঠামো। বরিশাল জেলার সদর উপজেলায় চরকাউয়া, চাঁদমারী, জাগুয়া, লামচরি ও চরমোনাই এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, বরিশাল জেলার সদর উপজেলায় চরকাউয়া, চাঁদমারী, জাগুয়া, লামচরি ও চরমোনাই এলাকায় কৃষিজমি, ঘরবাড়ি, বিদ্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, বাজার, মসজিদ, পাকা রাস্তা এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অবকাঠামো রয়েছে। সরকারি হিসাবে এসব সম্পদের আনুমানিক মূল্য ২ হাজার ৮৮৯ কোটি ১ লাখ টাকা। কীর্তনখোলা নদীর ভাঙনের মুখে এসব সম্পদ এখন বিলীন হওয়ার পথে। এসব সম্পদ রক্ষার জন্যই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বরিশাল জেলার সদর উপজেলায় চরকাউয়া, চাঁদমারী, জাগুয়া, লামচরি ও চরমোনাই এলাকা কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা প্রকল্প (প্রথম পর্যায়) গ্রহণ করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের আওতায় আপাতত বরিশাল সদর জেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কীর্তনখোলা নদীর আট কিলোমিটার পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ করা হবে। পরে নদীর অবশিষ্ট তীরও ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় আরও প্রকল্প নেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে বরিশাল জেলার সদর উপজেলা এবং বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া কীর্তনখোলা নদীর প্রথম আট কিলোমিটার তীর রক্ষায় নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে পাউবো। এর মধ্য দিয়ে এই এলাকার কৃষিজমি, ঘরবাড়ি, বিদ্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, বাজার, মসজিদ, পাকা রাস্তা এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অবকাঠামো নদীভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।  

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বরিশাল জেলার সদর উপজেলার নদীর বামতীরে অবস্থিত চরকাউয়া ও চরমোনাই এবং ডান তীরে অবস্থিত চাঁদমারী, লামচরি ও জাগুয়া এলাকার স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীভাঙন থেকে প্রস্তাবিত এলাকা রক্ষা করা সম্ভব হবে। এ জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১২ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, ‘বরিশাল জেলার সদর উপজেলায় চরকাউয়া, চাঁদমারী, জাগুয়া, লামচরি ও চরমোনাই এলাকা কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন হতে রক্ষা (প্রথম পর্যায়)’ প্রকল্পটি চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। গত ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে নেওয়া প্রকল্পটি আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বর নাগাদ বাস্তবায়িত হবে।

সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পানিসম্পদ সেক্টরের অন্যতম উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হচ্ছে, নদীতীর সংরক্ষণের মাধ্যমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদীভাঙন রোধ করে দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন করা। এ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে প্রস্তাবিত প্রকল্পটির কার্যক্রম সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ছাড়া এসডিজির নির্দেশক ৬.৫.১: সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনার সঙ্গেও ‘বরিশাল জেলার সদর উপজেলায় চরকাউয়া, চাঁদমারী, জাগুয়া, লামচরি ও চরমোনাই এলাকা কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন হতে রক্ষা (প্রথম পর্যায়)’ প্রকল্পটি সংগতিপূর্ণ বলে পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে।

একনেকের অনুমতির সুপারিশ করে পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বরিশাল জেলার সদর উপজেলার কীর্তনখোলা নদীর বামতীরে অবস্থিত চরকাউয়া ও চরমোনাই এবং ডান তীরে অবস্থিত চাঁদমারী, লামচরি ও জাগুয়া এলাকার স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীভাঙন থেকে প্রস্তাবিত এলাকা রক্ষা করা সম্ভব হবে।

এমন পরিস্থিতিতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত ‘বরিশাল জেলার সদর উপজেলায় চরকাউয়া, চাঁদমারী, জাগুয়া, লামচরি এবং চরমোনাই এলাকা কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন হতে রক্ষা প্রকল্প (প্রথম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটি ৫১২ কোটি ৯২ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়নের নিমিত্ত একনেকে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হলো।

এ প্রসঙ্গে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিমন্ত্রী এবং বরিশাল সদরের সংসদ সদস্য লে. কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক জানিয়েছেন, প্রকল্পটি খুবই সময় উপযোগী। শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কীর্তনখোলা নদীর ভাঙনে বরিশাল জেলার সদর উপজেলার কীর্তনখোলা নদীর বামতীরে অবস্থিত চরকাউয়া ও চরমোনাই এবং ডান তীরে অবস্থিত চাঁদমারী, লামচরি ও জাগুয়া এলাকার স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীভাঙনের কবলে রয়েছে। তাই কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন রোধ করতে না পারলে এলাকার ব্যাপক সম্পদের ক্ষতি সাধিত হবে।

অপরদিকে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পানিসম্পদ সেক্টরের অন্যতম উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হচ্ছে, নদীতীর সংরক্ষণের মাধ্যমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদীভাঙন রোধ করে দুর্যোগঝুঁকি প্রশমন করা। এ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে প্রস্তাবিত প্রকল্পটির কার্যক্রম সামঞ্জস্যপূর্ণ।