• সোমবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ||

  • অগ্রহায়ণ ২৬ ১৪৩০

  • || ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
২৫ দিনের হরতাল-অবরোধে গণপরিবহন খাতে ক্ষতি ১৭ হাজার কোটি আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস আজ পর্বত পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার অন্যতম উপাদান: রাষ্ট্রপতি যুক্তরাষ্ট্র যেন বাংলাদেশকে আর মানবাধিকার শেখাতে না আসে: রাষ্ট্রপতি মার্চের দিকে দুর্ভিক্ষ ঘটাতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন বিশ্বে অনুকরণীয়: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির পরবর্তী পরিকল্পনা দেশে দুর্ভিক্ষ ঘটানো : প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিডিপিতে বস্ত্র খাতের অবদান ১৩ শতাংশ : প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় : রাষ্ট্রপতি

‘কুকুর হইতে সাবধান’ হওয়া কি জরুরি

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৩  

অনেক বাড়ির ফটকে লেখা থাকে ‘কুকুর হইতে সাবধান’। অবাঞ্ছিত আগন্তুকের জন্য সতর্কবাণী। আবার অনেকে এমনিতেই কুকুর ভয় পান। ‘ঘেউ’ শুনলেই যেন আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড়। অথচ কুকুর অতটা ভয় পাওয়ার মতো কোনো প্রাণী নয়। অহেতুক ভয় কিংবা ঘৃণার কারণেই কিংবা নিছক খেলার ছলেই হোক, মানুষ নিজে কুকুরের সঙ্গে ভুল আচরণ করে। মানুষের এই আচরণগত ভুলের কারণেই কখনো কখনো কুকুর উত্তেজিত হয়ে পড়ে।

একটু ভেবে দেখুন। আপনাকে যদি কেউ খোঁচায়, আঘাত করে, বিরক্ত করে, আপনি নিশ্চয়ই একপর্যায়ে রেগে যাবেন? কুকুরের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ঠিক তা–ই। কুকুরও রেগে যায়। ঘেউ ঘেউ করে, তাড়া করে। অথচ এই কুকুরকেই কেউ সামান্য একটু খাবার দিলে, একটু আদর দিলে, সে তার জীবনজুড়ে বিশ্বস্ত থাকে।

রাজধানীর গুলশান–বাড্ডা লিংক রোডের বিশ্বাস ভেটেরিনারি ক্লিনিকের প্রাণিচিকিৎসক সুশ্যাম বিশ্বাস বলেন, ‘কুকুর কখনো অকারণে আক্রমণ করে না। আপনি যদি কোনো কুকুরকে ঢিল ছোড়েন কিংবা তার বাচ্চাকে আঘাত করেন, তাহলে সে আপনাকে তাড়া করতে পারে। আবার আপনি কুকুর দেখে হঠাৎ ভয় পেয়ে দৌড় দিলেও সে আপনাকে সন্দেহভাজন মনে করতে পারে। তাই মনের মধ্যে ভয় থাকলেও আচরণে প্রকাশ করা যাবে না। স্বাভাবিক ভঙ্গিতে হেঁটে যেতে হবে। তা ছাড়া কুকুর দেখলেই চিৎকার করে ওঠা কিংবা কুকুরকে তাড়াতে যাওয়াও উচিত নয়।’

কুকুর নিয়ে অহেতুক ভয়ের কারণে অনেকে কুকুরের সঙ্গে ভুল আচরণ করেন। আবার এর বিপরীত চিত্রও দেখা যায়। কেউ পথের আহত কুকুরকে কোলে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন, কেউ পথের কুকুরকে খাবার দিচ্ছেন, আদর করে দিচ্ছেন। কেউ কেউ তো পথের অসহায় কুকুরকে নিজের বাড়িতে আশ্রয়ও দেন।

এমনই এক প্রাণীবন্ধু ড. ফারজানা আলম, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অধ্যাপক। তাঁর বাড়িতে পোষা কুকুর রয়েছে। এর বাইরেও নিজের কর্মস্থল, অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে, এমনকি যাতায়াতের পথেও তাঁর অনেক বন্ধু কুকুর রয়েছে। এসব বন্ধু তাঁর অপেক্ষায় থাকে। তাঁর ভালোবাসা গ্রহণ করে, তাঁকে ভালোবাসা জানায়।

এর রহস্য কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কুকুরের সঙ্গে আলাদা করে বন্ধুত্ব করার কিছু নেই, এরা মানুষকে ভালোবাসার জন্য বসেই থাকে। সমস্যা হলো, কিছু মানুষ তাদের ভয় পায়। অনেকে ঘৃণাও করে, খারাপ আচরণ করে, এমনকি আঘাতও করে। এসব অভিজ্ঞতা থেকেই মাঝেমধ্যে কুকুর মানুষকে সন্দেহের চোখে দেখে, ঘেউ ঘেউ করে, তাড়া করে। মন থেকে একবার ভালোবেসে দেখুন, এক বিন্দু ভালোবাসার বিপরীতে এক সমুদ্র ভালোবাসা ফিরিয়ে দেয় কুকুর। আপনি ভালোবেসে ভুলে যাবেন, কুকুর জীবন থাকতে সেই ভালোবাসা ভুলবে না।’

প্রাণিচিকিৎসক সুশ্যাম বিশ্বাসও বলেন তেমনটাই, ‘কুকুরের সঙ্গে বন্ধুত্বের জন্য আসলে তেমন বিশেষ কিছুর প্রয়োজন হয় না। সামান্য কিছু খাবার দিলেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আর যদি মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দেওয়া যায়, সখ্য আরও বাড়বে। কিছুদিনের মধ্যেই সে আপনাকে খুব আপন করে নেবে। কিছুদিন পর আপনি তাকে খাবার না দিলেও সে ঠিকই আপনার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করবে। পথের প্রাণীদের জন্য সামান্য কিছু করাটা মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। তাই সম্ভব হলে ওদের জন্য একটু খাবার, একটু পানি আর বৃষ্টি-রোদ-শীতে একটু আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিন।’

 করেই দেখুন এমন কিছু কাজ। পৃথিবীটা মায়াময়রূপে ধরা দেবে আপনার কাছে। ওদের মায়াভরা চোখ আর আদুরে ভঙিমায় ভুলে যাবেন নিজের মনের কষ্ট।