• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

বাগান থেকে প্রায় ৪০০ মণ বরই-মালটা ছিঁড়ে নিয়ে গেল দূর্বৃত্তরা

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের পূর্বেরচর এলাকার চাষি সোলাইমান খানের তিন একর জমির বাগান থেকে অধিকাংশ বড়ই ও মালটা ছিড়ে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা। সোমবার থেকে বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এতে সোলাইমানের প্রায় ৪০০ মণ বরই ও মালটা নিয়ে গেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। এছাড়া বেশ কিছু গাছও ভেঙে ফেলা হয়েছে। এঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে গোসাইরহাট থানা একটি অভিযোগ করেছেন সোলাইমান।

থানার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোলাইমান খান (৩৩) গত দুই বছর যাবত নাগেরপাড়া ইউনিয়নের পূর্বেরচর এলাকায় তিন একর জমিতে লিজ নিয়ে বরই ও মালটা বাগান করেছেন। বাগানের পাশেই ফারুক সরদারের (৩৫) বাড়ি। ফারুক সরদার সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাষি সোলাইমান খানের সঙ্গে সম্প্রতি ঝগড়া বাধে। পরে গত রোববার ফারুক সরদার বাদি হয়ে সোলাইমানসহ ৯জনকে আসামী করে গোসাইরহাট থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার ভয়ে সোমবার থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত সোলাইমান ও তাঁর বাগানের শ্রমিকরা পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। এই সুযোগে কে বা কারা সোলাইমানের বাগান থেকে প্রায় ৪০০ মণ বরই ও মালটা ছিঁড়ে নিয়ে যায় এবং কিছু গাছও ভেঙে ফেলে । বরই ও মালটার যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। সার ও ঔষধ কোম্পানি থেকে সোলাইমান বাকিতে ঔষধ ও সার এনেছে। বরই ও মালটা বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করার কথা। কিন্তু বাগান থেকে বরই ও মালটা খোয়া যাওয়ায় ঋণে জর্জরিত হয়ে পরেছেন তিনি।

স্থানীয় ঝন্টু পাত্তোল বলেন, সোলাইমান খানের বাগানের পাশেই আমার বাড়ি। গত সোমবার রাতে আমি ঘরে শুয়ে ছিলাম, হঠাৎ শুনতে পাই মানুষ জনের শব্দ। আমি জিজ্ঞেস করলাম এতো রাতে বাগানে আপনারা কারা। কে যেন বললেন আমরা। আমি ভয়ে ঘর থেকে আর বের হইনি।

সোলাইমানের ছোট ভাই এনামুল খান বলেন, আমাদের বাগানের পাশে ফারুক সরদারের বাড়ি। তারা মাঝেমধ্যে বাগানে ঢুকে বরই নিয়ে যেত। আমার বাবা দলিল উদ্দিন খান প্রতিবাদ করায়  ঝগড়া বাধিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয় তিনি। সেই মামলায় আসামী হয়ে আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। এই সুযোগে কে বা কারা আমাদের বাগানের বরই ও মালটা নিয়ে গেছে। আমরা চাই যারা এই কাজটি করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।

বাগানের শ্রমিক আবু বকর, লোকমান খান বলেন, আমরা সোলাইমান খানের বাগানে শ্রমিকের কাজ করি। যা টাকা পাই তা দিয়ে সংসার চালাই। এখন সোলাইমান খানের যে অবস্থা আমাদের কাজের টাকা কিভাবে দিবে। আমরা এমন বিপদের মধ্যে আছি।

বরই ও মালটার বাগানের মালিক সোলাইমান খান বলেন, স্থানীয় ফারুক সরদারের সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়। পরে তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার পর পরিবার ও বাগানের শ্রমিকদের নিয়ে গাঁ ঢাকা দেই। এই ফাঁকে আমার বাগানের প্রায় ৪০০ মণ বরই ও মালটা নিয়ে গেছে। কিছু গাছও ভেঙে ফেলেছে। বরই ও মালটার বাজার মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। আমি সার ও ঔষধ কোম্পানি থেকে বাকিতে সার ও ঔষধ এনেছিলাম। ভেবেছিলাম বরই ও মালটা বিক্রি করে পরিশোধ করবো। আমি ঋণি হয়ে গেলাম। এখন ঋণ কিভাবে পরিশোধ করবো? তাই আমি থানায় একটি অভিযোগ করেছি।

নাগের পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বাগানের মালিক ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছেন। বাগান থেকে বরই ও মালটা নিয়ে যাওয়ায় বাগান মালিক পথে পরে গেল। প্রশাসনের কাছে আমার দাবি, যারা এই কাজটি করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।

গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুস্পেন দেবনাথ বলেন, এঘটনায় আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। যদি ঘটনা সত্য হয়ে থাকে তাহলে অপরাধিদের আইনের আওতায় আনা হবে।