• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

শরীয়তপুরে বোরো ধান কাটা উৎসব

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৯ মে ২০২১  

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের সাইক্ষ্যা দাতরা গ্রামের মোস্তফা দেওয়ান (৫৫) নামের এক কৃষকের পাকা বোরো ধান কাটার মধ্য দিয়ে বোরো ধান কাটা উৎসব শুরু হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলমগীর হুসাইনের নেতৃত্বে শনিবার (৮ মে) দুপুরে সাইক্ষ্যা বিলে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকগণও এই ধান কাটা উৎসবে যোগ দেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৪৬৫ হেক্টর। বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ হাজার ৭২৫ মেট্রিক টন (চাল)।

শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপসহকারী কৃষি অফিসার বৃষ্ণ পদ বিশ্বাস বলেন, এ বছর শরীয়তপুরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৪ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ২৪ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো।

এদিকে, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের উপখাদ্য পরিদর্শক গোবিন্দ পাল জানান, এই বোরো মৌসুমে ২৭ টাকা কেজিতে দুই হাজার ৪১৮ মেট্রিক টন ধান কিনবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস।

উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা শ্রমিকদের পাশে থেকে তাঁরা ধান কাটতে শুরু করেন। কিছু সময় ধান কাটার পর ধান কাটা উৎসব উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান,  ইউএনও মো. আলমগীর হুসাইন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাহাবুদ্দিন, জেলা কৃষক লীগের আহবায়ক মো. সামসুল হক আকন, উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক আবুল কালাম ব্যাপারী, যুগ্ন-আহ্বায়ক মো. জসিম হাওলাদার প্রমুখ।

কৃষক মোস্তফা দেওয়ান বলেন, ভালো ফলন হওয়ায় আমার খুব খুশি লাগতাছে। এ বছর ধানের দামও ভালো। স্যারেরা কৃষকদের সঙ্গে আমার এক একর জমির ধান কেটে দিয়েছে।

উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ন-আহ্বায়ক মো. জসিম হাওলাদার বলেন, আমাদের উপজেলায় ধান কাটা উৎসবের আয়োজন করায় আমি গর্বিত ও আনন্দিত। কৃষকদের জমির ধান কাটতে কৃষকলীগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, এই উপজেলায় ধান কাটা শুরু হয়েছে আরও আগে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধান কাটার শ্রমিকেরা এ উপজেলায় এসে বোরো জমির ধান কাটছেন। প্রাকৃতিক কোনো রকম দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দুই সপ্তাহের মধ্যে এ উপজেলায় আবাদ করা বোরো জমির ধান কাটা সম্ভব হবে। যেভাবে ফলন হয়েছে, তাতে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে আমার বিশ্বাস। এ বছর কাঁচা ধানের মন ৯০০/৯৫০ টাকা এবং শুঁকনো ধান এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ১৫০ টাকা।

তিনি বলেন, এ উপজেলায় কৃষকদের একটি কম্বাইন হার্ভেস্টার দেয়া হয়েছে। যার মূল্য ২৯ লাখ টাকা। সরকার ভর্তকি দিয়েছেন ১৪ লাখ। আর কৃষকরা দিয়েছেন ১৫ লাখ টাকা। যন্ত্রটি প্রতি ঘন্টায় এক একর (১০০ শতক) জমির ধান কেটে মাড়াই করে বস্তা বন্ধী করতে সক্ষম।

ইউএনও মো. আলমগীর হুসাইন বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। ধানের ভালো ফলন দেখে আনন্দে মন ভরে গেছে। এখানকার কৃষকদের ধান কাটাজনিত যেকোনো ধরনের সমস্যা হলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের সার্বিক সহায়তা করা হবে।