• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

জাজিরায় শ্রেষ্ঠ ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ইমাম সম্মেলন

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ
শরীয়তপুর জেলা  ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে জাজিরা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার শ্রেষ্ঠ ইমাম ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ইমাম বাছাই এর লক্ষে দিন ব্যাপী ইমাম সম্মেলন ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা ১ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে । সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ভুইয়া। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শরীয়তপুর জেলার উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক রনি এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাজিরা থানা অফিসার ইনচার্জ  মোঃ মাহবুবুর রহমানবরিশাল ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ধর্মবিষয়ক প্রশিক্ষক মোঃ এনায়েত হোসেন।

প্রধান অতিথি জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ভূইয়া বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অন্যতম একটি বিভাগ হচ্ছে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমী। যার মাধ্যমে সম্মানিত ইমাম ও মুযাজ্জিনগণকে ইসলামের মৌলিক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান দানের পাশাপাশি গণশিক্ষা, পরিবার কল্যাণ, কৃষি ও বনায়ন, প্রাণী-সম্পদ পালন ও মৎস্য চাষ, প্রাথমিক স্বাস্থ পরিচর্যা ও প্রাথমিক চিকিৎসা, বৃক্ষ রোপণ, বিজ্ঞান, তথ্য ও প্রযুক্তি, পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি, বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ইসলামি ফাউন্ডেশন পরিচিতি, আদর্শ পরিবার গঠন, নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়ন, নারী-পুরুষ বৈষম্য দূরীকর, নারী-শিশু পাচার রোধ, দুর্নীতি প্রতিরোধ, মাদক ও জুয়ার কুফল, বাল্যবিবাহ, নারী ও শিশু পাচার, সমাজে অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয়ে ব্যবহারিক ও মৌখিক প্রশিক্ষণ প্রদান করে ইমামদেরকে উপার্জনক্ষম এবং সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ইমামদের প্রশিক্ষিত করে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই ইমাম প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। ইমামগণ প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে আর্থ-সামাজহিক উন্নমূলক কর্মকান্ডে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন।

সারা দেশে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণের আওতায় ২ লক্ষ ১২ হাজার ৬৪৭ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। দেশ হতে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস দূরীকরণ সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ইমামদেরকে প্রশিক্ষিত করে তাদের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হচ্ছে, এতে প্রশিক্ষিত ইমামগণ গ্রাম-গঞ্জে মসজিদের জুম্মায় খুতবার পূর্বে বয়ানের মাধ্যমে অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা রেখে চলছেন।গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০০১ সালে ৫৬ আইনের মাধ্যমে ইমাম ও মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট গঠিত হয়। ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলা। প্রাথমিক পর্যায়ে সরকার ট্রাস্টের অনুকূলে ২ কোটি টাকা অনুদান  হিসেবে প্রদান করেন। শুরু থেকে ২০১৭-১৮ অর্থ বছর পর্যন্ত সরকার মোট ৩২ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে মঞ্জুরী প্রদান করেন। সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রাস্টকে আরও ৫ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করেন। ট্রাস্টের শুরু থেকে ২০১৭-১৮ অর্থ বছর পর্যন্ত সদস্যভুক্ত ঋণ হিসেবে ৭,৪৪৩ জনকে ৮,৭৭,৯৭,৫০০ টাকা এবং আর্থিক সাহায্য (অনুদান) হিসেবে ৯,৬৪৯ জনকে ৩,৩৩,৫৮,০০০ টাকা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে ট্রাস্টের সদস্যভুক্ত ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজারের অধিক।ধর্মীয় নেতাদের গুরুত্ব অসীম সমাজ বিনির্মাণে ধর্মীয় নেতাদের অবদান খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে ইসলামী মূল্যবোধ অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে ধর্মীয় নেতাদ ইমামদের সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদানকে জাতি শ্রদ্ধাসাথে স্বাগত জানায়। তিনি করোনার প্রেক্ষাপটে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ও করোনা টিকা নেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধকরণে ধর্মীয় নেতাদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুম্মার দিন খুতবার বাহিরে সামাজিক উন্নয়ন ও সমসামজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করার জন্য ইমামদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন গুজবে কান দিয়ে সামাজিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সৃষ্টি যাতে না হয় তার জন্য ইমাম সাহেবগন  সজাগ থাকবেন।