• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

গোসাইরহাটে ২দিনব্যাপি সবজি চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ সমাপ্ত

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে দুইদিন ব্যাপি “পতিত জমিতে সবজি চাষ” বিষয়ক ২দিন ব্যাপি প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস অডটোরিয়ামে ১৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ টায় শুরু হয়ে আজ ১৭ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় শেষ হয়েছে। অনাবাদি, পতিত ও বসত বাড়ির আঙ্গিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় কৃষক দম্পতি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। 

এ প্রশিক্ষনে গোসাইরহাট উপজেলার ৮ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভা থেকে ১৫ টি পরিবারের ৩০ জন কৃষক-কৃষানী ২ দিন ব্যাপি এ  প্রশিক্ষনে অংশগ্রহন করে।  প্রশিক্ষণে অনাবাদি ও পতিত জমিতে লাভজনক উপায়ে কিভাবে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করা সম্ভব সে বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ  শেষে কৃষকদের মাঝে বেগুন, লাউ, টমেটো, পালং শাক, মুলা শাক, ডাটাশাক, গিমা কলমীর বীজ ও চারা বিতরণ করা হয়। প্রশিক্ষণে পরিচালনা করেন জেলা  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ গোলাম রাসূল,  গোসাইরহাট উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ শাহাবুদ্দিন। 

প্রধান প্রশিক্ষক ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ গোলাম রাসূল বলেন,খাদ্য গ্রহণের দুটি প্রধান উদ্দেশ্য রয়েছে। এক আমাদের ক্ষুধা নিবৃত্ত করা, দুই দেহের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির সরবরাহ নিশ্চিত করা। অর্থাৎ সুস্থ সবল দেহের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান গ্রহণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান নিশ্চিত করা খাদ্য গ্রহণের অন্যতম লক্ষ্য। খাদ্য হিসেবে সবজির ব্যবহার আমাদের ছয়টি খাদ্য উপাদানের মধ্যে মূল্যবান দুটি উপাদান ভিটামিন ও খনিজ লবণ সরবরাহ করে থাকে। পরিমাণে কম লাগলেও দেহের নানা রকম জৈবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, দেহের বৃদ্ধি ও বিকাশ এবং বুদ্ধি বিকাশে এ দুটি উপাদান অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রঙিন শাকসবজিতে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট, তাছাড়া সবজির খাদ্য আঁশও দেহের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেহের ওজনের সাথে মিল রেখে খাদ্যে প্রয়োজনীয় পরিমাণ সবজি গ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে নানা রকম সবজি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করার প্রয়োজন রয়েছে। আর সেজন্য প্রয়োজন রয়েছে সারা বছর ধরে বৈচিত্র্যময় সব সবজি উৎপাদন নিশ্চিত করা। সবজি উৎপাদন পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়ন এক দিকে যেমন আমাদের পুষ্টি নিরাপত্তা বিধানে ভূমিকা রাখতে পারে অন্যদিকে তা আমাদের দারিদ্র্য দূরীকরণেও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।আমাদের দেশে ভাতের উপর চাপ কমাতে সবজি চাষ বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দিয়েছে সরকার।

আমাদের কৃষিবান্দব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষির উন্নয়নে নানাবিধ কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। যার মধ্যে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ, প্রশিক্ষণ প্রদান, কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ, প্রনোদনা প্রদান করে দেশের কৃষিকে আজ এ অসস্থায় নিয়ে এসেছেন।

তিনি বলেন, সুস্থ সবল বীজ আর একটুখানি যত্ন পেলে এদেশের প্রায় সব ধরনের মাটিতেই নানা রকম সবজি ফলানো যায়। এদেশে মোট আবাদি জমির পরিমাণ মোট ৮.৫ মিলিয়ন হেক্টর। সবজি আবাদের জন্য ব্যবহৃত জমির পরিমাণ ২০১৪-১৫ সনের হিসেব অনুযায়ী ০.৭৯৮ মিলিয়ন হেক্টর আর এ সময় কালে সবজির উৎপাদন হয়েছে ১৪.২৩ মিলিয়ন মে.টন। 

মাথাপিছু আমাদের আবাদি জমির পরিমাণ কমতে কমতে ০.০৪ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। সহজ হিসেবে এটি মাথা পিছু মাত্র ৪০০ বর্গমিটার। এর মধ্য থেকেই আমাদের চাল, ডাল, তেল, ফলমূল, শাকসবজিসহ নানা রকম ফসল ফলাতে হয়। ফলে কোন ফসলের জন্য কতটুকু জমি আমরা ছাড়তে পারি তার একটি জটিল হিসেব রয়েছে বটে। তবে অল্প দিনে বৈচিত্র্যময় সবজি উৎপাদন করে অধিক লাভবান হওয়ার যে সুযোগ রয়েছে সেটি আমাদের বুঝতে হবে। বৈচিত্র্যময় সবজির জোগান বৃদ্ধি করতে হলে বাড়াতে হবে সবজির চাষ।