• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

ভেদরগঞ্জে ইভিএম ভোট প্রদান বিষয়ক প্রশিক্ষণ

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২২  

শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ আসন্ন শরীয়তপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২২ উপলক্ষে ইভিএম মেশিনে ভোট প্রদান প্রশিক্ষণ ও আইন শৃংখলা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
 শনিবার (১৫অক্টোবর) বেলা ১১টায় ভেদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের শহীদ আক্কাস-শহীদ মহিউদ্দিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষনে সভাপতিত্ব করেন ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  ভেদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হুমায়ুন কবির মোল্যা

 বিশেষ অতিথি ছিলেন,সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ ইমামুল হাফিজ নাদিম,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল মান্নান বেপারী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আকলিমা বেগম লিপি, ভেদরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ বাহালুল খান বাহার । এ সময় উপস্থিত ছিলেন চরকুমারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুজাম্মেল হক মোল্যা, আর্শিনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহাবুবু আলম সরদার,চরসেন্সাস ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিএম আনোয়ার হোসেন বালা,দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শাহজালাল মাল,ডিএম খালি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহসিন হক আবু বেপারী,রামভদ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ বিপ্লব সিকদার,ছয়গাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান লিটন। চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন নারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেযারম্যান হাজি সালাহউদ্দিন,সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদার। প্রশিক্ষণে উপজেলার ১৩ ইউনিয়নে দেরশতাধিক জনপ্রতিনিধি অংশগ্রহন করেন।

সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সময়ের সাথে সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এর প্রয়োগ সর্বত্র ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বের কোথাও আইসিটি বিহীন ভবিষ্যত অকল্পনীয়। বাংলাদেশেও এর ব্যবহার ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে। গত ০৫ জানুয়ারি ২০২২ অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পুরোপুরি তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) সম্পন্ন করা হয়েছে।আগামী ১৭ অক্টোবর ২০২২ অনুষ্ঠিত শরীয়তপুর জেলা পরিষদের ভোট গ্রহন ইভিএম মেশিনে হবে।

ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম হলো ভোট দানের সহজতর এক ব্যবস্থা। এতে কাগজের ব্যালট ও ব্যালট বাক্স নেই। এই ব্যবস্থায় ব্যালট কাগজে সীল মেরে ভোট প্রদানের পরিবর্তে ভোটার পছন্দের প্রতীকের পাশে সুইচ টিপে ভোট প্রদান করবেন। সারা দিনের ভোট প্রাদন শেষ হলে মেশিন অতি দ্রুত জানিয়ে দেবে কোন প্রার্থী কত ভোট পেয়েছেন। ইভিএম ব্যবহারের সুবিধা  হলো কোটি কোটি সংখ্যক ব্যালট ছাপানোর জন্য কাগজের খরচ, ছাপানোর খরচ, সেগুলো পরিবহনের খরচ, ভোট গণনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকবলের খরচ সবই সাশ্রয় হবে। ভোটের ফলাফল হবে নির্ভুল। নির্বাচনের ফলাফল দ্রুত পাওয়া যাবে। এটি এর সবচেয়ে বড় সুবিধা। ইভিএম যেহেতু কোন বাতিল ভোট গ্রহণ করে না তাই প্রতিটি নাগরিকের ভোটের মূল্যায়ন হবে। একই মেশিন পরবর্তী যে কোন নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে। কেন্দ্র দখল করে ভোটের ফলাফল পাল্টিয়ে ফেলা সম্ভব হবে না। ইভিএম-এর ইউনিট সমূহ প্রতিটি বুথের জন্য একটি করে ইভিএম ব্যবহার করতে হয়। প্রতিটি ইভিএম এর দুটি ইউনিট বা অংশ রয়েছে যথাঃ ব্যালট ইউনিট ও কন্ট্রোল ইউনিট। দুটি ইউনিট একটি তারের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে। মেশিনটি সম্পূর্ণ ব্যাটারী চালিত। ব্যালট ইউনিট ব্যালট ইউনিটটি থাকে বুথের ভেতরে। ব্যালট ইউনিটের উপর প্রার্থীর নাম ও প্রতীক ছাপানো থাকে। প্রতিটি প্রতীকের পাশে রয়েছে একটি করে সুইচ। কোন প্রতীকের পাশের সুইচটা চেপে দিলে তার পাশে একটি ছোট সবুজ বাতি জ্বলে ওঠে ও একবার দীর্ঘ বীপ ধ্বনি শোনা যায়। বাতি জ্বলা ও বীপ ধ্বনি শুনে ভোটার বুঝতে পারবেন যে তার ভোট গৃহীত হয়েছে। অক্ষরজ্ঞানহীন লোকও সহজেই ইভিএম দ্বারা ভোট প্রদান করতে পারবেন। ভোটার ভোট প্রদানের সাথে সাথে যন্ত্রটি ভোটের তথ্য তার মেমোরিতে নিয়ে নেয়।


প্রতিটি বুথের ফলাফল একীভূত করে প্রিজাইডিং অফিসার অন্য একটি ফরমে তুলে সই-স্বাক্ষর করে রিটার্নিং অফিসারের কাছে তা পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া যাবে। সংসদ নির্বাচন ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা কিংবা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা সম্ভব। প্রতিটি ইভিএম-এর সাথে একটি করে স্মার্ট কার্ড রয়েছে। এই কার্ডটি কন্ট্রোল ইউনিট এর নির্দিষ্ট স্থানে ঢুকিয়ে না রাখলে ইভিএমটি কাজ করবে না। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সরবরাহকৃত স্মার্ট কার্ড ছাড়া মেশিন কাজ করবে না। আর নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যক্তিদেরই স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করবে। কেন্দ্র দখল করার বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আমাদের দেশে “কেন্দ্র দখল” এর ঘটনা কখনো কখনো ঘটে থাকে। ইভিএম-এ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আছে। প্রথমতঃ এমন পরিস্থিতিতে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার কন্ট্রোল ইউনিটের “ক্লোজ” সুইচটি চেপে দিলেই দখলকারীরা কোন ভোট দিতে পারবে না।
নির্বাচন ব্যবস্থায় আইসিটির ব্যবহার কেবল কাজের সুবিধা বা সময় বাঁচানোর জন্য নয় বরং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা তৈরি করাও এ প্রযুক্তি ব্যবহারের অন্যতম কারণ। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, সুষ্ঠু ও সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কেবল প্রযুক্তির সুফল পাওয়া সম্ভব।