• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

একটি আমলেই দুনিয়ার সব চিন্তা থেকে মুক্ত থাকবে মুমিন!

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২১  

দুনিয়াজুড়ে খ্যাতি পাওয়া এমন একটি প্রবাদ বাক্য আছে- ‘মান লাহুল মাওলা; ফালাহুল কুল’ অর্থাৎ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য হয়ে যায়; (দুনিয়ায়( সবকিছুই তার জন্য হয়ে যায়।’ ঠিক হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনই একটি বিষয়ের আলোকপাত করেছেন। তাহলো-
যেসব ব্যক্তির চিন্তা-চেতনায় থাকবে শুধুই আখেরাত বা পরকাল; তার দুনিয়ার সব চিন্তা-ভাবনার জন্য মহান আল্লাহই যথেষ্ট। অর্থাৎ দুনিয়ার বিষয়ে তার কোনো চিন্তা নেই। মুমিন মুসলমানের জন্য এরচেয়ে উত্তম ঘোষণা আর কী হতে পারে! হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা এভাবে ওঠে এসেছে-

১. হজরত আসওয়াদ ইবনে ইয়াযিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, ‘আমি তোমাদের নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যার চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু হবে আখেরাত, তার পার্থিব (দুনিয়ার) চিন্তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হয়ে যান। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার চিন্তায় মোহগ্রস্ত থাকে তার যে কোন উপত্যকায় বা প্রান্তরে ধ্বংস হয়ে যাওয়াতে আল্লাহর কোনো পরোয়া নেই।’ (ইবনে মাজাহ)

২. হজরত আবান ইবনে উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, হজরত যায়েদ ইবনে সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু দুপুরের সময় মারওয়ানের কাছ থেকে বের হয়ে এলে আমি ভাবলাম- নিশ্চয়ই কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানার জন্য এ সময় তিনি তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আমাদের শোনা কিছু হাদিস শোনার জন্য মারওয়ান আমাদের ডেকেছেন। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি-
‘পার্থিব (দুনিয়ার) চিন্তা যাকে মোহগ্রস্ত করবে, আল্লাহ তার কাজকর্মে অস্থিরতা সৃষ্টি করবেন, দরিদ্রতা তার নিত্যসংগী হবে এবং পার্থিব স্বার্থ ততটুকুই লাভ করতে পারবে, যতটুকু তার তাকদীরে লিপিবদ্ধ আছে। আর যার উদ্দেশ্য হবে- আখেরাত; আল্লাহ তার সবকিছু সুষ্ঠুভাবে (সম্পন্ন) করে দেবেন, তার অন্তরকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করবেন এবং দুনিয়া স্বয়ং তার সামনে এসে হাজির হবে।’ (ইবনে মাজাহ)

৩. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মহাপবিত্র আল্লাহ বলেন- ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতে মগ্ন হও। আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করবো এবং তোমার দারিদ্রতা দূর করবো। তুমি যদি তা না করো, তাহলে আমি তোমার অন্তর পেরেশানী দিয়ে পূর্ণ করবো এবং তোমার দরিদ্রতা দূর করবো না।’ (ইবনে মাজাহ, তিরমিজি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সব সময় পরকালের চিন্তা-ভাবনা নিজেদের নিয়োজিত রাখা। যে কোনো কাজে পরকালের জবাবদিহিতা জাগ্রত রাখা। আর তাতে মিলবে অনেক নেয়ামত। এর মধ্যে অন্যতম হলো- তারা দুনিয়ার সব পেরেশানি থেকে থাকবে মুক্ত। আর তাদের পরকাল হবে নিরাপদ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়া ও পরকালের চিন্তা-পেরেশানি থেকে মুক্ত থাকতে আখেরাতের চিন্তা-ভাবনা ও প্রস্তুতিতে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার পেরেশানি ও চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে হাদিসের আমলে জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।