• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

আল্লাহই একমাত্র উপাস্য; তিনিই বান্দার সাহায্যকারী

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২১  

আল্লাহ তাআলা এক ও অদ্বিতীয়, একক ও অবিভাজ্য। তিনি 'লা শরিক'; তার কোনো কিছুতেই সমকক্ষ বলতে কিছুই নেই। তিনি অংশীবিহীন। তিনিই বান্দার একমাত্র সাহায্যকারী। এ কারণেই মহান আল্লাহ নিজের পরিচয় দিয়ে সুরা ইখলাস নাজিল করেন-

قُلۡ هُوَ اللّٰهُ اَحَدٌ
(হে রাসুল!) আপনি বলুন, তিনিই আল্লাহ; একক (অদ্বিতীয়)।
اَللّٰهُ الصَّمَدُ
‘আল্লাহ অমুখাপেক্ষী।’ অর্থাৎ, সবাই তাঁর মুখাপেক্ষী, তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন।

لَمۡ یَلِدۡ وَ لَمۡ یُوۡلَدۡ
‘তাঁর কোন সন্তান নেই এবং তিনিও কারো সন্তান নন।’ অর্থাৎ তিনি কারো জনক নন এবং জাতকও নন। তাঁর থেকে কিছু উদ্ভূত নয় এবং তিনিও কিছু থেকে উদ্ভূত নন।

وَ لَمۡ یَکُنۡ لَّهٗ کُفُوًا اَحَدٌ
‘আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।’ অর্থাৎ কেউ তাঁর সমকক্ষ নয়; না তাঁর সত্তায়, না তাঁর গুণাবলীতে এবং না তাঁর কর্মাবলীতে। তাঁর মত কোন কিছুই নেই।

এই আল্লাহ তাআলাই সৃষ্টি জগতের একমাত্র প্রভু। তিনি বান্দাকে সব সময় সার্বিকভাবে সাহায্য করেন। কারণ তিনিই সর্বশক্তিমান। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিপদে পড়লে তাঁর প্রভুর কাছে একত্ববাদের ঘোষণা দিয়েই সাহায্য প্রার্থনা করতেন। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি দিয়ে) বিপদের সময় বলতেন-
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ الْعَظِيْمِ الْحَلِيْم، لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ رَبُّ السَّمَاوَاتِ، وَرَبُّ الأرْضِ، وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيْمُ
উচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আরশিল কারিম।’
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই; যিনি মহান ও পরম সহিষ্ণু। আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই; যিনি মহান আরশের মালিক। আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই। তিনি আসমানের রব, জমিনের রব এবং মর্যাদাবান আরশের রব।’ (বুখারি ও মুসলিম)

এ হাদিস থেকেও প্রমাণিত, ইবাদতের উপযুক্ত উপাস্য মহান আল্লাহ একজনই। তিনিই মানুষকে বিপদাপদ ও দুঃশ্চিন্তা থেকে মুক্ত রাখেন। আর মানুষ তাঁর কাছেই এসব কিছু থেকে সাহায্য প্রার্থনা করেন।

আল্লাহ ছাড়া বিপদাপদ ও দুশ্চিন্তা দূর করার আর কেউ নেই। এ কালেমাগুলো যখন কোনো মুমিন বান্দা ভয়-ভীতি ও বিপদের সময় অন্তর থেকে বলবে মহান আল্লাহ তাকে নিরাপদ রাখবেন।

তিনি মহান আল্লাহ; যিনি বান্দার আবেদনে সাড়া দেন। আল্লাহ তাআলার জিকির করলে এবং তার কাছে দোয়া করলে তিনি কঠিন বিষয় সহজ করে দেন।

তিনি মহান আল্লাহ; যিনি একমাত্র ইবাদতের উপযুক্ত উপাস্য। তিনিই দুঃখ-কষ্ট দূর করেন এবং সংকীর্ণতা হালকা করেন। বান্দা কঠিন সময় আল্লাহকে স্মরণ করলে তা সহজ হয়ে যায়, দুঃখ-কষ্টের সময় তাঁকে স্মরণ করলে তা লাঘব হয়ে যায়, কষ্টের সময় তাঁকে স্মরণ করলে তা হালকা হয়ে যায়, মুসীবতের সময় তাঁকে স্মরণ করলে তা দূর হয়ে যায় এবং বিপদের সময় তাঁকে স্মরণ করলে তা অপসারিত হয়ে হয়ে যায়।

তিনিই মহান আল্লাহ যিনি বান্দার সব অবাধ্যতায় পরম সহিষ্ণু। যে কারণে তিনি হাদিসের বর্ণনায় নিজেকে ‘আল-হালিম’ বলেছেন। আল্লাহর ‘আল-হালিম’ তথা পরম সহিষ্ণু নাম বিশেষ করে উল্লেখ করার কারণ হলো, মুমিনের বিপদাপদ অনেক সময় তার ইবাদাত-বন্দেগিতে কমতি বা অনেক ক্ষেত্রে আল্লাহর স্মরণ ভুলে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে।

তিনি মহান আল্লাহ; যিনি বান্দার দুঃশ্চিন্তায় সহায় হোন। আর বান্দার তাওহিদের এ ঘোষণার কারণে আল্লাহ তাআলা দুশ্চিন্তা হ্রাস করে দেন। ক্ষমা করে দেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শুধু মহান আল্লাহকে ইলাহ বা উপাস্য রূপে গ্রহণ করা। আর কাউকে তার সঙ্গে শরিক না করা। তিনি এক ও একক। তিনি অদ্বিতীয়। তার সমকক্ষ কেউ নেই। তিনি কারো জনক নন। আর জাতকও নন। দুনিয়া ও আসমানের কোথাও তার কোনো সমকক্ষ নেই।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। উপাস্য হিসেবে শুধু তাকেই মেনে নেওয়ার তাওফিক দান করুন। তার একবচ্ছত্র আধিপত্যে বিশ্বাস স্থাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।