• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

রমজানের শেষ দশকে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর আমল

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২৩  

শুরু হয়েছে রমজানের শেষ দশক। মাসটির প্রথম দশকে রহমত, মাঝের দশকে ক্ষমা এবং শেষ দশকে দোজখ থেকে মুক্তি প্রদানের ঘোষণা হয়েছে। (সহিহ ইবনে খুযাইমা-হাসান)।
তবে যারা প্রথম ১০ দিন পর্যন্ত এই রহমতের সুযোগ গ্রহণ করেনি তারা অবশ্যই অপরাধী। তাদের এই অপরাধের ক্ষমা লাভের জন্য দয়াময় প্রভু আরো ১০ দিনের সুযোগ রেখে দিয়েছেন। যারা তখনো ক্ষমা গ্রহণের এই সুযোগ অবহেলা ও উদাসীনতায় পার করেছে তারা কঠিন শাস্তির উপযোগী। আর আল্লাহর শাস্তি হলো জাহান্নামের আগুন। তবে করুণাময় আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে মানুষের মুক্তি লাভের জন্য আরো ১০ দিন পর্যন্ত সুযোগ রেখে দিয়েছেন। এই দশকে রয়েছে শবেকদর। হাজার মাস ইবাদত করা অপেক্ষা উত্তম এই শবেকদর। (সূরা: কদর, আয়াত: ৩)

মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমান নিয়ে সওয়াবের আশায় শবেকদর পালন করবে তার অতীতের সব পাপ ক্ষমা করা হবে।’ (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

আয়েশা (রা.) বলেন, ‘যখন রমজানের শেষ দশক আরম্ভ হতো রাসূলুল্লাহ (সা.) কোমর বেঁধে নামতেন। গোটা রাত জাগ্রত থাকতেন। পরিবারের সদস্যদের ইবাদতের জন্য জাগিয়ে দিতেন।’ (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

অপর এক বর্ণনায় উল্লেখ আছে, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশকে অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি সাধনা করতেন।’ (সহিহ মুসলিম)।

আয়েশা (রা.) আরো বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের প্রথম ২০ দিন নামাজ আদায় করতেন এবং ঘুমাতেন। কঠিন সাধনায় লিপ্ত হতেন এবং কোমর বেঁধে নামতেন।’ (আহমদ)

সাহাবি আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানে শুরু থেকেই রাতে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতেন এবং কখনো নিদ্রা যেতেন। তবে রমজানের ২০ তারিখ থেকে কখনো চোখ বন্ধ করতেন না।’ (হিলইয়াতুল আওলিয়া)

মহানবী (সা.) রমজানের সিয়াম সাধনায় সর্বাত্মক সাধনা চালিয়ে যেতেন। আমাদের প্রতিটি মুসলমানকে তার অনুসরণ করে কঠোর সাধনার মাধ্যমে রমজান পালন করা প্রয়োজন। প্রয়োজন নিজেদের পরিবার পরিজনকেও রমজানের সিয়াম সাধনার প্রতি উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করা। বিশুদ্ধ হাদিসে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) রাতে ইবাদতের জন্য ফাতেমা (রা.), আলী (রা.) এবং স্ত্রীদের জাগ্রত করে দিতেন। (আত তারগিব)

রমজানের শেষ দশকে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর আরেকটি ধারাবাহিক আমল ছিল ইতেকাফ করা। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

আম্মাজান আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) আমরণ রমজানের শেষ দশক ইতেকাফ করেছেন। অতঃপর তার বিবিগণ ইতেকাফ করেছেন। (সহিহ বুখারী, সহিহ মুসলিম)

সাহাবি আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশকে ধারাবাহিকভাবে ইতেকাফ করতেন। এক বছর করেননি, পরবর্তী বছরে (ইন্তেকালের বছর) ২০ দিন তিনি ইতেকাফ করেন।’ (আহমদ, তিরমিজি)

রাসূলুল্লাহ (সা.) ধারাবাহিকভাবে ইতেকাফ করা ইতেকাফের প্রতি তার গুরুত্ব বোঝায়। তাই ইতেকাফ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। ইতেকাফ পাপমুক্ত থাকা ও শবেকদর পাওয়ার সহজ উপায়। আর এতে রয়েছে মহানবী (সা.) এর ধারাবাহিক আমলের অনুসরণ।

আল্লাহপাক আমাদের রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অনুসরণে রমজানের শেষ দশক পালনের তাওফিক দান করুন। আমিন।