• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

এশিয়া কাপের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২  

১৫তম এশিয়ার কাপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়ার লক্ষ্যে আজ ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই আসরে গ্রুপ ও সুপার ফোরের সেরা দল হয়েই ২০১৪ সালের পর আবারও এশিয়া কাপের ফাইনালে দুই দল।

ফাইনালের আগে সুপার ফোরে দেখা হয়েছিল দু’দলের। ফাইনালের ‘ড্রেস রিহার্সেল’ ম্যাচে ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে শ্রীলঙ্কা। এবার শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রতিশোধের পালা পাকিস্তানের। কারণ ২০১৪ সালে ওয়ানডে ফরম্যাটের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হেরেছিল পাকিস্তান।
 
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়।

এবারের আসরে দুই গ্রুপে ছিল শ্রীলংকা ও পাকিস্তান। নিজ-নিজ গ্রুপে হার দিয়ে এবারের আসর শুরু করে এই দু’দল। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ‘বি’ গ্রুপে আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ২ উইকেটে হারিয়ে সুপার ফোরের টিকিট পায় লঙ্কানরা। ওই গ্রুপ থেকে ২ ম্যাচ জিতে লঙ্কানদের সাথে সুপার ফোরে উঠে আফগানিস্তান।

সুপার ফোরে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ ছিল আফগানিস্তান। এবার আফগানদের উড়িয়ে দেয় লঙ্কানরা। গ্রুপ পর্বে হারের প্রতিশোধ নেয় তারা। ৪ উইকেটে জয় পায় শ্রীলঙ্কা। পরের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ে ফাইনালের পথে এক পা দিয়ে রাখে দলটি। আর শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেটে জয়ে ফাইনালের আগে প্রস্তুতিটা ভালোভাবে সেড়ে নেয় শ্রীলঙ্কা। হার দিয়ে আসর শুরু করেও টানা চার জয়ে ফাইনালে মঞ্চে লঙ্কানরা।  

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার মত গ্রুপ রার্নাস-আপ হয়ে সুপার ফোরে উঠে পাকিস্তান। ভারতের কাছে ৬ উইকেটের হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করে পাকিস্তান। পরের ম্যাচে হংকংকে উড়িয়ে দেয় তারা। ১৫৫ রানের বিশাল জয়ে সুপার ফোরে উঠে পাকরা। বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুন্যে প্রতিপক্ষ হংকংকে ৩৮ রানে গুটিয়ে দেয় বাবর আজমের নেতৃত্বাধীন দলটি।

সুপার ফোরে ভারতের কাছে হারের প্রতিশোধ নেয় পাকিস্তান। উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ভারতকে ৫ উইকেটে হারায় পাকরা। আর পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১ উইকেটে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। আফগানদের বিপক্ষে শেষ ওভারের ১ উইকেট হাতে নিয়ে ১১ রানের প্রয়োজন বোলার নাসিমের দুই ছক্কায় ফাইনালে টিকিট পায় পাকিস্তান।

ফাইনালের আগে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচের শ্রীলঙ্কার সাথে লড়াইয়ে হার মানে পাকিস্তান। লঙ্কান বোলারদের সামনে ব্যাটারদের অসহায় আত্মসমর্পণে ১২১ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। ১২২ রানের টার্গেট ১৭ ওভারের মধ্যে স্পর্শ করে ৫ উইকেটে শ্রীলংকা। তাই হারের স্বাদ নিয়ে ফাইনাল খেলতে নামবে নামতে হওয়ায় হতাশ পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম।

শ্রীলংকার কাছে হারের পর বাবর বলেন, “পাওয়ার প্লেতে আমরা ভাল খেলেছিলাম। কিন্তু তারপর ব্যাটিং ভাল হয়নি। আমরা জুটি বাঁধতে পারলাম না। খারাপ শট খেলে আউট হয়েছে সবাই। ফাইনালের আগে এই ধরনের ব্যাটিং দেখে চিন্তা হচ্ছে। আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বোলাররা নিজেদের কাজ করেছে। পেস বোলাররা ভাল ছন্দে রয়েছে। হাসান দলে ফিরেছে। ব্যাটারদের কোথায় ভুল হচ্ছে সেটা ফাইনালের আগে আলোচনা করতে হবে। আশা করি, ফাইনালে সবাই নিজেদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করবে। ফাইনালে জয়ের ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী।”

অন্যদিকে শিরোপা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি শ্রীলঙ্কাও। তবে ফাইনাল নিয়ে লংকানরা অনেক বেশি সতর্ক বলে জানালেন দলের অধিনায়ক দাসুন শানাকা। তিনি বলেন, “ফাইনালের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় পেয়েছি আমরা। এই জয় বাড়তি অনুপ্রেরণা দিবে। তবে ফাইনাল নিয়ে আমরা অনেক বেশি সতর্ক। পাকিস্তান শক্তিশালী দল। পুরো আসরে তা দেখিয়েছে তারা।”

তিনি আরও বলেন, “ফাইনালে ঘুড়ে দাঁড়াতে মরিয়া থাকবে তারা। তাই পাকিস্তানকে আমরা হালকাভাবে নিচ্ছি না। তবে ছাড় দেবো না। ফাইনাল জিততে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেবো।”

এবারের এশিয়া কাপ হবার কথা ছিলো শ্রীলঙ্কার মাটিতে। কিন্তু গত এপ্রিলে দেশটির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির কারণে শেষমেষ সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেয়া হয় এশিয়া কাপের আসর। তবে এশিয়া কাপের আয়োজক থাকে শ্রীলঙ্কাই। তাই এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে চান শানাকা।

শানাকা বলেন, “গত এপ্রিল থেকে ভয়ংকর সময় পার করছে দেশবাসী। চরম খারাপ অবস্থার কারণে জীবন যুদ্ধ করতে হচ্ছে তাদের। তবে একমাত্র দেশের খেলাধূলার মাধ্যমেই তাদের মুখে সামান্য হাসি ফুটে। এবারের এশিয়া কাপে আমাদের জয়গুলো তাদের আনন্দ দিয়েছে। তাই ফাইনাল জিতে শিরোপা উপহার দিয়ে দেশবাসীকে কিছুটা হলেও আনন্দ দিতে চাই আমরা।”

এখন পর্যন্ত ২২বার টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। এরমধ্যে ১৩ বার জিতেছে পাকিস্তান। ৯ বার জয় আছে শ্রীলঙ্কার। মুখোমুখি লড়াইয়ে পাকিস্তানের জয়ের পাল্লা ভারী থাকলেও এশিয়া কাপের মঞ্চে বেশি জয় রয়েছে শ্রীলঙ্কার। এশিয়া কাপে ১৬ বারের লড়াইয়ে ১১ বার জিতেছে লঙ্কানরা। ৫ বার জয় আছে পাকিস্তানের।

শ্রীলংকা দল
দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), দীনেশ চান্দিমাল, দানুশকা গুনাথিলাকা, পাথুম নিশাঙ্কা, চারিথ আসালঙ্কা, ভানুকা রাজাপাকসে, আসিন বান্দারা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাহেশ থিকশানা, জেফ্রি ভান্দারসে, প্রভীন জয়াবিক্রমা, চামিকা করুনারত্নে, দিলশান মধুশঙ্কা, মাথেশ পাথিরানা, নুয়ান্দু ফার্নান্দো, আসিথা ফার্নান্দো, প্রমোদ মধুশান ও নুয়ান থুসারা।

পাকিস্তান দল
বাবর আজম (অধিনায়ক), শাদাব খান, আসিফ আলি, ফখর জামান, হায়দার আলি, হারিস রউফ, ইফতিখার আহমেদ, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ নাওয়াজ, মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটরক্ষক), হাসান আলি, নাসিম শাহ, শাহনেওয়াজ দাহানি, মোহাম্মদ হাসনাইন ও উসমান কাদির।