• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে অভিনয়ে ফিরছেন খ্যাতিমান দুই শিল্পী

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০১৯  

 

দীর্ঘদিন পর আবারও টিভি পর্দায় ফিরছেন খ্যাতিমান অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান ও মাসুদ আলী খান।
আর এই দুই গুণী অভিনেতাকে একসাথে ক্যামেরার সামনে নিয়ে আসছেন নন্দিত নির্মাতা, উপস্থাপক হানিফ সংকেত। তিনি জানান, ২৯ নভেম্বর প্রচারিতব্য ‘ইত্যাদি’র নতুন পর্বে দেখা যাবে এই দুজনকে।

গত ৪ নভেম্বর ঢাকাস্থ ফাগুন অডিও ভিশনের নিজস্ব শুটিং স্পটে তাদের নিয়ে একটি নাটিকার দৃশ্যধারণ হয়।
টানা চার মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন খ্যাতিমান অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। তখন নিয়মিতই তার খোঁজ-খবর রাখতেন হানিফ সংকেত।

একদিন হাসপাতালে এটিএম শামসুজ্জামানকে দেখতে গেলে, সুস্থ হয়ে আবারও ইত্যাদি’র মাধ্যমে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেন তিনি। আর তাই সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরার পর তাকে ভেবে ‘ইত্যাদি’র জন্য একটি নাট্যাংশ তৈরি করেন হানিফ সংকেত।
এ প্রসঙ্গে এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, ‘কথায় আছে, রাখে আল্লা মারে কে। আমার যখন শারীরিক অবস্থা চরম খারাপ, তখন অসংখ্য মানুষ আমার জন্য হাত তুলে দোয়া করলেন। তাদের দোয়ায় আমি সুস্থ হয়ে সবার সামনে ফিরে এসেছি। আমি যখন অসুস্থ ছিলাম তখন বার বার মনে হচ্ছিল আমি কি আর ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে পারবো? আবার কি অভিনয় করতে পারবো? এই সময় হানিফ সংকেত আমার কাছে এলেন। সাহস দিয়ে বললেন, আপনাকে আমরা নিয়ে যাবো, আপনার একটুও হাঁটতে হবে না। তিনি তার কথা রাখলেন। শুধু নিয়ে যাওয়াই নয়- চেয়ারে বসিয়ে কয়েকজনকে দিয়ে দোতালায় উঠালেন এবং ক্যামেরার সামনে আমাকে দাঁড় করালেন। অনেক সময় নিয়ে, যত্ন নিয়ে আমাদের পর্বটি ধারণ করলেন এবং শুটিং শেষে আবার বাসায় পৌঁছে দিলেন। তার আপ্যায়ন, শিল্পীর প্রতি সম্মান সবসময় আমার ভালো লাগে। এবারও তার সেবা-যত্ন আমাকে মুগ্ধ করেছে।’

দর্শকদের উদ্দেশ্যে এই বর্ষীয়ান অভিনেতা বলেন, ‘আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন আগের মতো অভিনয় করতে পারি। যতক্ষণ আমার হায়াত আছে, আপনাদের যেন আনন্দ দিতে পারি।’

এদিকে গত ৬ অক্টোবর ৯০ বছরে পদাপর্ণ করলেন আরেক বর্ষীয়ান খ্যাতিমান অভিনেতা মাসুদ আলী খান। ৯০ বছরে পা রেখে ইত্যাদি’র মাধ্যমে তিনিও আবার দীর্ঘদিন পর টেলিভিশন অভিনয়ে ফিরলেন। ইত্যাদিতে অভিনয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রায় ৬ বছর আগে একটা দুর্ঘটনার ফলে আমার শিরদাঁড়ার একটা অংশ ভেঙ্গে যায়। ফলে আমার পক্ষে আর অভিনয় করা সম্ভব হতো না। অভিনয় করতে না পারলেও মনে তো একটা খেদ থাকেই। কারণ আমি নিয়মিত রেডিও-টেলিভিশনে অভিনয় করতাম। আর ইত্যাদি আমার অত্যন্ত প্রিয় একটা অনুষ্ঠান। এতে আমি বরাবরই অংশগ্রহণ করতাম। তাই মনে মনে একটা আশা পোষণ করছিলাম, যে যদি জীবনে কোনও অনুষ্ঠান করা আর নাই হয় এই জীবন সায়াহ্নে এসে ইত্যাদির একটা পর্বে আমি অভিনয় করবোই। তাই এবার ইত্যাদির মাধ্যমে আপনাদের সামনে আসা। যতদিন বাঁচি আমি যেন মাঝেমধ্যে আপনাদের সাক্ষাৎ পাই, সেই দোয়া চাই।’

এদিকে নির্মাতা হানিফ সংকেত বলেন, ‘বর্ষীয়ান এই দুই অভিনয়শিল্পী আমাদের জাতীয় সম্পদ। আজকাল মিডিয়াতে দেখা যায় একটু বয়স হলে তার জন্য আর কোনও চরিত্র থাকে না। কারণ অধিকাংশ নাটকেই কোনও বাবা-মা বা বয়স্ক চরিত্র দেখা যায় না। আর কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার খোঁজ-খবর নেওয়া শুধু সেলফিতেই সীমাবদ্ধ থাকে। তবে আমার নাটক বলেন, ইত্যাদি বলেন সবজায়গায়ই এইসব গুণী শিল্পীদের একটা বিশেষ স্থান থাকে। এই দুই গুণী অভিনেতা ইত্যাদির প্রায় নিয়মিত শিল্পী। দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর পরিবারের একজন সদস্য ফিরে এলে যেমন আনন্দ হয় ইত্যাদিতে আবার তাদের পেয়ে আমিও তেমনি আনন্দিত। যদিও তাদের এই দূরে থাকাটা ছিলো অসুস্থতার কারণে। ইত্যাদির প্রতি তাদের এই ভালোবাসার কাছে আমি ঋণী।’