• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

এবার পদ্মার তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ যাবে বিচ্ছিন্ন ৩টি ইউনিয়নে

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

শরীয়তপুর প্র‌তি‌নি‌ধিঃ চার দিক দিয়ে পদ্মা ও মেঘনা নদী। মাঝে ছোট-বড় অসংখ্য চর। ৭০ বছর আগে থেকে ওই চরে মানুষ বসবাস শুরু করেছে। তিনটি ইউনিয়নের মধ্য চরগুলোর অবস্থান। চরের মানুষ হারিকেন ও প্রদীপের আলো ছারা কখনো বিদ্যুতের আলো পায়নি।  পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে  সেই চরে বিদ্যুতায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদীর ৮০০ মিটার অংশে বিদ্যুতের লাইন নেয়া হবে। ওই চরের নওপাড়া ও চরআত্রা ইউনিয়ন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায়। আর কাঁচিকাটা ইউনিয়ন ভেদরগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত। তিনটি ইউনিয়নে ৭০ হাজার মানুষের বসবাস।
শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত সংসদ নিবার্চনের সময় শরীয়তপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে এম এনামুল হক শামীম ওই চরগুলোতে গনসংযোগে গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার দাবী তোলেন স্থানীয় মানুষ। নির্বাচিত হতে পারলে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে এমন প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। সংসদ নির্বাচনের পর এনামুল হক শামীম ওই তিন ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার বিষয় নিয়ে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের সাথে সভা করেন।
 
পদ্মার শরীয়তপুর অংশের তীর হতে ওই চরের নদীর দৈর্ঘ সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার হতে ছয় কিলোমিটার। এ কারনে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি হতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে না। তখন সিদ্ধান্ত হয় মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি হতে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। তখন শরীয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাথে পানি সস্পদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সভা করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদী দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নেয়া হবে।
 
মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার দীঘিরপার পদ্মা নদীর তীর হতে নওপাড়ার নদীর দুরত্ব ৮০০ মিটার। তখন সিদ্ধান্ত হয় শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওই তিনটি ইউনিয়নের কার্যক্রম মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে হস্তান্তর করা হবে। সে অনুযায়ী মন্ত্রনালয়ে চিঠি দেয়া হয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড হতে এ বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়।
 
শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক সোহরাব আলী বিশ্বাস বলেন, পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে শরীয়তপুরের তিনটি চরে বিদ্যুৎ নেয়া হবে। ওই চরে একটি সাবষ্টেশন নির্মাণ করা হবে। মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির  উপ মহাব্যবস্থাপক শফিউল আলম বলেন, শরীয়তপুরের পদ্মা নদীর মাঝের তিনটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কাজ শুরু হয়েছে। কোথায় কোথায় পুল বসবে তা নির্ধারন করা হচ্ছে। পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার প্রক্রিয়ার জরিপ কাজ চলছে। শিঘ্রই কাজ শুরু করা হবে। নদীর অংশটুকু সাবমেরিন ক্যাবলে আর বাকি অংশ সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
 
নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল মুন্সী বলেন, আমাদের ইউনিয়নটি দুর্গম চর। পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে এখানে বিদ্যুৎ দেয়া হতে পারে তা কখনো ভাবিনি। এ এলাকায় বিদ্যুৎ আসছে এমন খবরে আমরা আনন্দিত। এ বিষ‌য়ে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়ার ঘোষনা দিয়েছেন প্রধামন্ত্রী। আমরা তার ঘোষনা বাস্তবায়ন করছি। নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি ছিল দ্রুত সময়ের মধ্যে চরবাসীদের বিদ্যুৎ দেয়া হবে। পদ্মার দুর্গম চর হওয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ শুরু করা হচ্ছে।