জানাজা ও কাফন-দাফনে যা জানা জরুরি
শরীয়তপুর বার্তা
প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২০
মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়া ফরজে কিফায়া। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপর ইন্তিকাল করলেও গোসল দেওয়া ফরজ। মৃতাবস্থায় ভূমিষ্ঠ হলে গোসল দেওয়া ভালো, ফরজ নয়। কেউ লা ওয়ারিস হলে তার গোসলের দায়িত্ব সব মুসলমানের। গোসল ছাড়া দাফন করা হলে জ্ঞাত সব মুসলমানই গুনাহগার হবে।
গোসল কে করাবে?
পুরুষ নারীর এবং নারী পুরুষের গোসল করাতে পারবে না। তবে প্রয়োজনে স্ত্রী স্বামীর গোসল করাতে পারবে; কিন্তু স্বামী স্ত্রীর গোসল করাতে পারবে না। অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক-বালিকাকে নারী-পুরুষ উভয়ই গোসল করাতে পারবে। মৃতের প্রিয়জনদেরই গোসল করানো উত্তম। প্রয়োজনে অন্যরাও করাতে পারবে।
গোসলের সুন্নাত তরিকা
প্রথমে মৃতকে চৌকি বা গোসলের খাটিয়ার ওপর শোয়াতে হয়। তারপর পরনের কাপড় সরিয়ে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশে একটা কাপড় রাখতে হয়। হাতে কাপড় পেঁচিয়ে পেশাব-পায়খানার জায়গা পরিষ্কার করতে হয়। অজু করাতে হয়। নাকে ও মুখে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তুলা ভিজিয়ে দাঁতের মাড়ি ও নাকের ভেতর মুছে দেওয়া জায়েজ।
গোসল ফরজ বা হায়েজ-নেফাস অবস্থায় মারা গেলে মুখে ও নাকে পানি পৌঁছানো জরুরি। পানি যেন ভেতরে না যায় সে জন্য নাক, মুখ ও কানে তুলা দিতে হয়, এরপর ধুতে হয়।
মৃতকে বাঁ দিকে কাত করে শুইয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত এমনভাবে তিনবার পানি ঢালতে হয়, যেন বাঁ কাত পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অনুরূপভাবে ডান কাত করে শুইয়ে তিনবার পানি ঢালতে হয়। এরপর মৃতকে কোনো কিছুর ওপর ঠেস দিয়ে বসিয়ে আস্তে আস্তে পেটে চাপ দিতে হয়। কোনো মল বেরোলে পরিষ্কার করে ধুয়ে দিতে হয়। এর জন্য পুনরায় অজু ও গোসল করানোর প্রয়োজন নেই। অতঃপর বাঁ কাত করে শুইয়ে কর্পূর মেশানো পানি ঢালতে হয় তিনবার। সব শেষে একটি কাপড় দিয়ে সারা শরীর মুছে দিতে হয়। (ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/২১৮)
বিজ্ঞ ডাক্তাররা বলে থাকেন—কারো শরীরে করোনাসহ কোনো ধরনের সংক্রামক ব্যাধি থাকলে মৃত্যুর চার-পাঁচ ঘণ্টা পর তার শরীর থেকে তা আর সংক্রমিত হয় না।
কাফনের হুকুম
মৃতকে কাফন পরানো ফরজে কিফায়া। গোসলের পর কাফন পরাতে হয়। যে ধরনের কাপড় পরা জীবদ্দশায় জায়েজ ছিল, সে ধরনের কাপড় দিয়ে কাফন পরানো জায়েজ। নতুন বা পুরনো সাদা কাপড় দিয়ে কাফন পরানো উত্তম। জীবদ্দশায় নিজের জন্য কাফনের কাপড়ের ব্যবস্থা করা জায়েজ। (ইমদাদুল ফাতাওয়া : ১/৫৬৩)
পুরুষের কাফনের কাপড়ের পরিমাণ
পুরুষের কাফনের কাপড় তিনটি হওয়া সুন্নত। তা হলো, সেলাইবিহীন জামা, ইজার ও চাদর। জামা হবে গলা থেকে পা পর্যন্ত, তাতে হাতা থাকবে না। ইজার হবে মাথা থেকে পা পর্যন্ত। চাদর হবে ইজারের চেয়ে এক হাত লম্বা। (ফাতহুল কাদির : ২/১১৭)
নারীর কাফনের কাপড়ের পরিমাণ
নারীর কাফনের কাপড় পাঁচটি হওয়া সুন্নাত। তা হলো, উপরোল্লিখিত তিনটি এবং উড়না ও সিনাবন্দ। উড়না হবে তিন হাত লম্বা। সিনাবন্দ হবে বগল থেকে হাঁটু পর্যন্ত। (দুররুল মুখতার : ৩/৯৫)
জানাজার নামাজের বিধান
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। এতে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা হয়। একাধিক মাইয়েতের জানাজা একসঙ্গে পড়া যায়। তা পড়ানোর বেশি হকদার মহল্লার ইমাম, এরপর ওলি। তবে ওলি মহল্লার ইমামের চেয়ে বেশি দ্বিনদার হলে তিনিই বেশি হকদার। কাউকে জানাজা পড়ানোর অসিয়ত করে গেলে তা কার্যকর করা জরুরি নয়। একান্ত প্রয়োজনে পুরুষের অনুপস্থিতিতে মহিলারাও জানাজা পড়াতে পারবেন। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/২২২, আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/২৩৮)
মাথাহীন লাশের বেশির ভাগ পাওয়া গেলে বা মাথাসহ অর্ধেক শরীর পাওয়া গেলে তার গোসল, কাফন ও জানাজা—সবই করতে হয়। আর মাথাহীন অর্ধেক বা তার চেয়ে কম অংশ পাওয়া গেলে কিছুই করতে হয় না। বরং কোনো কাপড়ে পেঁচিয়ে মাটির নিচে পুঁতে রাখতে হয়। আর মৃত নাস্তিক-মুরতাদদের গোসল-জানাজা ছাড়াই গর্ত করে মাটিচাপা দিতে হয়। (ফাতাওয়া শামি : ৩/৯২)
সতীত্ব রক্ষার্থে আত্মহত্যাকারিণী শহীদ নয়। তবে দুশ্চরিত্রের হাতে নিহত নারী শহীদের মর্যাদা লাভ করবে। আত্মহত্যাকারীকেও সাধারণ মুসলমানের নিয়মে গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফন করতে হয়। (আবু দাউদ, হাদিস ৪৭৭২)
জানাজার নামাজের ফরজ ও সুন্নাত
জানাজার নামাজের ফরজ দুটি। (ক) চারবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলা। (খ) দাঁড়ানো।
জানাজা সহিহ হওয়ার জন্য লাশ উপস্থিত থাকা শর্ত। জানাজার সুন্নত তিনটি। (ক) আল্লাহর হামদ ও সানা পড়া। (খ) নবীজি (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়া। (গ) মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা। (ইলাউস সুনান : ৮/১৭৪)
জানাজার নামাজ পড়ার পদ্ধতি
মৃতকে কিবলার দিকে জমিনে রাখতে হবে। ইমাম তার বক্ষ বরাবর দাঁড়াবেন। এরপর নিয়ত করতে হবে। নিয়ত মনে মনে করলেই যথেষ্ট। মুখে উচ্চারণ করা ভালো। নিয়ত এভাবে করা যায়—আমি জানাজার ফরজে কিফায়া নামাজ চার তাকবিরের সঙ্গে কিবলামুখী হয়ে এ ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে আদায় করছি, আল্লাহু আকবার।
তাকবির বলে উভয় হাত কান পর্যন্ত ওঠাতে হয় এবং নাভির নিচে হাত বেঁধে সানা পড়তে হয়। সানার মধ্যে ‘ওয়া তাআলা জাদ্দুকা’-এর পর ‘ওয়া জাল্লা সানাউকা’ও পড়তে হয়। এরপর তাকবির বলে দরুদে ইবরাহিম পড়তে হয়। এরপর তাকবির বলে নির্দিষ্ট দোয়া পড়তে হয়। চতুর্থ তাকবির বলে ডানে-বাঁয়ে সালাম ফেরাতে হয়।
ইমাম চতুর্থ তাকবির বলার পর সালাম ফেরানোর আগ মুহূর্তেও যদি কেউ তাকবির বলতে পারে, তাহলে সে জানাজা পেয়েছে। লাশ উঠিয়ে নেওয়ার আগে সানা, দরুদ ও দোয়াসহ তাকবির বলে সালাম ফেরাতে পারলে তা-ই করতে হবে। আর লাশ উঠিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা হলে শুধু তিন তাকবির বলে সালাম ফেরাতে হবে। (রদ্দুল মুহতার : ৩/১১৬)
মৃতকে দাফন করার হুকুম
মৃতকে দাফন করা ফরজে কিফায়া। একটি কবরে একজনকেই দাফন করা উচিত। প্রয়োজনে একাধিকও করা যায়। এ ক্ষেত্রে লাশগুলো পাশাপাশি রাখতে হয়, একটির ওপর আরেকটি রাখা যায় না। এক কবরে একাধিক পুরুষ লাশ দাফন করলে কিবলার দিকে প্রথমে উত্তম ব্যক্তিকে রাখতে হয়। পুরুষ, মহিলা ও বাচ্চা হলে কিবলার দিকে প্রথমে পুরুষ, তারপর বাচ্চা, এরপর মহিলাদের রাখতে হয়। প্রত্যেক দুই মুর্দার মাঝে মাটি দিয়ে আড়াল করতে হয়। কফিনে দাফন করা খেলাফে সুন্নত হওয়া সত্ত্বেও একান্ত প্রয়োজনে দাফন করলে তার ভেতরে চারদিকে মাটি ছিটিয়ে দিতে হয়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৬৬, ২২৭)
কবরে রাখার নিয়ম
কবরের দৈর্ঘ্য হবে মৃতের উচ্চতার সমান, গভীরতা তার অর্ধেক, প্রস্থ হবে দুই হাত। মৃতকে কবরে নামানোর আগে তাকে কবরের কিবলার দিকে রাখতে হয়। মৃতের মাথা উত্তর দিকে এবং পা দক্ষিণ দিকে থাকবে। কবরে নামানোর সময় ‘বিসমিল্লাহি আলা মিল্লাতি রাসুলিল্লাহ’ বলা মুস্তাহাব। মৃতকে কবরে ডান কাতে কিবলামুখী করে রাখা সুন্নাত, শুধু চেহারা কিবলামুখী করে দেওয়া জায়েজ হলেও খেলাফে সুন্নাত। (ফাতাওয়া হাক্কানিয়া : ৩/৪৪৬, মারাকিল ফালাহ : ২২০)
মাটি দেওয়ার পদ্ধতি
কবরে মাথার দিক থেকে মাটি দেওয়া মুস্তাহাব। দুই হাতে কবরে মাটি রাখা উত্তম। প্রথমবার মাটি দেওয়ার সময় বলতে হয়—‘মিনহা খালাকনাকুম’, দ্বিতীয়বার—‘ওয়া ফিহা নুঈদুকুম’ এবং তৃতীয়বার— ‘ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা’। কবরের মাটি পায়ের চাপে বসিয়ে দেওয়া মাকরুহ। দাফনের পর কিছুক্ষণ কবরের পাশে থেকে মৃতের জন্য দোয়া করা মুস্তাহাব। মাটি দেওয়ার পর কবরে পানি ছিটানো মুস্তাহাব। (রদ্দুল মুহতার : ৩/১৪৩, ১৫৪)
শোক পালনের সুন্নাত তরিকা
শোক পালনের সুন্নাত তরিকা হলো, দাফনের পরে বা আগে মৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকদের কাছে গিয়ে তাদের সান্ত্বনা দেওয়া, ধৈর্য ধারণের প্রতি উৎসাহিত করা এবং তার ও তাদের জন্য দোয়া করা। আর আয়োজন করে নীরবতা পালন করা বা কবরে ফুল দেওয়া ইহুদি, নাসারা ও হিন্দুদের সংস্কৃতি। (তিরমিজি : ১/২০৫, ফাতাওয়া রাহিমিয়া : ৭/৮৩)
- বেশিক্ষণ রোদে থাকলে যে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে
- গরমে মাথার তালু অতিরিক্ত ঘামছে? চুলের ক্ষতি এড়াবেন যেভাবে
- ম্যাঙ্গো রাইস
- পুরোনো স্মার্টফোন ৬ কাজে লাগাতে পারেন
- মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর সরকার নিয়ে গবেষণার আহ্বান
- গ্যাস খাতে বড় সংস্কার করবে পেট্রোবাংলা
- বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় কিরগিজস্তান
- নোয়াখালীর নতুন গ্যাস কূপে খনন কাজ শুরু
- কালকিনিতে নারী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা
- কুমিল্লায় সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে বিএসএফের গুলি
- দেশি-বিদেশি চক্র নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত করছে : কাদের
- বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ করতে আগ্রহী কাতার: সালমান এফ রহমান
- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডাকে এলো কোটি টাকার মাদকের পার্সেল, আটক ৩
- বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই
- বরিশালে চারজনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার
- বরিশালে চুরি হওয়া মোটরসাইকেল সহ ৬ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য আটক
- বরিশালে ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি
- কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন
- নিষেধাজ্ঞায় অভয়াশ্রমে মাছ শিকার ১৪ জেলের কারাদন্ড
- পটুয়াখালীতে ডায়রিয়া আক্রান্ত ১জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ১১৬
- ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ এর একজন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার
- ঢিলেঢালা পোশাক ও যথাসম্ভব ছায়ায় থাকুন: চিফ হিট অফিসার
- হবিগঞ্জের হাওরে দেড় হাজার কোটি টাকার বোরো ধান
- বাংলাদেশ-কুয়েত বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন
- সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন চলছে
- মাতারবাড়ি ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ
- হিটশকের ঝুঁকিতে বোরো ধান
- মাটি খুঁড়তেই মিললো রাইফেল, মাইন ও মর্টারশেল
- বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারিত্ব গঠন করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
- রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেছে কি না বুঝবেন যে লক্ষণে
- পিসিওএস থেকে মুক্তি পেতে নারীরা যা করবেন
- হিট স্ট্রোক এড়াতে কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
- বরিশালে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে অলোচনা সভা
- বুয়েটের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক, ছাত্র রাজনীতি চালু করতে হবে:সাদ্দম
- কমবয়সীদেরও কেন হয় হার্নিয়া, এর চিকিৎসা কী?
- শরীয়তপুরে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত
- শেখ হাসিনা সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ করে যাচ্ছেন
- সাধারণ জ্বর-সর্দি নাকি করোনা বুঝবেন যে লক্ষণে
- হার্টে হলদেটে ছোপ কেন হয়, কীসের লক্ষণ?
- এসির বাতাসে বাড়ছে ঠাণ্ডা-কাশি, ঘরোয়া উপায়ে সমাধান
- গোসাইরহাটে ৪০০ কেজি জাটকাসহ আটক ৪
- ইরানের নজিরবিহীন হামলা, নজর এখন ইসরায়েলের দিকে
- গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে খান এই ৫ পানীয়
- সমরাস্ত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- ইরানে সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করল ইসরায়েলি বিমান বাহিনী
- ছুটি শেষে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু বেনাপোল বন্দরে
- পায়ের পাতায় ব্যথা, হতে পারে যে রোগের লক্ষণ
- ছুটিতে সরকারি হাসপাতালের সেবায় সন্তুষ্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- গরমে কেন বেড়ে যায় অ্যাজমা? শ্বাসকষ্ট হলে কী করবেন?