• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

দেশের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৬ আগস্ট ২০২০  

আজ বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) থেকে উন্নতি হতে পারে দেশের বেশ কয়েকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতির। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নওগাঁ, নাটোর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর ও নারায়ণগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতিও আজ থেকে উন্নতি হতে পারে। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি সমতল থেকে কমতে শুরু করেছে; আজ আরো কমবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল থেকে কমছে। এটি আজ আরো কমবে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণে থাকা ১০১ স্টেশনের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি কমেছে ৩৫টি স্টেশনের, পানি বেড়েছে ৬২ স্টেশনের ও অপরিবতির্ত আছে চারটি স্টেশনের। বিপৎসীমার ওপরে এখনো পানি বইছে ১৫টি নদীর। বিপৎসীমার ওপরে স্টেশনের সংখ্যা ২৪।

এদিকে গোপালগঞ্জে বন্যার পানি বাড়ার কারণে মধুমতী নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে ওই সব এলাকার বাসিন্দারা। গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মধুমতী নদীতে পানি এখনো বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ও মধুমতী বিলরুট চ্যানেলে ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা গত বুধবার যথাক্রমে বিপদসীমার ৪০ ও ১০ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। এদিকে বন্যার পানিতে প্রতিদিনই গোপালগঞ্জের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী, মুকসুদপুর ও কোটালীপাড়ার কমপক্ষে ২৫ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পদ্মার প্রবল তোড়ে নদীর তলদেশ থেকে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক সরে যাওয়ায় শরীয়তপুরের সুরেশ্বর দরবার শরিফ রক্ষা বাঁধের প্রায় ৫৫ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে দরবার শরিফ ও আশপাশের লোকজন নতুন করে বাড়ি-ঘর হারানোর ভয়ে ভাঙন-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। ভাঙন রোধে ওই স্থানে সিসি ব্লক ও জিওব্যাগ ডাম্পিং করছে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভাঙন স্থানে শুকনো মৌসুমে বাঁধ নির্মাণে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে দুই দিন ধরে পদ্মার পানি আবারও বাড়তে শুরু করায় শরীয়তপুরের চার উপজেলার তিন লাখ পানিবন্দি মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পদ্মা নদীর সুরেশ্বর পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে গতকাল বুধবার সকালে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

সাগরে লঘুচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে বরিশাল নগরীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কীর্তনখোলা নদীর পানি বুধবার বিকেলে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে নদীর পানি উপচে নগরীর অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কীর্তনখোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি গতকাল বিকেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে।

সিরাজগঞ্জে গতকাল বিকেলেও যমুনার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ফলে সিরাজগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে জেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ।

ব্রহ্মপুত্রসহ গাইবান্ধার সব নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বুধবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার সমান্তরাল, ঘাঘট বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার, তিস্তা বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ও  করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বন্যা ও জলাবদ্ধতায় বিএডিসির ধানের জমি প্লাবিত হয়েছে। ডুবে যাওয়া বীজতলার পানি সেচের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখার নানা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে খামার কর্তৃপক্ষ।

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে  দুধকুমার, ফুলকুমার, কালজানী, সংকোশ, গঙ্গাধরসহ সব নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। দুধকুমার নদীর ভাঙনে বিলীনের পথে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকডাঙ্গা গ্রামটি। ভাঙনের মুখে পড়েছে ওই গ্রামের তিনটি মসজিদসহ কয়েক শ হেক্টর আবাদি জমি ও শতাধিক বসতবাড়ি।