দ্রোহের কাব্যিক উচ্চারণ
শরীয়তপুর বার্তা
প্রকাশিত: ৬ মার্চ ২০২১
৭ মার্চ বাঙালির ইতিহাসে স্বাধিকারবোধে উদ্দীপ্ত এক অনন্যসাধারণ দিন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্তির পর দুই যুগব্যাপী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালিরা মুক্তির যে মোহনায় উপনীত হয়েছিল, তাকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিল অবিস্মরণীয়। ৭ মার্চের ভাষণ শুধু একটি বক্তৃতাই নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অনন্য কালজয়ী দলিলও।
এই ভাষণের পর থেকেই সমগ্র জাতি পাকিস্তান রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ত্যাগ করে মানসিকভাবে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল। একটি ভাষণ যখন গোটা জাতিকে এমনভাবে আন্দোলিত, আলোড়িত, উজ্জীবিত এবং রাজনৈতিকভাবে সশস্ত্র করতে পারে, তখন সহজেই অনুমেয় সেই ভাষণের ভেতরের শক্তি কত অসীম হতে পারে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি আসলেই তেমন এক অসীম প্রভাব, তাৎপর্য ও শক্তি জাগানিয়া ভাষণ- এ নিয়ে কোনও সন্দেহ করার অবকাশ নেই।
বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে পাকিস্তানের শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস এবং বাঙালির সুস্পষ্ট অবস্থানের চমৎকার ব্যাখ্যা দিয়ে আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরেন। তুলে ধরেন দ্বন্দ্বের স্বরূপ। বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করে প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ দেন। ভাষণে তিনি প্রতিরোধ সংগ্রামের কলাকৌশল ও শত্রু মোকাবিলার কায়দা সম্পর্কেও দিকনির্দেশনা দেন, যা ছিল এক অপূর্ব ও নাতিদীর্ঘ উপস্থাপনা।
বঙ্গবন্ধুর ভাষণে বাঙালির প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। ৭ মার্চের ভাষণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। এমনকি, স্বাধীনতা ঘোষণার প্রশ্নে একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে যাতে চিহ্নিত না হন সে বিষয়ে সচেতন ছিলেন বঙ্গবন্ধু। অন্যদিকে শত্রুপক্ষকে এমন কোনও সুয়োগ দেয়া যাবে না যাতে তারা অপ্রস্তুত জনগণের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ করার সুয়োগ পেয়ে যায়, সে দিকেও নজর রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে। মানুষকে হত্যার প্রসঙ্গ এই ভাষণে বারবার উত্থাপিত হয়েছে এবং এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু এসব ঘটনাকে চিহ্নিত করেছিলেন আমার লোক, আমার মানুষকে হত্যা হিসেবে।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ স্বাধীনতাযুদ্ধের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনামাফিক উপস্থাপন। সেখানে যেমন চ্যালেঞ্জ আছে, তেমনি আছে বিজয়ের অগ্নিমন্ত্র ও কর্মকৌশল। ‘প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক। মনে রাখবা- রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।’-এ যেন সংগ্রামের শিল্প; নান্দনিকতা ও সৃজনশীলতায় তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা আছে। তবে তা বাস্তবায়নের জন্যই আবার বলেছেন, ‘তোমাদের কাছে অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো’। স্পষ্টত এই বক্তব্য পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ। বঙ্গবন্ধু মুক্তি পাগল মানুষকে জানালেন মুক্তির বারতা, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা’।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে মুক্তিপাগল বাঙালির মনে প্রত্যয়ের যে বীজ বপন করেছিলেন, বিশ্বের ইতিহাসেই এটি এক বিরল ঘটনা। এটি বাঙালীর গর্ব ও অহংকার। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি জাতির মাঝে বেঁচে থাকবে বাঙালির অন্যতম মেধাসম্পদ হিসেবে। রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় হিসেবে এ ভাষণের আবেদন কোনওদিন শেষ হয়ে যাবে না। ওই ভাষণ আমাদেরকে অনুপ্রেরণা যোগাবে। ওই ভাষণে নিহিত সত্য শিক্ষা যত বেশি গভীরে অনুধাবন করতে শিখবো ততই আমাদের মুক্তির পথ সহজতর হবে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি গণতান্ত্রিক চেতনার উজ্জ্বলতা, নিপীড়িত জাতির স্বাধিকার অর্জন এবং মুক্তিসংগ্রামের এক অনন্য দলিল। ঐ দলিল যুগযুগ ধরে সকল প্রজন্মের কাছে কালজয়ী প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। সেই সঙ্গে বাঙালি জাতি পাবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবিনাশী প্রেরণা।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ কেবল আমাদের জাতীয় ইতিহাসের একটি বিশেষ ঘটনা নয়, বিশ্ব ইতিহাসেও স্থান দখল করে আছে। আন্তর্জাতিকভাবে সেরার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রেরণাদায়ী ওই ভাষণ এখনও আলোচিত। এবার বিশ্বসেরা ভাষণ হিসেবে যুক্তরাজ্যের একটি প্রকাশনায় তা স্থান পেয়েছে। ইংরেজিতে অনুদিত ভাষণের বইটির নাম ‘উই শ্যাল ফাইট অন দ্য বিচেস’-দ্য স্পিচেস দ্যাট ইন্সপায়ার্ড হিস্টরি। বইটির সঙ্কলক - জ্যাকব এফ ফিল্ড।
খৃস্টপূর্ব ৪৩১ সাল থেকে ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সেরাভাষণ নিয়ে ২২৩ পৃষ্ঠার বই এটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার উইনস্টন চার্চিলের ভাষণ থেকে নেয়া শিরোনামের এই সঙ্কলন গ্রন্থের শেষ ভাষণটি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের ‘টিয়ারস ডাউন ওয়াল’। বইটির ২০১ পৃষ্ঠায় ‘দ্য স্ট্রাগল দিস টাইম ইজ ট্য স্ট্রাগল ফর ইন্ডিপেন্ডেন্স’ শিরোনামে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি।
একটি ভাষণ কীভাবে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে, কীভাবে দেশমাতৃকার স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন বাজী রেখে নেমে পড়ার প্রেরণা জোগায়, কীভাবে একটি ভাষণ লক্ষ লক্ষ মানুষকে মোহাবিষ্ট করে রাখতে পারে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ তার উজ্জ্বল উদাহরণ। তাই একথা বলতে দ্বিধা নেই যে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ-ই স্বাধীনতার প্রকৃত 'ঘোষণা'।
স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল মা কিংবা প্রিয়তমার আঁচলের মতো একটি পতাকা! সে কারণেই বঙ্গবন্ধু আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনে জুলিয়াস সিজারের অভিব্যক্তির মতোই- “…constant as the northern star”। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের ধ্রুবতারা।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, লোক প্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
- পিসিওএস থেকে মুক্তি পেতে নারীরা যা করবেন
- পাকা বেদানা খুঁজে কিনবেন যে কৌশলে
- ইফতারে রাখুন স্বাস্থ্যকর চিকেন স্যান্ডউইচ
- মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখছে এআই!
- শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালুর অপেক্ষা
- স্থলভাগে গ্যাস উত্তোলন কার্যক্রম, যুক্ত হচ্ছে তিন বিদেশী কোম্পানি
- পাল্টে যাচ্ছে রাজধানীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা
- এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
- শিল্পে দ্রুত ইভিসি মিটার দেবে তিতাস
- শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়ার নির্দেশ
- অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে যত পরিকল্পনা
- বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও ক্ষমতা পাচ্ছে সরকার
- ফার্স্টলুকে পূর্বাভাস, গ্যাংস্টার রূপে আসছেন শাকিব খান
- থামছে না অপহরণ, মুক্তিপণ দিয়ে ঘরে ফিরলেন আরও ১০ জন
- দুস্থ নারীদের সরকারি চাল পাচার, ২ ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
- দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের খাবার
- সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে ভেসে আসছে বিকট শব্দ, সীমান্তে আতঙ্ক
- লিচু বাগানে মিললো ১৮ কেজি গাঁজা
- বিচারপতি ইনায়েতুর রহিমের মায়ের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
- মঠবাড়িয়ায় ৮‘শ ৯৬ টি সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে টিসিবি পণ্য বিক্রয়
- মাদারীপুরে সাজ্জাপ্রাপ্ত দুই আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩
- বরিশালে রমজান উপলক্ষ্যে সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমান ডিম বিক্রয়
- বরিশালে বিপুল পরিমান কারেন্ট জাল ও মাছ সহ আটক ৮০
- উজিরপুরে এক কেজি গাঁজাসহ মাদক সম্রাট গ্রেফতার
- কথা না শোনায় স্বামীকে নিয়ে পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা করেন রুনা
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৩ নির্দেশনা
- প্রধানমন্ত্রীর গাড়ীবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
- কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন ভুটানের রাজা
- কুড়িগ্রাম হবে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে
- রোজার নিয়ত কী, এটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
- এ বছর ফিতরার হার নির্ধারণ
- বরিশালে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে অলোচনা সভা
- শরীয়তপুরে প্রথমবার মৌরি চাষ
- শরীয়তপুরে নদী থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার
- নতুন নতুন অপরাধ দমনে পুলিশকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ
- শরীয়তপুরে কাভার্ড ভ্যান-নছিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৬
- বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি
- রোজার মাসে সুস্থ থাকতে হৃদরোগীরা যা করবেন
- জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উপলক্ষে শরীয়তপুরে নৌ র্যালি অনুষ্ঠিত
- চিকিৎসকের অবহেলায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ
- শরীয়তপুরে মানব পাচার হতে উদ্ধারকৃত ৫০০ জনের কর্মসংস্থান হবে
- র্যাব সব সময় নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
- চিকেন পক্স হলে যা করবেন, যা করবেন না
- শরীয়তপুরে জাতীয় পাট দিবস পালিত
- উপজেলা নির্বাচনও আমরা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করবো
- শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইতিহাস গড়তে নামছে শান্তবাহিনী
- মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্য আটক
- বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় শোক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে মোদীর চিঠি
- পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে ধূমপান