• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

‘ধর্ষকের পক্ষে’ বরিশাল ছাত্রদল!

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২০  

ধর্ষণে অভিযুক্ত নেতার পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল ছাত্রদলের বিরুদ্ধে। ছাত্রদলের ইউনিয়ন সভাপতির দায়িত্বে থাকা এক নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ধর্ষণের শিকার তরুণীকে আইনি পদক্ষেপ না নিতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল জেলা ছাত্রদল সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠুর বিরুদ্ধে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চর এককরিয়া ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি মামুন অর রশীদ বিয়ের প্রলোভনে এক তরুণীকে ধর্ষণ করেন। এই ঘটনায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর নির্যাতিত তরুণী বাদী হয়ে ঢাকার বাড্ডা থানায় মামলা দায়ের করেন। বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সামসুল ইসলাম মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ, এক বছর আগে মামুন তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। দুই সন্তানের জনক মামুন দীর্ঘদিন মোবাইল ফোনে কথা বলার পর গত ১ জুলাই তরুণীর ঢাকার কদমতলী এলাকায় গিয়ে দেখা করেন। এ সময় ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে ৬৮ নম্বর মধ্য বাড্ডা, বেপারী পাড়ার আব্দুল মান্নানের বাড়ির পঞ্চম তলায় মামুনের এক বন্ধুর ফ্লাটে নিয়ে যান। তাদের দুজনকে বাসায় রেখে বন্ধু তার কর্মস্থলে গেলে ফাঁকা বাসায় ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন মামুন। পরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ওই দিন বিকেলে ওই তরুণীকে তার বাসার কাছাকাছি পৌঁছে দিয়ে সটকে পড়েন মামুন। তারপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ করেননি। দুইমাস অপেক্ষা করে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বাড্ডা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী তরুণী।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আসামির পক্ষ হয়ে বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতা আমাকে ফোন করেছিলেন।’

ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ‘আমি রাজনীতি করিও না, বুঝিও না। কিন্তু আমি একজন নারী, প্রতারিত হয়ে ধর্ষণের শিকার হলাম। তার পক্ষে কেউ কোনো একটি শব্দ উচ্চারণ করল না। উল্টো মামলা তুলে নিতে বরিশালের ছাত্রদল সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠু আমাকে ফোন করে হুমকি দিচ্ছেন।’

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার তরুণী ঢাকায় মামলা দায়েরের পর বরিশাল জেলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদল নেতাদের কাছে ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি মামুন অর রশীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে বিচার দাবি করে অভিযোগ দেন। এ সময় মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সালাউদ্দিন পিপলু তরুণীকে জানিয়েছেন, তাদের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ। তাই ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।

জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, ‘উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ। আর ইউনিয়ন কমিটির নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা জেলা কমিটি নিতে পারে না।’

ধর্ষকের পক্ষে ছাত্রদল নয়, এমন দাবি করে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি তারেক আল ইমরান বলেন, ‘জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পক্ষালম্বনের কারণে ধর্ষণে অভিযুক্ত ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।’

সব অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রদল সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠু বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। কোনো নারীকে হুমকি দেইনি।’