• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

পাপিয়ার অন্ধকার রাজ্যের পর্দা ফাঁস

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২০  

বহুল আলোচিত নরসিংদী জেলার যুবনেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া নিজের নানা অপকর্মের সাথে কাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে তার প্রাথমিক তথ্য ফাঁস করেছে। সূত্র বলছে, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া তার মাফিয়া জীবনের সাথে যারা জড়িত বিশেষ করে ওয়েস্টিনের ডেরায় কাদের আনাগোনা ছিল তাদের নাম বলেছে এই নারী মাফিয়া ডন।

এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি র‌্যাবের হাতে বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া গ্রেপ্তার হবার পর ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডের শুরুতে অনেক হম্বিতম্বি করলেও ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে শুরু করে পাপিয়ার সাথে সম্পৃক্ত অন্যদের বিষয়টি।

সূত্র বলছে, রাজধানীর অভিজাত হোটেল ওয়েস্টিনের ডেরাতে যাদের যাতায়াত ছিল তাদের মধ্যে দেশের অনেক প্রভাবশালী পত্রিকার সম্পাদক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক নেতা ও প্রতাপশালী রাজনীতিবিদের নাম উঠে এসেছে।

পাপিয়ার ভাষ্যমতে, তার ওয়েস্টিনের ডেরায় যেসব রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী নেতা যাতায়াত করতো তাদের মধ্যে- নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, সাবেক সাংসদ ও বিএনপি নেতা জয়নুল আবেদিন ফারুক, চসিক বিএনপি মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, সাবেক সাংসদ ও বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান সারোয়ার, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জোনায়েদ সাকি, ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন, ব্যবসায়ী নেতা মোহাম্মদ আলী, বিএনপিপন্থী টকশোবীদ সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্ত, সাবেক সাংসদ ও বিএনপি নেতা খায়রুল কবির, বিএনপির বর্তমান সাংসদ হারুনুর রশীদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আমানুল্লাহ আমান, খিলগাঁও থানা বিএনপি নেতা মাসুদ চৌধুরী, বিএনপি নেতা ইনাম আহমেদ চৌধুরী অন্যতম। এছাড়াও আরো কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জাতীয় রাজনীতিবিদের নামও বলেছে মাফিয়া ডন পাপিয়া।

জানা যায়, তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সাথে ১৯৯৯ সাল থেকেই এক ক্লাবে পরিচয় হয় শামিমা নূর পাপিয়ার। সেখান থেকেই মামুনের হাত ধরে শামিমা নূর পাপিয়ার তারেক রহমানের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। হাওয়া ভবনে প্রায়শই রাত্রিযাপন করতেন এই পাপিয়া পিউ।

সূত্র বলছে, পাপিয়ার মোবাইল ফোনগুলোতে অনেক ভিআইপির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের তথ্য পায় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। বিশেষ করে অতীত জীবনে তারেক রহমান ও গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সাথে সখ্যতার বিষয়টি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারেক রহমানের মিশন বাস্তবায়ন করার জন্যই এই পাপিয়াকে সুকৌশলে যুব মহিলা লীগে প্রবেশ করায় বিএনপি।

পাপিয়ার মোবাইলের কললিস্টে তারেকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হয় বিএনপির এমন ২১ জন শীর্ষ নেতার মোবাইল নাম্বার পাওয়া গেছে। পাপিয়ার সাথে বিএনপির এমন শীর্ষ নেতাদের যোগাযোগ কি শুধুই অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য নাকি এর গভীরে রয়েছে কোন গোপন ষড়যন্ত্র এই প্রশ্নের উত্তর বের করাই এখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।