• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

পিকে হালদারের ‘বান্ধবী’ অবন্তিকা তিনদিনের রিমান্ডে

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২১  

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে করা দুদকের মামলায় রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) ‘বান্ধবী’ অবন্তিকা বড়ালকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত শুনানি শেষে এই রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

এর আগে অবান্তিকা বড়ালকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন তার তিনদিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। এ সময় অবন্তিকার জামিন চেয়ে আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।

অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অবন্তিকা বড়ালের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বুধবার দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেফতার করে দুদক কার্যালয়ে নিয়ে আসে।

এদিকে একই মামলায় গত ৪ জানুয়ারি রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে পিকে হালদারের সহকারী শংখ বেপারীকে গ্রেফতার করে দুদক। এরপর আদালত তারও তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ২৯ ডিসেম্বর পিকে হালদারের রাজধানীর ধানমন্ডির দুটি ফ্ল্যাট ও রূপগঞ্জের প্রায় ছয় একর জমি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। গত ২ ডিসেম্বর জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় পিকে হালদারের (প্রশান্ত কুমার হালদার) বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত আসামি পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

কানাডায় অবস্থানকারী পিকে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা, ফাস ফাইন্যান্স থেকে দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং থেকে তিন হাজার কোটি টাকা এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

গত বছর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অবৈধ ক্যাসিনো মালিকদের সম্পদের তদন্ত শুরু করলে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। গত ৮ জানুয়ারি দুদক অজ্ঞাত সূত্র থেকে প্রায় ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করে।

পিকে হালদার নিরাপদে দেশে ফিরে যাতে আদালতের হেফাজতে যেতে পারেন সেজন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর আবেদন করে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল)। আবেদনে বলা হয়, ২৫ অক্টোবর তিনি দেশে ফিরতে চান। এই আবেদনে হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ গত ২১ অক্টোবর এক আদেশে দেশের বিমানবন্দরে পা রাখা মাত্র পিকে হালদারকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। কিন্তু পিকে হালদার নির্ধারিত দিনে দেশে ফেরেননি।

হাইকোর্ট গত ১৯ জানুয়ারি এক আদেশে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, এমডি, বহুল আলোচিত পিকে হালদারসহ ১৩ পরিচালকের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দ এবং সব সম্পদ ক্রোক করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে পিকে হালদারের মা, স্ত্রী, ভাইসহ ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দ এবং সব সম্পদ ক্রোক করার নির্দেশ দেয়া হয়। পিকে হালদারসহ এই ২০ জনের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং তাদের গত পাঁচ বছরের আয়কর রিটার্ন হাইকোর্টে দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের সাতজন আমানতকারীর এক আবেদনে এই আদেশ দেন হাইকোর্টের কম্পানি আদালতের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আইএলএফএসএলের দুই পরিচালক আপিল বিভাগে আবেদন করলেও আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।