• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দ পেয়ে মর্জিনার মুখে হাসির ঝিলিক

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৯ জানুয়ারি ২০২১  

আমরা ভূমিহীন গরিব মানুষ। আমরা কী কোনোদিন আয় রোজগার করে বাড়িঘর করতে পারতাম। কোনোদিন আশাও করিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে একটা পাকা ঘর দেবেন। প্রধানমন্ত্রী এ গরিবের দিকে তাকিয়েছেন। আল্লাহ তাকে সুস্থ রাখুক। তিনি যেন অনেক দিন বেঁচে থাকেন। 

এভাবেই কথাগুলো বলেন জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের পারপাড়া গ্রামের মর্জিনা খাতুন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগসহনীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সেমিপাকা ঘর বরাদ্দ পেয়ে মুখে হাসির ঝিলিক নিয়ে মর্জিনা খাতুন এভাবেই তার অনুভূতি প্রকাশ করেন। 

মর্জিনার স্বামী ভূমিহীন পাপ্পু চায়ের দোকানের শ্রমিক। তাদের রয়েছে চার বছরের ছেলে মাহিন। দীর্ঘদিন ধরেই ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রিত থেকে তাদের অনেক কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে। 

একই গ্রামের অটোভ্যানচালক ভূমিহীন ইসরাফিলের স্ত্রী মনিরা খাতুন, ভূমিহীন মিতু, স্বামী পরিত্যক্তা মিনা খাতুনসহ আটটি গৃহহীন অসহায় পরিবারের সবাই ঘর বরাদ্দ পেয়ে অনেক খুশি। 

পারপাড়া গ্রামে নির্মাণ করা হচ্ছে আটটি সেমিপাকা ঘর। নির্মাণ কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। দিনের বেলা ঘরনির্মাণ কাজ চলা অবস্থায় বরাদ্দ পাওয়া ভূমিহীন পরিবারের সদস্যরা এসে তীর্থের কাকের মতো বসে থাকেন প্রকল্প এলাকায়। তাদের চোখেমুখে একটাই স্বপ্ন, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার নতুন ঘরের মালিক হতে যাচ্ছেন। শুরু করতে যাচ্ছেন শান্তিতে বসবাসের নতুন জীবন।

সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৩টি ইউনিয়নে ৪০০টি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। দুই শতাংশ খাস জমির ওপর ১৯ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৯ ফুট প্রস্থের দুই কক্ষবিশিষ্ট প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা করে। প্রতিটি ঘরে রান্নাঘর, টয়লেট ও অন্যান্য সুবিধা থাকছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও গৃহনির্মাণ নীতিমালা অনুযায়ী আগামী ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের আগেই সদরের সবগুলো ঘর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নে সদরের গৃহনির্মাণ কমিটির সভাপতি ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিনের ব্যস্ত সময় কাটছে। এই ঘর নির্মাণে সরাসরি তদারকি করতে তিনি প্রতিদিনই কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে নির্মাণ কাজ পরিদর্শন ও দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।

সদরের ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও গৃহনির্মাণ নীতিমালা অনুযায়ী চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভালোমতো ঘরনির্মাণ কাজ শেষ করে অসহায় পরিবারগুলোর মাঝে ঘর বুঝিয়ে দিতে পারি। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্প উদ্বোধনের আগেই সদরের ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারব।

জামালপুরের ডিসি মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী যাদের ভূমি নেই, তাদের জন্য এই ঘরের ব্যবস্থা করেছেন। জামালপুর জেলায় মোট ১ হাজার ৪৭৮টি ঘর নির্মাণ কাজ খুব দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এরই মধ্যে ঘর নির্মাণ কাজের প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি ঘরের নির্মাণকাজের গুণগতমান যাতে বজায় থাকে এরজন্য আমি নিজে এবং ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সার্বক্ষণিক পরিদর্শন ও নজরদারি করছি।

জামালপুর জেলার সাতটি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৪৭৮টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪০০টি, মেলান্দহে ২৬০টি, ইসলামপুরে ৮৮টি, মাদারগঞ্জে ১২১টি, বকশীগঞ্জে ১৪২টি, সরিষাবাড়ীতে ২৯৫ ও  দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ১৭২টি ঘর নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।