• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউতে জিএসপি সুবিধা পেতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে পাশে আছি: প্রধানমন্ত্রী জনসমর্থন থাকায় আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব রোহিঙ্গাদের জন্য বৃহত্তর তহবিল সংগ্রহে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান লেখাপড়ার নামে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি না করার আহ্বান বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি বিশ্বে অনেক বাজার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে: প্রধানমন্ত্রী ট্রাস্ট করে ভাষা সংরক্ষণ-উন্নয়নের উদ্যোগ, হচ্ছে আইন ‘কিডনি রোগীদের চিকিৎসায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার’ ইফতার পার্টি না করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর

ভেদরগঞ্জে পৌনে এক কোটি টাকার মধু আহরণের সম্ভাবনা

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের কয়েক বছর আগে শুরু করা মৌচাষ থেকে এ বছর ৫০ লক্ষ টাকার মধু অহরনের জন্য উপজেলা বিভিন্ন ফসলী জমির পাশে ৩ সহ¯্রাধিক মৌবক্স বসিয়েছে চাষীরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে চলতি মৌশুমে মধু চাষ করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখছে ভেদরগঞ্জের চরাঞ্চলে আসা বানিজ্যিক মৌ চাষীরা।

শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরকুমারিয়া, আর্শিনগর, ডিএম খালি, সখিপুর ও উত্তর তারাবুনিয়ার ফসলি জমির পাশে মৌ বাক্স স্থাপন করে মৌ-মাছির মাধ্যমে সরিষা,কালোজিরা ও ধনিয়াসহ বিভিন্ন ফসলের ফুল থেকে সংগ্রহ করা মধু বিক্রিকরে প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখছে। তবে খরচ বাদে মৌ চাষির প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা লাভ করতে পারবেন বলে ধারণা করছেন। এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, এ মৌ চাষের মাধ্যমে তাদের ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাটি মধু পান তারা।

সাতক্ষীরা থেকে আসা মৌ চাষী রাকিবুল জানান আমার চাচা শহিদুলের নেতৃত্বে আমরা ২টি দলে আর্শিনগরে আছি।  আমরা এ ইউনিয়নের আকন কান্দি ও মুন্সি কান্দিতে  মাঠের পাশে ৩৫০টি  মৌ বাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহের চেষ্টা করছি।
পরিচর্যা ও  মৌমাছি দেখা শোনা পাশেই  টোং তৈরি করে সেখানে খাওয়া-দাওয়া ও রাত্রী যাপন করছি । শীত মৌসুমের শুরু থেকে ৪ মাস আমরা এ এলাকায় মধু সংগ্রহ করি। প্রতিটি  মৌ বাক্সের মধ্যে একটি করে রানী মৌমাছির সাথে রয়েছে হাজার হাজার মৌমাছি।  মৌমাছি গুলো প্রায় চার কিলোমিটার দূরে গিয়ে মধু সংগ্রহ করে আনতে পারে। ভরা মৌসুমে মাসে একটি মৌ বাক্স থেকে ৩  থেকে ৪ বারে ২ থেকে  কেজি পর্যন্ত মধু পাওয়া যায়। এ মধু খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মধু ৪ থেকে ৬শ টাকায় বিক্রি করি আমরা।

ভেদরগঞ্জের ডিএম খালির মাদবর কান্দ্রিতে রওশন আলী তরফদারের নেতৃত্বে ২৩০ টি মৌ বক্স বসানো হয়েছে তিনি বলেন, আমরা শরীয়তপুরে জাজিরা ও ভেদরগঞ্জের বিভিন্নস্থানে এভাবে বাক্স বসিয়ে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করি। মৌমাছি সরিষা, ধনে, কালোজিরা, লিচু, বড়ই ফুলসহ বিভিন্ন ফুল থেকে মধু আহরণ করে। প্রথম দফায় একবার মধু ভেঙ্গেছি এতে যে পরিমান মধু পেয়েছি আশা করছি আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সবাই মিলে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা মধু আহরন করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ। 

আর্শিনগর ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ কায়সার আহমেদ রানা বলেন, মৌ চাষের মাধ্যমে চাষিরা যেমনি বাড়তি আয় করেন, তেমনি মৌ মাছির পরাগায়নের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন ১০ থেকে ১৫ ভাগ বৃদ্ধি পায়।

ফলে দুইদিকে তারা লাভবান হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের এসএমই কৃষক ফারুক মাঝির মাধ্যমে এ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ১০টি বাক্স দিয়ে আমরা মৌমাছি চাষ ও সরিষার পরাগায়ন সাথে মধু সংগ্রহের কাজ শুরু করে ছিলাম বর্তমানে সে মৌচাষ সম্প্রসারণ করে ৩০ টি বক্সে উন্নত করেছে। তার দেখো দেখি সাতক্ষীরা, জামালপুর ও ফরিদপুর থেকে ২২ জন খামারী এসে প্রায় ৩১ শতাধিক মৌ বক্স বসিয়েছে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের মুখপাত্র মামুনুর রশিদ হাসিব জানান, ভেদরগঞ্জ উপজেলায় এ বছর ২ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমিতে সরিষার, ৯৬৩ হেক্টর জমিতে ধনিয়া ও ১ হাজার ২৬৩ হেক্টর জমিতে কালোজিরার চাষ হয়েছে। আমাদের উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফাতেমা ইসলামের আন্তরিক সহযোগিতায় এবছর উপজেলা নারায়নপুর, চরকুমারিয়া, আর্শিনগর, চরসেন্সাস, সখিপুর, ডিএম খালি, উত্তর তারাবুনিয়ায় ২২জন খামারি ৩ হাজার ১শটি মৌবাক্স বসিয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। আবহাওয়া ভাল থাকলে চলতি বছরে আমাদের উপজেলায় প্রায় পৌনে এক কোটি টাকার মধু আহরন সম্ভব হবে।

স্থানীয় চরকুমারিয়া ইউনিয়র পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হক মোল্যা বলেন, আমি সুযোগ পেলেই বাক্সে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করা দেখতে আসি। আমার এলাকার চাষীরা বলেন, মৌ বাক্সে মধু চাষের কারনে তাদের ফসলের উৎপাদন ভালো হচ্ছে এবং এলাকাবাসী খাঁটি মধু পাচ্ছে।