• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

ভয়ঙ্কর সড়ক দুর্ঘটনার শিকার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০২০  

করোনার কারণে টানা চার মাস কোনো নাটকের শুটিং করেননি অভিনেত্রী শাহানাজ খুশি। দীর্ঘ বিরতীর পর সম্প্রতি শুটিংয়ে ফিরতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছেন তিনি। অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন এই অভিনেত্রী।

খুশি জানান, বৃহস্পতিবার ঈদের নাটক ‘নসু ভিলেন’-এর দৃশ্যায়নের জন্য পুবাইল যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। মাজুখান বাজারের কাছে তখন গাড়িতে একাই ছিলেন খুশি। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও মানসিকভাবে দারুণ বিপর্যস্ত তিনি। অনেকটাই যেন কোমার মধ্যে রয়েছেন বলে জানান এই অভিনেত্রী। তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিপর্যস্ত হয়ে আছে তার স্বামী বৃন্দাবন দাস ও দুই পুত্র।

তিনি জানান, গাজীপুর যাবার পথে তার গাড়িটির উপর চড়াও হয় একটি বিশাল কার্গো। এতে করে তার গাড়ি কাগজের মতো ধুমড়ে মুচরে যায়। নির্ঘাৎ স্রষ্টার অশেষ কৃপায় তিনি ও তার চালক প্রাণে বেঁচেছেন।

পুরো বিষয়টি নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির ছবিসব ফেসবুকে পোস্ট দেন শাহানাজ খুশি। তিনি শনিবার সকালে লেখেন, ‌‌‌‌চার মাস পর করোনার মধ্যে প্রথম শুটিংয়ে যাচ্ছি, খারাপ লাগা নিয়ে পরশু এমন একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। নাহ, আমাকে অদৃশ্য করোনা এখনো ছোঁয়নি, আমাকে মৃত্যুর দুয়ারে নিয়েছিল! এই গাড়ির মধ্যে আমি ছিলাম! একেবারেই অলৌকিক কিছু না হলে আমার বাঁচার কথা নয়! আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমি বেঁচে আছি, ভালো আছি!”

আরও বলেন, ‌'কত বড় অরাজকতার মধ্যে আমরা বাস করছি, তা ভুক্তভোগী সবাই জানি। আজ স্বাস্থ্যখাত সামনে এসেছে বলে সাহেদদের মতো অসংখ্য অসংখ্য কালপ্রিট সামনে আসছে, পরিবহন খাতটা দীর্ঘকাল হলোই এমন! প্রতিদিন এমন অসংখ্য দুর্ঘটনায় শেষ হচ্ছে হাজারো পরিবার, খালি হচ্ছে মায়ের কোল, সন্তানের বুক! কিন্তু কোন প্রতিকার নেই। স্বাস্থ্যখাতের চেয়েও আরও দুর্গম, অন্ধকার, অন্যায়ে ঠাসা এ পরিবহনখাত!'

খুশি জানান, তার গাড়িকে পেছনে ঠেলে নিয়ে থেমে থাকা একটি ট্রাকের সঙ্গে চেপে ধরে কার্গোবাহী ট্রাক। সেটি চালাচ্ছিল হেলপার, যার আনুমানিক বয়স ১৬-১৭ বছর।

ড্রাইভারের প্রসঙ্গে উল্লেখ করে বলেন,'গুরুত্বপুর্ণ কথা হলো, ওনার কোন লাইসেন্স নাই! এমন নাকি চলে, কোন সমস্যা হয় না! আমি আসলে পুরো সেন্সে ছিলাম না, কিছু কিছু কথা আমি ভুলতে পারছি না! পুবাইল পুলিশ, শুটিংয়ের ছেলেরা, আমার বাসার মানুষ সবাই চলে এসেছে। আমি তখন থরকম্প একটা মাংসপিন্ড কেবল। কেউ একজন ক্ষতিপুরণের কথা বলায় ড্রাইভার বলছে, মানুষ মাইরালায় ট্যাহা লাগে না, বাঁইচ্যা আছে, তাও ট্যাহা লাগবো!'

খুশি আরও লেখেন, ‘আমি কাল থেকে অপ্রকৃতস্থ প্রায়! খেতে পারছি না, চোখ বন্ধ করতে পারছি না। আমার ছেলে দুইটা এ ভয়াবহতায় এলোমেলো। বাচ্চা ছেলেটা রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়েছে! আমি কিছু বুঝতে চাই না। আমি আমার দেশের প্রতি, আইনের প্রতি শতভাগ শ্রদ্ধাশীল এবং দায়িত্ববান।আমার এবং আমার পরিবারের দ্বারা দেশের বিন্দু পরিমাণ সম্মান ক্ষুন্ন হয় নাই। বরং দেশের মর্যাদা রক্ষায় আমরা বদ্ধ পরিকর। আমি শুধু আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই।

জীবনে এত যুদ্ধ, এত শিক্ষার পর একজন অশিক্ষিত নেশাগ্রস্ত লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভারের হাতে জীবন দিতে রাজী নই। দয়া করে আইন সংশোধন করে আমাদের জীবনকে নিরাপদ করুন। আমি আমার সন্তানকে দায়িত্বপূর্ণ নাগরিক করার দায়িত্বভার নিষ্ঠার সাথে পালন করছি। আপনারা আমাদের জীবন ও পথকে নিরাপদ করুন।’