• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

মহাজাগতিক এক ঘটনার সন্ধান, জন্ম দিয়েছে নতুন ধাঁধার

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২০  

বিরাট আকারের একটি ব্ল্যাকহোল, সে যেন গিলে নিচ্ছে নিজের থেকে অনেক ছোট একটি মহাজাগতিক বস্তুকে। মহাকর্ষীয় তরঙ্গের সূত্র ধরে আজ থেকে ৮০ কোটি বছর আগে ঘটে যাওয়া এমনই একটি মহাজাগতিক ঘটনার সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। যে আবিষ্কার বিজ্ঞানী মহলে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে, তেমনই জন্ম দিয়েছে এক নতুন ধাঁধারও।

ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ব্ল্য়াক হোলটির ভর সূর্যের ২৩ গুণ। সে যাকে গিলে নিয়েছে তার ভর সূর্যের ভরের আড়াই থেকে তিন গুণ বেশি। কাকে গিলল সে ব্ল্যাকহোল? আরেকটি ব্ল্যাকহোলকে নাকি কোনও নিউট্রন স্টারকে? উত্তর যাই হোক না-কেন, তা খুলে দিতে পারে বিজ্ঞানের নতুন এক দিগন্ত!
এ আবিষ্কার ও মহাজাগতিক রহস্যের জন্ম নিয়েছে যে গবেষণা তাতে বাঙালির অবদানও কম নেই। গবেষক দলের প্রথম সারিতেই রয়েছেন জার্মানির অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী বঙ্গসন্তান অভিরূপ ঘোষ।

গবেষণায় যুক্ত রয়েছেন আইআইটি গাঁধীনগরের আনন্দ সেনগুপ্ত, সৌমেন রায়, বেঙ্গালুরুর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিয়োরেটিক্যাল সায়েন্সেসের অপ্রতিম গঙ্গোপাধ্যায়, লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্চিষ্মান ঘোষ, নেদারল্যান্ডসের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর সাবঅ্যাটমিক ফিজ়িক্সের অনুরাধা সমাজদারও।

প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী অভিরূপ জানান, গত বছরের আগস্টে লাইগো-ভার্গো ডিটেক্টরে ধরা পড়েছিল একটি মহাকর্ষীয় তরঙ্গ। তা বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে পৃথিবী থেকে ৮০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে ঘটেছিল ওই ঘটনা। অর্থাৎ আলোর গতিবেগ ও আলোকবর্ষের হিসেব ধরলে ঘটনার সময়কাল ৮০ কোটি বছর আগে। গত বছর ধরা পড়ার সময় ডিটেক্টরে প্রায় ১০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল ওই তরঙ্গ।

কোনও তারার জীবদ্দশা শেষ হওয়ার পরে যে অতি-ঘনত্ববিশিষ্ট পদার্থ পড়ে থাকে তাকেই বলা হয় নিউট্রন স্টার। অভিরূপ জানান, সূর্যের থেকে আড়াই-তিন গুণ বেশি ভরবিশিষ্ট নিউট্রন স্টার এর আগে দেখা যায়নি। তাই ছোট মাপের বস্তুটি নিউট্রন স্টার হলে বলতে হবে, এটাই এ যাবৎকালের উচ্চ-ভরসম্পন্ন নিউট্রন স্টার।

আবার যদি সেটা কোনও ব্ল্যাকহোল হলে তা হলে বলতে হবে এত ছোট মাপের ব্ল্যাকহোল আগে দেখা যায়নি।

বিজ্ঞানীদের মতে, ওই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ দুটি ব্ল্যাকহোলের সংযুক্তির ফলেও উৎপন্ন হতে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে এটাও বলতে হবে এটা সত্যিই এক বিস্ময়কর ঘটনা যেখানে পরস্পর সংযুক্ত হওয়া দুটি ভিন্ন বস্তু একটি আরেকটির থেকে প্রায় ৯ গুণ ভারী!

মহাকর্ষীয় তরঙ্গের প্রথম ধারণা দিয়েছিলেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। তাঁর সঙ্গে অবশ্য বঙ্গসন্তানদেরও যোগাযোগ সুবিদিত। বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সঙ্গে যৌথ নামাঙ্কিত সমীকরণ কিংবা রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তার দীর্ঘ দার্শনিক আলাপচারিতা।

এবার সেই মহাকর্ষীয় তরঙ্গের গবেষণায় নতুন দিক দেখাচ্ছেন অভিরূপ, আনন্দ, অপ্রতিম, অনুরাধা, অর্চিষ্মানেরা।