• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

মানুষের রক্ত ও জীবনের যে মর্যাদা দিয়েছে ইসলাম

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২০  

অনন্য সুন্দর এক জীবন ব্যবস্থার নাম ইসলাম। যেখানে মুমিন মুসলমানের জীবন ও রক্তের মর্যাদা সীমাহীন। মানুষের জীবন ও রক্তের মর্যাদা রক্ষা এবং নিরাপত্তা দিতে ইসলামের বিধান অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

জীবনের নিরাপত্তায় ইসলামের বিধানের সঙ্গে দুনিয়ার কোনো সংবিধানই সমকক্ষ নয়। একাধিক হাদিসে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের জীবন ও রক্তের মর্যাদা ঘোষণা করেছেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এমন কোনো মুসলিমের জীবননাশ বৈধ নয়যে (ব্যক্তি) আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসুল’ এ সত্যে বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও এর প্রতি স্বীকৃতি ঘোষণা করেছে। তবে যদি ওই ব্যক্তি তিনটি অপরাধের কোনো একটি করে বসে (তবে তা ভিন্ন কথা)। তা হলো- বিবাহিত হওয়ার পর জিনা (ব্যভিচার) করেঅন্যায়ভাবে কারও জীবননাশ করে আর ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করতঃ মুসলমানের জামাআত হতে যে দূরে চলে যায়।’ (বুখারিমুসলিমতিরমিজিনাসাঈআবু দাউদইবনে মাজাহমুসনাদে আহমাদদারেমি)

- হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোনো মুসলিম ব্যক্তি যদি সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল; তবে তিন-তিনটি কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করা বৈধ নয়। (তাহলো)- বিবাহিত ব্যভিচারী, জানের বদলে জান (কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যাকারী), আর নিজের দ্বীন ত্যাগকারী মুসলিম জামাআত থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া ব্যক্তি।’ (আবু দাউদ, নাসাঈ, মুসনাদে আহামদ)

মানুষের রক্তের মর্যাদা এত বেশি যে, আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম খুনের বিচার করবেন। হাদিসের বর্ণনায় তা প্রমাণিত। হাদিসে এসেছে-

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামাতের দিন মানুষের অধিকার প্রসঙ্গে সবার আগে খুনের বিচার করা হবে।’ (বুখারিমুসলিমতিরমিজিনাসাঈইবনে মাজাহমুসনাদে আহমাদ)

এমনকি দুনিয়াতে যদি কোনো মুনিব তার ক্রীতদাসকেও হত্যা করে তবে ইসলামি সংবিধানের আলোকে এ অপরাধ থেকে মুনিবের মুক্তি পাওয়ার কোনো উপায় নেই। হাদিসে এসেছে-

হজরত সামুরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার দাসকে হত্যা করবেআমরা তাকে হত্যা করবযে তার দাসের নাক-কান কাটবে আমরা তার নাক-কান কেটে নেব।’ (আবু দাউদতিরমিজিনাসাঈইবনে মাজাহমুসনাদে আহমাদদারেমি)

সুতরাং কাউকে হত্যা নয়; হত্যার মতো মারাত্মক অপরাধ থেকে বিরত থাকা ঈমানের একান্ত দাবি। হাদিসে উল্লেখিত যে তিন কারণে হত্যার অনুমতি রয়েছে, তা-ও কোনো ব্যক্তি বাস্তবায়ন করতে পারবে না; আর তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব রাষ্ট্র কিংবা সরকারের।

মুমিন মুসলমানের উচিত, হাদিসের উপর যথাযথ আমল করা। কাউকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকা। ইসলামি বিধান মেনে জীবন পরিচালনা করা। মানুষের রক্তের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দান করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আশরাফুল মাখলুকাত মানুষের জীবন ও রক্তের যথাযথ মর্যাদা দেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।