• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০২১  

মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি কলামে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। বুধবার কলামটি লিখেছেন এশিয়ার আর্থিক বাজার নিয়ে বিশেষজ্ঞ হংকংভিত্তিক সাংবাদিক মাইক বার্ড।

প্রকাশিত কলামের অনূদিত অংশ নিচে তুলে ধরা হলো:-

গত সপ্তাহে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক একটি মাইলফলক অর্জন করেছে। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য সুপারিশ করেছে। পঞ্চাশ বছর আগে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই দেশটি এতদিন স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে ছিল।  

বিভিন্ন ধাপে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামে সফল যেসব উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে বিপুল অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, সেই একই জায়গা থেকে সফল উন্নয়ন মডেল কার্যকর হওয়ার বিষয়টির কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের নামটি সবার আগে উল্লেখ্যযোগ্য। স্বল্প আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে রফতানিমুখী উন্নয়ন আধুানিক কালে সবচেয়ে কার্যকরী। বাংলাদেশ এই কাজটি ভালোভাবে হয়েছে।  

ডলারের হিসেবে গত এক দশকে বাংলাদেশের রফতানি প্রায় ৮০ শতাংশ বেড়েছে। মূলত তৈরি পোশাক খাতের মাধ্যমেই এই অগ্রগতি।

অপরদিকে একই সময়ে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান তুলনামূলকভাবে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে; যা অন্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশকে ব্যতিক্রমভাবে তুলে ধরেছে।

২০১১ সালের হিসাবে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ভারতের চেয়ে ৪০ শতাংশ কম। তবে বিভিন্ন দিক থেকে গত বছর ভারতের চেয়ে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। করোনা মহামারির কারণে ভারতের অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেয়ার ফলে এই পতন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাস, এই ব্যবধান আরো কমবে।

এযাবৎকালে দেশটির উন্নয়ন মডেল যতদূর এগিয়েছে এর আরও কিছু কারণ রয়েছে। দেশটির জনসংখ্যার মধ্যে অল্প বয়সী বা তারুণ্যের আধিক্য, মজুরির স্তরের ক্ষেত্রে ধারাবাহিক প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় শ্রমবাজারে শক্তিশালী ও ক্রমবর্ধমান হারে নারীদের অংশগ্রহণ।

তবে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নের সম্ভাব্য কিছু বাধাও রয়েছে। প্রথম দিকটি হলো, বাংলাদেশের রফতানি প্রবৃদ্ধি ভিয়েতনাম বা কম্বোডিয়ার তুলনায় অনেক নিচে। এসব দেশে গত দশ বছরে রফতানির পরিমাণ যথাক্রমে তিনগুণ এবং দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। দুই হাজারের দশকের গোড়ার দিকে ভারতের রফতানির ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল এবং পরে তা স্থবির হয়ে পড়েছিল। সুতরাং এটা মনে রাখতে হবে যে, ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী এমন প্রবণতার গ্যারান্টি সবসময় থাকবে না।

বাংলাদেশের জন্য এখন পরবর্তী ধাপ হবে উৎপাদন ও রফতানির ক্ষেত্রে উচ্চ-মূল্যের দিকে রূপান্তর ঘটানো। যেমনটা করেছে ভিয়েতনাম। বাংলাদেশের রফতানি শিল্প এখনো প্রায় অনেকটাই পোশাক তৈরির ওপর মনোযোগী। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রোথ ল্যাবের র‌্যাংকিং অনুযায়ী অর্থনৈতিক জটিলতা পরিমাপ করা ১৩৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৮ তম। ১৯৯৫ সালেও বাংলাদেশের অবস্থান আরো নিচে ছিল।

বাংলাদেশও ভারতের মতো এশিয়ার বড় বড় ব্যবসায়িক জোটের বাইরে নিজেদের বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান, রিজিওয়ানাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনোমিক পার্টনারশিপ কিংবা কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রগ্রেসিভ ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপের সদস্য নয়। আন্তঃএশিয়া সরবরাহ ব্যবস্থায় আরো বেশি যুক্ত হওয়া এবং প্রাচ্যে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আরোঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করার জন্য দেশটির রফতানিমুখী উৎপাদন খাতগুলোতে আরো বৈচিত্র আনার প্রয়োজন পড়বে।   

তবে এসব সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ সম্ভবত আরো দেশটির উন্নয়নের ইঙ্গিতই দিচ্ছে এবং তা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য প্রতিবেশীদের উন্নয়নের জন্য খুব আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের টোটকাও বটে।