• বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান

মুজিববর্ষেই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের জুবিলি ব্যাংকের অবসায়ন চায় আদালত

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যায় জড়িতদের শেয়ার মালিকানায় পরিচালিত জুবিলি ব্যাংক লিমিটেডের একটি শাখা দিয়ে কুষ্টিয়ায় কার্যক্রম চালাচ্ছে। লাইসেন্সের শর্ত না মানার পরও প্রতিষ্ঠানটির চলমান কার্যক্রমে হতবাক দেশের উচ্চ আদালত। তাই মুজিববর্ষে ব্যাংকটির চূড়ান্ত অবসায়ন চান হাইকোর্ট।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯১৩ সালের ১৫ এপ্রিল কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার জানিপুরে ‘খোকসা জানিপুর জুবলি ব্যাংক লিমিটেড’ নামে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১৯৮৪ সালের ২৬ জুন লাইসেন্স নিয়ে ব্যাংকটি বাণিজ্যিকভাবে দেশে ব্যবসা শুরু করে। ব্যাংকটি ১৯৮৭ সালের ২৬ জানুয়ারি নাম পরিবর্তন করে হয় ‘জুবিলি ব্যাংক লিমিটেড’।

দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকটির এজিএম তথা বার্ষিক সাধারণ সভা না হওয়া এবং ব্যাংকটির অন্যতম শেয়ার মালিক এমবিআই মুন্সী নিজেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান দাবি করে। এ নিয়ে ২০১২ সালে মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। মামলায় ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মুনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ে ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে এবং ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যান ও পরিচালক নিয়োগ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আদেশ দেওয়া হয়। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান হিসেবে ব্যাংকটির দায়িত্ব দেন। কিন্তু আদালতের বেধে দেওয়া ছয় মাস সময়ের মধ্যে আদেশটি বাস্তবায়ন না করতে পারায় আদালতের কাছে পুনরায় সময় চেয়ে আবেদন জানানো হয়।

এরপর হাইকোর্ট ব্যাংকটির শেয়ার মালিকদের তথ্য চেয়ে সরকারের যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের পরিদফতরের (আরজেএসসি) কাছে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সে নির্দেশনা অনুসারে আরজেএসসি হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানটি সর্বশেষ ব্যাংকিং আইন দ্বারা লাইসেন্সপ্রাপ্ত নয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময় ধরে বঙ্গবন্ধুর তিন খুনি জুবিলী ব্যাংকের মালিকানায় ছিলেন। তারা হলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল (অব.) ফারুক, কর্নেল (অব.) রশীদ এবং মেজর (অব.) বজলুল হুদা।  একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের তথ্য লুকানোরও অভিযোগ ওঠে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

পরে হাইকোর্ট শেয়ার মালিক এমবিআই মুন্সীর আবেদন খারিজ করে ব্যাংকটি অবসায়নের পক্ষে রায় দেন। এরপর নতুন করে ব্যাংকটির কার্যক্রম চলমান রাখতে মামলা করেন শহীদ উল্লাহ নামের আরেক শেয়ার মালিক। মামলায় শহীদ উল্লাহ নিজেকে ব্যাংকটির অধিকাংশ শেয়ারের মালিক দাবি করেন। সে মামলার শুনানি নিয়ে পর্যবেক্ষণসহ ২০২০ সালে আদেশ দেন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার।  সম্প্রতি ওই আদেশের লিখিত ও পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।  

হাইকোর্ট তার লিখিত আদেশে, ব্যাংকটি অবসায়ন করতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে কেন এতদিনেও ব্যাংকটির বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে প্রতিদেন চাওয়া হয়েছে। এছাড়াও ১৯৮৪ সালের ২৫ জুনের পর থেকে এ পর্যন্ত জুবিলি ব্যাংকের কার্যক্রম মনিটরিং করতে ব্যর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, পরিচালক, ম্যানেজারসহ দায়িত্বরতদের শো’কজ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও আদালত আরজেএসস’র তালিকা থেকে জুবিলি ব্যাংকের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।  

হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি সম্মানপূর্বক জুবিলি ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধে সরকার এবং রাষ্ট্রের দায়িত্বরতরা নিজ উদ্যোগে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, হাইকোর্ট এমনটাই প্রত্যাশা করে। হাইকোর্ট তার এ আদেশের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং বাণিজ্যমন্ত্রীকে সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন।