• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

মেধা, শ্রম ও যোগ্যতার মূল্য নেই বিএনপিতে

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০  

মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে বিএনপিতে মেধাবী, ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের মূল্য নেই- এই বিষয়টি সবারই জানা। এবারের উপ-নির্বাচনের আগেও মিলেছে এর প্রমাণ। টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে ধানের শীষের প্রতীক।

জানা গেছে, রাজধানীর প্রবেশদ্বার খ্যাত ঢাকা-৫ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে ছিলেন নবী উল্লাহ নবী। দলের অন্যান্য হ্যাভিওয়েট নেতাদের যেখানে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল, সেখানে ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এ আসনে তাকে মনোনয়ন না দেয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় নেতা-কর্মী ও এলাকাবাসী।

তারা জানান, বিএনপির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি সালাউদ্দিন আহমেদ রাজধানীর শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা। গত এক দশক এ আসনে সালাউদ্দিন আহমেদের কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা কারো চোখে পড়েনি। এছাড়াও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সে সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা তো দূরের কথা মাঠে নামতেও সাহস পাননি তিনি। ভোট পান ২০ হাজারেরও কম। তাই উপ-নির্বাচনে তার পক্ষে ভোট কেন্দ্রে ভোটার টানা অসম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। 

একজন ভাড়াটে ব্যক্তিকে প্রার্থী করায় দলীয় নেতা-কর্মীর কাছে আস্থা হারাচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড। কর্মীরা বলছেন, এরই নাম বিএনপি, যেখানে মেধা, শ্রম ও যোগ্যতার কোনো মূল্য নেই। 

ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপির এক নেতা জানান, স্থানীয় রাজনীতির মাঠে সালাউদ্দিন আহমেদ ‘দৌড় সালাউদ্দিন’ নামে পরিচিত। ২০০৩ সালে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানের দাবিতে সালাউদ্দিনের নির্বাচনী এলাকার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। জনতাকে বিক্ষোভ বন্ধের হুমকি দিলে তখনকার এমপি সালাউদ্দিনকে ধাওয়া দেয় জনতা। তিনি দৌড়ে এলাকা ছাড়েন। এমন ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর ‘দৌড় সালাউদ্দিন’ নামটি মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে।

এছাড়াও ২০১০ সালে দলীয় কর্মকাণ্ড বহির্ভূত কাজ করায় সালাউদ্দিনকে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বহিষ্কার করেন। সেই সালাউদ্দিনকে আবার ধানের শীষের প্রতীক দেয়া হয়। দলের নীতি নির্ধারকদের এমন কর্মকাণ্ডে কর্মী ও সমর্থকদের কাছে বিএনপির গুরুত্ব নেই বললেই চলে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, বিএনপি নেতৃত্ব এখন একক সিদ্ধান্তের ওপর চলে। এখানে দলের নীতি নির্ধারকদের মতামতের কোনো মূল্য নেই।

তিনি বলেন, এই উপ-নির্বাচনে গিয়ে বিএনপির তেমন কোনো লাভ নেই। দলের সিনিয়র নেতাদের কেউই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য মত দেননি। এরপরও নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে শুধু তারেক রহমানের ইচ্ছায়।

তিনি আরো বলেন, তারেক রহমান অতীতের মতোই মনোয়ন-বাণিজ্যে নেমেছেন। আর তিনিই মনোনয়নের বিষয়টি পুরোপুরি দেখছেন। যাকে ইচ্ছা মনোনয়ন দেবেন, আর যাকে ইচ্ছা মনোনয়ন দেবেন না। এটা তার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ বিষয়ে নীতি নির্ধারকদের পরামর্শ নিলেও তার সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। এখানে আমাদের কিছুই করার থাকে না।