• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি কসমেটিকস বিক্রি করছে এসপিএস করপোরেশন

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০২০  

মেয়াদোত্তীর্ণ ও মানহীন কসমেটিকস পুনরায় টেম্পারিং করে বাজারজাত করে আসছিল এসপিএস করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর আবাসিক এলাকার একটি ভবন থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্য জালিয়াতির মাধ্যমে বিক্রি করতো প্রতিষ্ঠানটি।

সম্প্রতি রাজধানীর সাঈদ নগর ভাটারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সুধীর মন্ডলের নিজস্ব পাঁচতলা ভবনের গুদাম হতে ইয়ার্ডলি লোশন, সাবান, পাউডার ও বডি স্প্রেসহ প্রায় ১০ কোটি টাকার পণ্য জব্দ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের একটি গোয়েন্দা দল। প্রসাধনীর গায়ে ম্যানুফ্যাকচারিং ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ পরিবর্তনে ব্যবহৃত কেমিক্যাল, কালি ও একটি মেশিন জব্দসহ প্রতিষ্ঠানটির দুই ব্যবসায়িক অংশীদারসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের প্রধান শংকর মন্ডল (৩৪), হারুন অর রশিদ (৪৫) এবং কর্মচারী সবুজ আহমেদ (৩০), মনিরুজ্জামান (২৩) ও বীরেশ্বর মন্ডল (৩৬)। এ ঘটনায় ভাটারা (ডিএমপি) থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাদের আদালতে সোপর্দের পর তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিআইডি।

বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এডিশনাল ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার।

তিনি বলেন, বৈধ আমদানি লাইসেন্সের মাধ্যমে দুবাইসহ বিভিন্ন দেশ হতে আমদানিকৃত বিশ্বের নামি-দামি ব্র্যান্ডের প্রসাধনী বাংলাদেশে আমদানি করে খোলা বাজারে বিক্রি করে আসছে একাধিক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সুধীর মন্ডল ও তার সহযোগীরা এসপিএস করপোরেশন নামে একটি কোম্পানি খুলে উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ ও হ্যাঙ্কেল কোম্পানির মাল বিপণন করে আসছে। এসব আমদানি পণ্য গুলশান, বনানী ও উত্তরা অভিজাত এলাকার বিপণী বিতানসহ ঢাকার বাইরে জেলা শহরগুলোর বিভিন্ন দোকানেও বিক্রি করে আসছে। পণ্যের গায়ে প্রায় সবগুলোতেই মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা থাকে। সচেতন ক্রেতা সাধারণ অধিক মূল্যে বিশ্বের নামি-দামি ব্র্যান্ডের পণ্য দোকান থেকে ক্রয় করে থাকে। অধিকাংশ সময়ে পণ্যের মেয়াদের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্যে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা দেখে ক্রেতারা পণ্য ক্রয় করে থাকেন। এসব পণ্যের একটি বড় অংশ বিভিন্ন দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও অবিক্রিত থেকে যায়।

তিনি বলেন, বিএসটিআইয়ের বিধিমালা ও বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুসারে এসব পণ্য বিক্রেতা কর্তৃক নিজ উদ্যোগে অথবা সরবরাহকারীর কাছে ফেরত প্রদানের মাধ্যমে ধ্বংস করে ফেলার কথা। কারণ, মেয়াদোত্তীর্ণ বডি লোশন, সাবান, পাউডার কসমেটিকস পণ্য ব্যবহারে ত্বক ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি বা জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।

শেখ রেজাউল হায়দার বলেন, গত ১০ বছর ধরে এসপিএস করপোরেশন নামের প্রতিষ্ঠানটি বিদেশি কসমেটিকস পণ্য আমদানি ও বাজারজাত করে আসছে। এমন একটি প্রতিষ্ঠান অবৈধ ও অসাধু উপায়ে দোকানে থাকা এসব অবিক্রিত মেয়াদোত্তীর্ণ দেশি-বিদেশি পণ নামমাত্র মূলে ক্রয় করে সেগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণের সিল বিশেষ প্রক্রিয়ায় মুছে ফেলে তাতে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত সমমানের মেশিনের সাহায্যে পুনরায় তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নতুন মেয়াদোউত্তীর্ণের তারিখ বসিয়ে তা নামি-দামি বিপণী কেন্দ্রে বিক্রি করে আসছিল।

তিনি বলেন, এটি একটি গর্হিত ও দণ্ডনীয় অপরাধ এবং ক্রেতা সাধারণের সঙ্গে প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের শামিল। এতে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি যেমন বাড়ছে তেমনি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ অবৈধ পণ্য খোলা বাজারে বিক্রয়ের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।