• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি, শিক্ষকদের জন্য চালু হচ্ছে এসিআর

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০  

বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের জন্যও চালু হচ্ছে বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন বা অ্যানুয়াল কনফিডেনসিয়াল রিপোর্ট (এসিআর)। গত মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮’ সংশোধনী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই বৈঠকে বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের পদোন্নতির বিষয়টি উঠে আসে। পদোন্নতির বিষয়টি সংশোধিত নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার কারণেই এসিআর চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংশোধিত নীতিমালা জারির পর এসিআর চালু হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বৈঠকে উপস্থিতি নন-এমপিও নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, নীতিমালা সংশোধনী বৈঠকে বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের জন্য এসিআর চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অনুপাত প্রথা বাতিল করে যোগ্যতা নির্ধারণ করে পদোন্নতি দেয়া হবে। আর সে কারণেই এসিআর চালু করার জন্য নীতিমালায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে নীতিমালা সংশোধন চূড়ান্তকরণের ষষ্ঠ সভা শেষে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের বলেন, সভায় এমপিওভুক্ত করার ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামাঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাম্য শিক্ষার্থী, কাম্য ফলাফল, শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে নুন্যতম যোগ্যতা, শিক্ষকদের প্রমোশন প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা হয়।

সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও শিক্ষক-কর্চারীদের কল্যাণে যা কিছু প্রয়োজন সরকার তাই করে যাচ্ছে এবং করে যাবে। এ কারণেই নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিগগিরই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। নীতিমালায় যে অসঙ্গতি রয়েছে তা নিরসেনের জন্য কাজ করা হচ্ছে। এতে শিক্ষকদের চলমান সমস্যা সমাধান হবে।

সূত্রমতে, ২০১৮ সালের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল-কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা সংশোধনের মধ্য দিয়ে কলেজ শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের অনুপাত প্রথা ও পদোন্নতি বৈষম্য নিরসনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী অধ্যাপকের বহু বছরের অনুপাত প্রথা শিথিল করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংশোধিত নীতিমালা জারির পর চাকরির ১০ বছর পূর্তি হলেই কর্মরত প্রভাষকদের অর্ধেক সহকারী অধ্যাপক হতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে ১০০ নম্বরের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে চাকরিতে জ্যেষ্ঠতার জন্য ১৫ নম্বর, প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত হাজিরার জন্য ১০ নম্বর, এসিআরের ওপর ১০ নম্বর, উচ্চতর ডিগ্রির জন্য ১০ নম্বর, গবেষণাসহ বিভিন্ন যোগ্যতার ওপর মোট ১০০ নম্বর যোগ্যতার সূচক নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি চূড়ান্ত করতে একটি সাব কমিটি করে দিবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটি যোগ্যতার সূচক নির্ধারণ করে দেবে।

সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ ও পদোন্নতিতে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেলায় তা নেই। তাছাড়া অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত বিষয়ে নীতিমালায় রয়েছে অস্পষ্টতা। তা নিয়েও বেসরকারি কলেজ শিক্ষকরা অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে পদোন্নতির জটিলতা নিরসন চেয়ে আসছেন মন্ত্রণালয়ের কাছে।

এদিকে ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে চারটি শর্ত পূরণ করতে হতো। চারটি শর্তের মধ্যে ছিল- প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতির বয়স, শিক্ষার্থী সংখ্যা, পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পাসের হার। রাজধানীসহ দেশের শহর ও মফস্বলে একই শর্ত প্রযোজ্য ছিলো।

তবে সংশোধিত নীতিমালায় শহর ও গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শর্তে এবার ভিন্নতা আনা হচ্ছে। মফস্বল এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ে শর্ত শিথিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার নীতিমালা সংশোধনের দীর্ঘ বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির শর্ত খানিকটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের ক্যাডার ও নন-ক্যাডারভুক্ত প্রথম শ্রেণির সব কর্মকর্তার বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন প্রতিবছর ৩১ মার্চের মধ্যে নিজ নিজ অধিদপ্তরে দাখিল করতে হয়।

এসিআরের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ (অনুবেদনকারী বা প্রতিস্বাক্ষরকারী) বিগত বছরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সার্বিক কাজের মূল্যায়ন করে থাকে।
এ মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে কর্মকর্তাদের পদোন্নতিসহ চাকরিকালীন সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে। সে কারণে সব কর্মকর্তার জন্যই এই বার্ষিক মূল্যায়ন খুব গুরুত্বপূর্ণ।