রক্তদহর বিল: এক পুরোনো রোমাঞ্চের গল্প
শরীয়তপুর বার্তা
প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০১৯
বিদ্রোহী মানুষদের তাজা রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল এই দহের পানি। গল্পটা ব্রিটিশ আমলের। কোনো এক ব্রিটিশ এবং স্থানীয় জমিদারের বিরুদ্ধে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছিল এই এলাকায়। খবর গেল জমিদারের কাছে। জমিদার ব্রিটিশ সাহেবকে সঙ্গে নিয়ে ধরে ফেললেন বিদ্রোহীদের। তারপর এই বিলের ধারে নিয়ে একে একে হত্যা করা হলো তাঁদের। এত মানুষকে একসঙ্গে হত্যা করা হয়েছিল যে পুরো বিলের পানি রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল! পুরো বিলের সেই রক্তে রাঙা লাল পানি দেখে মুখে মুখে এই বিলের নাম হয়ে গিয়েছিল ‘রক্তদহর বিল!’
প্রথমবার যখন ‘রক্তদহর’ বিল নামটা শুনি, কেমন যেন একটা গা ছমছমে অনুভূতি হয়েছিল, একটা অদ্ভুত রোমাঞ্চে রোমাঞ্চিত হয়েছিলাম, স্পষ্ট মনে আছে। জানতে পারলাম এই বিল সান্তাহারে। সেই সঙ্গে শুনলাম ওই গা ছমছমে গল্পটা। এই গল্প শোনার পর থেকে আমার ‘রক্তদহর বিল’ দেখার আগ্রহ বেড়েছে গেল। তবে যখনই মনে পড়েছে এই রক্তদহর বিলের কথা, রোমাঞ্চিত হয়েছি বারবার। যে কারণেই সেবার ঈদের ছুটিতে বেড়াতে গিয়ে ছুটলাম ছোটবেলায় শোনা সেই রোমাঞ্চকর বিল দেখতে। সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশন থেকে রিকশায় যেতে-আসতে বড়জোর এক ঘণ্টা।
চলার শুরুতেই একরাশ মুগ্ধতা আর অপার সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে গেলাম। শুরুতেই বড় একটা দিঘির মাঝ দিয়ে করা রেলস্টেশনের সঙ্গে লাগোয়া রাস্তা। একদম টলটলে যার পানি। ঝিরঝিরে বাতাসে শরীর-মন দুটোই জুড়িয়ে গেল। এরপর আমার চিরাচরিত ভালো লাগার পথ আর পথের দুই ধারের অপরূপ দৃশ্য। আঁকাবাঁকা পিচঢালা পথের দুপাশে সবুজের আস্তরণ আর সবুজের মাঝে মাঝে লাল ইটের তৈরি ব্রিটিশ আমলের রেল কলোনির সরকারি বাসভবন। বাঁকা পথ, সবুজ প্রান্তর আর পুরোনো রেল কলোনি পার হতেই আমাদের রিকশা উঠে পড়ল নওগাঁ-বগুড়া বাইপাস সড়কের চওড়া পিচঢালা পথে, যার দুই পাশে তালগাছের সারি অদ্ভুত সুন্দর সাজে সেজে আকাশ ছুঁতে চাইছে যেন! পিচঢালা পথ, দুপাশে আকাশছোঁয়া তালগাছের সারি, প্রান্তর জুড়ে সবুজ ধানের মাতাল করা ঢেউ, কাছে দূরে ছোট ছোট গ্রাম, গ্রামীণ ঘরবাড়ি, পাখির ডাক, হাঁসের ঝাঁক, ঝিরঝিরে বাতাস, সবকিছু মিলে পাগল করা একটা পরিবেশ।
এই রাস্তা ধরে যেতে হবে রক্তদহ বিলে।
এই পথে যেতে যেতে, একটু পরে রাস্তার দুপাশের তালগাছ আর পাকা রাস্তা ছেড়ে, কাঁচা মাটির পথে চলতে শুরু করল আমাদের রিকশা। একটু দূরে চোখে পড়ল অপেক্ষার আর রোমাঞ্চের সেই রক্তদহ বিল। সঙ্গে বিস্তীর্ণ জলরাশি। রিকশাচালক জানাল, দূরের যে জলাশয় দেখা যাচ্ছে, সেটাই সেই রক্তদহ বিল!
শোনা মাত্রই চোখ তুলে তাকাতেই কেমন যেন একটা রোমাঞ্চ অনুভব করলাম নিজের ভেতরে। একটা অস্থিরতা বা ছটফটানি অনুভূতি! রিকশা যেন আগের চেয়ে ধীর হয়ে গেছে, কোথাও কোথাও কাদাময় পথে থেমে নেমেও যেতে হয়েছে। শেষে অস্থির চিত্তের আমি নেমেই গেলাম রিকশা থেকে হেঁটে যেতে। মনে হলো এই রিকশার চেয়ে হেঁটেই আমি বেশি দ্রুত চলে যেত পারব। আর তা-ই করলাম, দুপাশের শান্ত জলাশয়, ধানখেত, সরু আল, মাটির মেঠোপথ পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম কাঙ্ক্ষিত সেই রক্তদহ বিলের শুরুতে।
বেশ কয়েকটি বটগাছের ছায়ায় মাখামাখি কাঁচা রাস্তার শেষ প্রান্তে পৌঁছাতেই চোখে পড়ল সাইনবোর্ড—রক্তদহ বিলের পরিচিতি। বিশাল আয়তনের এক জলাশয়, যা নওগাঁ, বগুড়া হয়ে ছুঁয়ে গেছে দেশের বিখ্যাত চলনবিল। যত দূর চোখ যায় শুধু টলটলে জলের সমারোহ, মাঝেমধ্যে গুচ্ছ গুচ্ছ গ্রামে মানুষের আবাস, নৌকায় করে বেড়াতে আসা ছেলেমেয়েদের ভেসে বেড়ানো, হালকা ঢেউয়ের দোলায় দোল খেয়ে চলেছে সবাই। টলটলে স্বচ্ছ জলের মাঝেমধ্যে সবুজ কচুরিপানার দল, জলজ গুল্মলতা, মাছের আনাগোনা, দুই-একটি সাপের নরম জলের ভেতরে নিজের মতো করে ছুটে চলা।
অনেক দিন পর চোখে পড়ল মাছরাঙা পাখি। ঝুপ করে জলে ডুব দিয়ে ঠোঁটে করে তুলে নিল নিজের আহার রুপালি মাছ! আমার ছেলে তো এই দৃশ্য দেখে যারপরনাই অভিভূত! কীভাবে, কেন একটি আকাশে উড়তে থাকা রঙিন পাখি পানির মধ্যে ডুবে থাকা কোনো মাছকে লুফে নিতে পারে! ওর সেই বিস্ময় কাটাতে হয়েছে অনেক, অনেক কিছু বুঝিয়ে। পুরোনো স্মৃতি আর নানা রকম গল্প করে বুঝিয়ে।
বিলের মধ্য দিয়ে গাছে ছাওয়া সরু চলার রাস্তা।
এরপর বটের ছায়ায় একটু বসে, ওর শিকড় ধরে নেমে গেলাম বিলের জলের শীতল স্পর্শ পেতে। সবুজ কচি ঘাসের কোমলতার স্বাদ নিতে, কাঁচা মাটির গন্ধ নিতে, জল-কাদার সুখ ছুঁতে আর ঝিরঝিরে বাতাসের পরশ পেতে। নরম ঘাসের ওপরে বসে পা ডোবালাম রক্তদহ বিলের স্বচ্ছ জলে। কী অদ্ভুত একটা আনন্দের শিহরণে শিহরিত হলাম বলে বা লিখে বোঝানোর মতো নয়। চারদিকে যেদিকেই চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। কোথাও কচুরিপানার সবুজ জটলা, কোথাও জেলেদের মাছ ধরার ডিঙি নৌকার দোলা, কোথাও দূরের গুচ্ছ গ্রামে হাঁস, গরু, ছাগলের মায়াবী ডাক।
এরপর একটু উঠে হাঁটা শুরু করলাম কিছু দূর বিলের সরু আল ধরে। সেই আলের দুপাশে তাল, খেজুরসহ নানা রকমের বনজ আর জলজ গাছে সবুজ করে রেখেছে চারপাশ। যেসব গাছে আর ঘাসে উড়ে উড়ে এসে বসছে, নিজের মতো করে খেলা করছে নানা রঙের ফড়িং আর কীটপতঙ্গ। সেসব এক অবাক বিস্ময় আর নানা রকম প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল আমাকে।
চারপাশের এই বিশুদ্ধ, কোমল, স্বচ্ছ জলাশয়, মিহি ঘাসের নরম স্পর্শ, টলটলে জলের শীতল পরশ, ইচ্ছে করেই কাদায় একটু মাখামাখি, কাছে দূরের সবুজ গ্রামের হাতছানি, আকাশে উড়ে চলা গাঙচিল, ঝিরঝিরে বাতাসের কোমল পরশ, মাটির কাঁচা রাস্তার ধুলোময় পথ, ঘাটে বাঁধা আর ভেসে চলা ডিঙি নৌকা, জেলেদের মাছ ধরা, নানা রকম গাছে গাছে আচ্ছাদিত মেঠো পথের অপার সুখে ভেসে ভেসে, দেখে দেখে, হেঁটে হেঁটে অবশেষে শেষ বিকেলে ফেরার পথ ধরলাম,
‘আবার আসিব ফিরে’ সেই আকুতি জানিয়ে।
- গরমে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া কি বিপদের লক্ষণ?
- গরমে সতেজ থাকার কৌশল
- কাঁচা আমের আচার তৈরির সহজ রেসিপি
- ২০২৫ সালে এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টার
- দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২
- কক্সবাজারে স্পেশাল ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত
- ঝালকাঠির দুইটি উপজেলার নির্বাচনে মনোনয়পত্র যাচাই বাছাই
- শিবচরে বালু উত্তোলন করার অপরাধে ড্রেজার, বাল্কহেডসহ ১১জন আটক
- ২০২৫ সালের মধ্যে শিশু শ্রম শূন্যের কোটায় আনা হবে
- বরিশালের দুই উপজেলার ২১ প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ
- বরিশালে ২টি নৌযান সহ ৩৯ জেলে আটক
- গৌরনদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৬ হাজার ৮শত টাকা জরিমানা
- আজ দেখা যাবে পিংক মুন, ঢাকায় শক্তিশালী টেলিস্কোপ স্থাপন
- কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, তালিকা চাইলেন হাইকোর্ট
- থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী
- আগামী দিনে হজ ব্যবস্থাপনা আরও স্মার্ট হবে: ধর্মমন্ত্রী
- ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন ৫ জুন
- অভিযোগ পেলে পিডিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, প্রয়োজনে পরিবর্তন
- শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র টালবাহানা করছে: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
- কারা সনদ নিয়েছেন, কারা টাকা নিয়েছেন খুঁজে বের করবো: ডিবিপ্রধান
- জরিপ সম্পর্কে জমির মালিকদের জানাতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তি আজ
- চঞ্চলকে নিয়েই শাকিবের ‘তুফান’
- অফশোর ব্যাংকিংয়ে সুদের ওপর কর প্রত্যাহার
- আবহাওয়া ঠান্ডা রাখতে রাস্তায় নিয়মিত পানি ছিটানোর পরামর্শ
- পাট পণ্যের উন্নয়নে সমন্বিত পথনকশা প্রণয়ন করা হবে: নানক
- আন্তর্জাতিক শিশু পর্নোগ্রাফি চক্রের দুজন আটক
- র্যাবের মুখপাত্রের দায়িত্ব নিলেন কমান্ডার আরাফাত
- থর মরুভূমির প্রভাব দেশে, বৃষ্টির বাতাস সরে গেছে চীনে
- ক্যাম্পে রোহিঙ্গা যুবককে কুপিয়ে হত্যা
- রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেছে কি না বুঝবেন যে লক্ষণে
- পিসিওএস থেকে মুক্তি পেতে নারীরা যা করবেন
- হিট স্ট্রোক এড়াতে কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
- বরিশালে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে অলোচনা সভা
- বুয়েটের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক, ছাত্র রাজনীতি চালু করতে হবে:সাদ্দম
- কমবয়সীদেরও কেন হয় হার্নিয়া, এর চিকিৎসা কী?
- শরীয়তপুরে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত
- শেখ হাসিনা সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ করে যাচ্ছেন
- সাধারণ জ্বর-সর্দি নাকি করোনা বুঝবেন যে লক্ষণে
- হার্টে হলদেটে ছোপ কেন হয়, কীসের লক্ষণ?
- এসির বাতাসে বাড়ছে ঠাণ্ডা-কাশি, ঘরোয়া উপায়ে সমাধান
- ইরানের নজিরবিহীন হামলা, নজর এখন ইসরায়েলের দিকে
- গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে খান এই ৫ পানীয়
- ইরানে সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করল ইসরায়েলি বিমান বাহিনী
- ছুটি শেষে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু বেনাপোল বন্দরে
- পায়ের পাতায় ব্যথা, হতে পারে যে রোগের লক্ষণ
- ছুটিতে সরকারি হাসপাতালের সেবায় সন্তুষ্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- গরমে কেন বেড়ে যায় অ্যাজমা? শ্বাসকষ্ট হলে কী করবেন?
- শরীয়তপুরে মুজিব নগর দিবস পালিত
- বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিলো বলেই বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম : শামীম