• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

রোজায় বদহজম প্রতিরোধ সহ ১০ রোগ প্রতিরোধ করবে আতা

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২১  

আমাদের সবার কাছেই বেশ পরিচিত একটি ফল হচ্ছে আতা। যা অনেকেরই প্রিয় ফলের তালিকায় রয়েছে। কেবল আতা হিসেবেই নয়, এই ফলটি শরীফা, সিতাফল এবং নোনা নামেও পরিচিত। ফলটি খেতে দারুণ সুস্বাদু।

আতা ফলের বেশ কয়েকটি প্রজাতি ও প্রকরণ আছে। সবগুলোকেই ইংরেজিতে ‘কাস্টার্ড অ্যাপল’, ‘সুগার অ্যাপল’, ‘সুগার পাইন এপল’ বা ‘সুইটসপ’ বলা হয়। অঞ্চলভেদে নামের কিছু পার্থক্য রয়েছে আতা ফলে। এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। যা আপনার শরীরের বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে থাকে।

পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ আতা ফলে প্রতি ১০০ গ্রামে পাওয়া যায় শর্করা ২৫ গ্রাম, পানি ৭২ গ্রাম, প্রোটিন ১.৭ গ্রাম, ভিটামিন এ ৩৩ আইইউ, ভিটামিন সি ১৯২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৭ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৮ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২১ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৩৮২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৪ মিলিগ্রাম।

আপনি হয়তো জানেন না, দুগ্ধজাত পণ্যের বিকল্প হিসেবে অনেক দেশে আতাকে পছন্দ করে। রোজায় বদহজম থেকে রক্ষা পাওয়া সহ আরও ১০ উপকারিতা আতা খেতে পারেন। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক আতার কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত-

বদহজম প্রতিরোধক

তামা ও ডায়াটেরি ফাইবার সমৃদ্ধ এই ফলটি খুব সহজেই হজম হয়। শরীর এর গুণাগুণ তাৎক্ষণিক পেতে থাকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আতা ফলের গুঁড়া এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেলে আপনার ডায়রিয়ার সমস্যাও মুহূর্তেই গায়েব হবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধক

এক গবেষণায় দেখা গেছে, আতা গাছের পাতার নির্যাস স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। স্তনের কোষে থাকা বিষাক্ত টক্সিন দূর করে। এছাড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্টপূর্ণ আতা ফল আপনার শরীরের কোষগুলোকে বিভিন্ন ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে।

ত্বক এবং চুলের যত্নে

আতা ফল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ। যা আপনার ত্বক ও চুলের জন্য জাদুকরী ভূমিকা পালন করে। এটি যখন ত্বক ও চুলে ব্যবহার করা হয় তখন এটি ময়শ্চারাইজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এমনকি এটি আপনার চেহারায় বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করে। আতা ফলেরর ছোট ছোট কোষগুলো আলসারের বিরুদ্ধে কার্যকরী।

দাঁত ও মাড়ি মজবুত করে

বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে অন্তত একবার দাঁত পরিষ্কার করার জন্য আতা ফলের চামড়া ব্যবহার করার সুপারিশ করেন। এটি ব্যবহারের ফলে দাঁত ক্ষয় রোধ হয়, সঙ্গে এটি মাড়িকে আরও মজবুত করে।

হাঁপানি প্রতিরোধক

হাঁপানি রোগী হিসেবে যদি আপনি মূলার রস খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আতা ফলের রস খাবেন। এটি ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ যা আপনার হাঁপানি (অ্যাস্থমা) প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, তাহলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে আতা ফল খাওয়া শুরু করুন। এছাড়াও কাস্টার্ড আপেলের ডায়াবেটিস ফাইবারের উপস্থিতিতে চিনির শোষণ কমানো যায়।

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ

আতা ফলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আপনার কার্ডিয়াক সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে এতে থাকা ভিটামিন বি-৬ হোমোকিসস্টাইন নিয়ন্ত্রণ করে। এই ফলে আছে অ্যামিনো অ্যাসিড যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

ক্ষত শুকায়

গবেষকদের মতে, আতা ফলের বীজ ক্ষত শুকাতে সাহায্য করে। এই বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের গভীরে থাকা কোষের পুনঃবৃদ্ধি পায় এবং ক্ষত স্থানের ব্যথা তাৎক্ষণিকভাবে পালায়। এই বীজে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টি রয়েছে।

ওজন বাড়ায়

আপনি কি ওজন বাড়াতে চান? এর জন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হলো- একটি বাটিতে পরিমাণমতো মধু এবং আতা ফলের ছোট ছোট বীজগুলো মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করুন। প্রতিদিন এই মিশ্রণটি খান। দেখবেন কয়েক মাসের মধ্যে আপনার ওজন বাড়ছে।

গর্ভাবস্থায় সহায়ক

গাইনোকোলজির মতে, গর্ভাবস্থায় আতা ফল খাওয়া গর্ভপাতের ঝুঁকি হ্রাস করে। সকালের দূর্বলতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শারীরক ব্যাথার উপশম ঘটায়। গর্ভাবস্থার পরে আতা ফল খাওয়ার ফলে স্তনে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।