• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

লন্ডনে বিক্ষোভের নামে রামপাল প্রকল্প নিয়ে ফের অপপ্রচারে একটি চক্র

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০১৯  

দেশের বিদ্যুৎখাত উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ফের অপপ্রচারে নেমেছে একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী। ধারণা করা হচ্ছে, বিশেষ কোনো মহলের প্ররোচণায় তারা এমন তৎপরতা শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে আটজন মিলে কথিত এক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

‘লন্ডন সলিডারিটি অ্যাকশন’ নামের একটি অপরিচিত সংগঠন ওই বিক্ষোভের আয়োজন করে। তবে লন্ডনে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের কাছে এ কর্মসূচিতে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এর আগেও সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে লন্ডন থেকে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে। দেশের রাজনীতিতে সুবিধা করতে না পেরে বর্তমানে এই শহরটিকে নিজেদের ঘাঁটি বানিয়েছে বিএনপি-জামায়াত চক্র। লন্ডনে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের ধারণা, দেশের মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এই দল দুটিই রামপাল কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে এবং অপপ্রচার চালাচ্ছে।

লন্ডনে আটজনের ওই বিক্ষোভকে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেছেন অনেকেই। কথিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বলা হয়েছে, রামপাল প্রকল্পে সুন্দরবন ধ্বংস হবে। সরকার ইউনেস্কোর নীতি লঙ্ঘন করছে। তবে এ ধরনের বক্তব্য ছিল স্পষ্টতই অপপ্রচার। কেননা, ২০১৬ সালে প্রকল্পটি নিয়ে আপত্তি জানায় ইউনেস্কোর। পরে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয় যে রামপাল সুন্দরবনের কোনও ক্ষতি করবে না। পরে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে আপত্তি প্রত্যাহার করে সংস্থাটি।

এছাড়া রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তুতি হিসেবে ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেসব উদ্যোগকেও স্বাগত জানায় ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি। এরপর অবশ্য ফের আন্তর্জাতিক লবিয়িং চলে রামপাল প্রকল্প ঠেকাতে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রামপালের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐহিত্যের যে অংশ সুন্দরবনের মধ্যে অবস্থিত তা থেকে ৬৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সংরক্ষিত বনের পাশে একেবারে শহরের প্রাণকেন্দ্রে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে এ ধরনের বহু কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, সাউথ আফ্রিকা ও তাইওয়ানে। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্লাডস্টোনে গ্রেট বেরিয়ার রিপের মত খালের পাশে গত ৫০ বছর ধরে ১ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট সাবক্রিটিক্যাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রয়েছে। সেখানে ৪শ কিলোমিটার দূর থেকে ট্রেনে করে খনি থেকে সরাসরি কয়লা সরবরাহ করা হয়। সেখানে কোন বায়ু দূষণ বা পানি দূষণের অভিযোগ এখনো পর্যন্ত কেউ করেনি।

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য যে জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে পতিত, অনুর্বর এবং মূলত চিংড়ি চাষের জন্য ব্যবহৃত হতো। খুব অল্প পরিমাণে জমির মালিক ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং যে পরিমাণ মানুষকে পুনর্বাসন করতে হবে তার পরিমাণও খুব কম। প্রকল্পটি পশুর নদীর তীরে অবস্থিত হওয়াতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জায়গা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ। ভারত বা এনটিপিসি ওই জায়গা নির্ধারণ করেনি। প্রকল্প এলাকাটিতে বর্তমানে রাস্তাও হয়েছে। কৃষি জমির ক্ষতি না করে, অধিক মানুষের পুনর্বাসন করা লাগছেনা, তদুপরি নদীর ধারে প্রকল্পটির অবস্থান হওয়াতে প্রকৌশল দৃষ্টিভঙ্গিতে সবচেয়ে উত্তম জায়গাতেই এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

এতকিছুর পরও রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছেই। তবে এসব ষড়যন্ত্র সফল হবে না বলে মনে করেন দেশের সুধীজনরা।