• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

শবে মেরাজের নামাজ ও আমল

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২১  

কোরআন-হাদিসের দৃষ্টিতে রজব মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ মাসের অনেক ফজিলত রয়েছে। আরবি চান্দ্রবর্ষের সপ্তম মাস রজব। রজব মাসের পূর্ণ নাম হলো ‘আর রজব আল মুরাজজাব’ বা ‘রজবুল মুরাজ্জাব’। ‘রজব’ অর্থ ‘সম্ভ্রান্ত’, ‘প্রাচুর্যময়’, ‘মহান’। 

আয়াতে উল্লিখিত সম্মানিত মাস চারটি; যথা- জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব। আরবিতে এই চারটিকে আশহুরুল হারাম বলা হয়। রজব হলো এগুলোর অন্যতম মাস। রজব অর্থ হলো সম্মানিত। এ মাসের অনন্য গুরুত্ব রয়েছে। হাদিস শরিফে আছে, হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ১২ মাসে এক বছর। এর মধ্যে চারটি সম্মানিত। তিনটি ধারাবাহিক যথা- জিলকদ, জিলহজ ও মহররম অপরটি রজব। 

শবে মেরাজের রাত মুসলিম উম্মাহর জন্য অনেক তাৎপর্যপূর্ণ একটি রাত। এই রাতে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) হযরত জিব্রাঈল (আ.) এর সঙ্গে পবিত্র কাবা হতে ভূ-মধ্যসাগরের পূর্ব তীর ফিলিস্তিনে অবস্থিত পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের উপর সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে সত্তর হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তাআলার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সমস্ত কিছুর অপার রহস্য। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা মেরাজ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছাড়া অন্য কোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি। আর এ কারণেই তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নবী।

শবে মেরাজ উপলক্ষে বিশেষ কোনো আমলের কথা শরীয়তে উল্লেখ করা হয়নি। তারপরও এ রাতে ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশেষ ইবাদত বন্দেগিতে লিপ্ত থাকতে পছন্দ করেন। বিশেষত এ রাতকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মসজিদে কিংবা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করার প্রথা বহুদিন যাবত্ চলে আসছে। অনেকে এ উপলক্ষে নফল রোজা রাখেন। তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করেন।

উম্মে সালমা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) রমজান মাস ছাড়া সবচেয়ে বেশি রোজা পালন করতেন শাবান মাসে, অতঃপর রজব মাসে। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, ‘যখন রজব মাস আসত, তা আমরা নবীজি (সা.)–এর আমলের আধিক্য দেখে বুঝতে পারতাম।’ কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায়, নবীজি (সা.) রজব মাসে ১০টি রোজা রাখতেন, শাবান মাসে ২০টি রোজা রাখতেন; রমজান মাসে ৩০টি রোজা রাখতেন। (দারিমি)।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রজব হলো আল্লাহর মাস, শাবান হলো আমার (নবীজির) মাস; রমজান হলো আমার উম্মতের মাস।’ (তিরমিজি)। ‘যে ব্যক্তি রজব মাসে (ইবাদত দ্বারা) খেত চাষ দিল না এবং শাবান মাসে (ইবাদতের মাধ্যমে) খেত আগাছামুক্ত করল না; সে রমজান মাসে (ইবাদতের) ফসল তুলতে পারবে না।’ (বায়হাকি)।

রজব মাসের বিশেষ আমল হলো বেশি বেশি নফল রোজা রাখা। বিশেষত প্রতি সোমবার, বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং মাসের ১, ১০; ১৩, ১৪, ১৫; ২০, ২৯, ৩০ তারিখ রোজা রাখা। অধিক হারে নফল নামাজ পড়া। বিশেষ করে তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত-দোহা, জাওয়াল, আউয়াবিন; তাহিয়্যাতুল অজু, দুখুলুল মাসজিদ ইত্যাদি আদায় করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক নামাজে এ দোয়ার মাধ্যমে রজব ও শাবান মাসে রবকত লাভের পাশাপাশি রমজান মাসের রহমত বরকত মাগফিরাত ও নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।