• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

শরীয়তপু‌রের জাজিরায় বিজ্ঞান মেলা উদযাপন

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯  

শরীয়তপুর প্র‌তি‌নিধিঃ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এই শ্লোগান নিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরায় শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদযাপন এবং বিজ্ঞান মেলা । উপজেলা প্রশাসন এ মেলার আয়োজন করেন। ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে জাজিরা জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম কক্ষে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম।

বিজ্ঞান মেলা উপলক্ষে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন,  প্রতি বছরই শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করা হয়। এতে মেলায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। যারা মেলা দেখছে তারাও বিজ্ঞানের প্রতি উৎসাহিত হচ্ছে। দেশ ও মানুষের কল্যাণের জন্য বিজ্ঞানের প্রতি সবাইকে আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে। বিজ্ঞানের প্রতি তরুণ প্রজন্মের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণই দেশকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে বলে মনে করি। এ জন্য বিজ্ঞান শিক্ষার বিকল্প নেই। এভাবেই একদিন সত্যিকারের বিজ্ঞানী তৈরী হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।

শেষে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের প্রজেক্ট প্রদর্শন করা হয়। বিজ্ঞান মেলায় স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন গুলো অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সরকারি জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, জাজিরা গোপাল চন্দ্র ভট্টাচার্য বিজ্ঞান ক্লাব, কুন্ডেরচর কালু বেপারী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দক্ষিণ ডুবলদিয়া আব্দুল রাজ্জাক হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জাজিরা গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জাজিরা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, মাহমুদা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়, লাউখোলা এ,এস,উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, জয়নগর জুলমত আলী উচ্চ বিদ্যালয়, আমজাদিয়া একাডেমী, আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় ও বি.কে. নগর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়সহ ১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

মেলার স্টলগুলোতে শোভা পাচ্ছে প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের আবিস্কারের নানা প্রজেক্ট। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে এই মেলা। শিক্ষকরা জানান, মেলায় শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট আবিস্কার যে কাউকে অভিভূত করবে। অত্যাধুনিক রোবট থেকে শুরু করে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার আবিস্কার মেলায় স্থান পেয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, ছোট ছোট স্টল দিয়ে সাজানো হয়েছে স্কুলের বহিরাঙ্গন। স্টলগুলোতে নিজেদের আবিস্কার নিয়ে ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা তাদের আবিস্কারের সুফল তুলে ধরছে।

মেলায় লাই ফাই (লাইট ফিডালেটি) আবিস্কারক সরকারি জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজ্জাত হোসেন সিয়ান জানালো তার আবিস্কারের বিভিন্ন তথ্য। সাজ্জাত বলেন, লাইট এর মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সফার করা হয়। এ লাইট ব্যবহার করে রেডিও ওয়েবের মতো লাইটিং ওয়েব ইলেক্ট্র ম্যাগনেটিক ওয়েব হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। এর গতির প্রসঙ্গে বলেন, যা ওয়াই ফাইয়ের গতির ১০০ গুন বেশি। যেহেতু আলোর গতি বেগ অত্যন্ত বেশি ফলে এর গতিও অনেক বেশি।
 সাজ্জাতের সহযোগি আশার ভাষ্য, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি বিভিন্ন এল.এ.ডি লাইট ব্যবহার করে বাইনারি কোডের সাহায্যে ইলেক্ট্রনিক সিগনালের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে সক্ষম হবে। অপর দিকে, ধোঁয়া শোষণ যন্ত্র আবিষ্কার করে সকলের দৃষ্টি আর্কষন করে ইয়াসির ইফতেখার আহম্মেদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন। উদ্ভাবনার মধ্যে রয়েছে পেট্রোল ও পানি দিয়ে মিথেন গ্যাস তৈরির প্রজেক্ট। প্রজেক্টি তৈরি করে কুন্ডেরচর কালু বেপারী স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের তরুণ শিক্ষার্থীরা। যা প্রাকৃতিক গ্যাসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে বলে মন্তব্য করেন। মারজিয়া নামক রোবট আবিস্কার করেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শুভ। আমজাদিয়া একাডেমী স্কুলের শিক্ষার্থীরা উদ্ভাবন করেন, পানির ট্যাংক এলার্ম ও ভূমিকম্প এলার্ম। এছাড়া আধুনিক স্মার্ট সিটির নকশা, রোবট, বাতাস এবং পানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, শহরের ব্যস্ততম সড়ককে যানজট মুক্ত রাখতে উড়াল সড়কের নকশা, পদ্মা সেতুর নকশাসহ বিভিন্ন চমকপ্রদ আইডিয়ার পোস্টার প্রেজেন্টেশন অতিথিদের মুগ্ধ করে।