• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

শৈশবের স্থূলতা থেকে মূত্রথলির ক্যান্সার

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২০  

গবেষণা বলছে, শৈশবে যাদের ওজন বেশি ছিলো, পরিণত বয়সে তাদের মূত্রথলিতে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি। ‘অ্যানালস অফ হিউম্যান বায়োলজি’ শীর্ষক সাময়িকীতে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। ডেনমার্কের ৩ লাখ ১৫ হাজারেরও বেশি শিশুর তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণা করা হয়। এতে দেখা যায়, শারীরিক ওজন পরবর্তী জীবনে নানান রোগ বয়ে আনে।

শৈশবে ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’য়ের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হওয়া, জন্মের সময় ওজন কম কিংবা বেশি হওয়া এবং উচ্চতা গড় স্বাভাবিকের তুলনায় কম হওয়ারও ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। জীবনের প্রাথমিক সময়ে দেখা দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ উপসর্গগুলো সনাক্ত করতে পারলে প্রাণঘাতি মূত্রথলির ক্যান্সারকে আরও গভীরভাবে জানা সম্ভব।

পৃথিবীব্যাপী দেখা দেওয়া বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে রোগীর সংখ্যায় নবম এই মূত্রথলির ক্যান্সার, এর ফিরে আসার হার যেমন বেশি তেমনি ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষকেই বেশি আক্রমণ করে রোগটি। ডেনমার্কের ‘বিসপেজার্গ অ্যান্ড ফ্রেডরিস্কবার্গ হসপিটাল’য়ের ডা. ক্যাথরিন কে. সোরেনসেন এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন।

তিনি বলেন, “আমাদের গবেষণার ফলাফল ইঙ্গিত করে যে, শিশুর ওজন যত বেশি হবে ভবিষ্যতে তার মূত্রথলির ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কাও ততই বাড়তে থাকবে। শৈশবে শারীরিক গড়ন পরবর্তী জীবনের কী রকম প্রভাব ফেলে তা জানতে বড় ধরনের সহযোগিতা করবে আমাদের গবেষণাটি, এমনটাই আমাদের বিশ্বাস।”

জীবনযাত্রার বিভিন্ন বদভ্যাসের সঙ্গে মূত্রথলির ক্যান্সারের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইতোমধ্যেই। তবে শৈশবেই এর বীজ বপন হয়ে যেতে পারে এমনটা সম্পর্কে ধারণা ছিল একেবারেই সামান্য।

এই গবেষণায় মোট ৩ লাখ ১৫ হাজার ৭৬৩জন শিশুর তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করা হয় যাদের জন্ম হয়েছিল ১৯৩০ থেকে ১৯৮৯ সালের মধ্যে এবং তাদের বয়স ছিল সাত থেকে ১৩ বছর।

‘কোপেনহেইগেন স্কুল হেল্থ রেকর্ড’য়ে তালিকাভুক্ত তথ্যের মধ্যে ছিল ওই শিশুদের ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’য়ের মাত্রা, জন্মের সময়কার ওজন ও উচ্চতা। এই তথ্যের সঙ্গে ‘ড্যানিশ ক্যান্সার রেজিস্ট্রি’র তথ্য মিলিয়ে দেখা হয়। গবেষণার আওতাভুক্তদের মধ্যে মোট ১ হাজার ১৪৫জন মানুষ পরিণত বয়সে এসে মূত্রথলির ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, যাদের ৮৩৯জনই ছিল পুরুষ।

ভবিষ্যতে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বোঝাতে গিয়ে গবেষকরা বলেন, “ধরা যায় একজন ১৩ বছর বয়সি ছেলের কথা যার উচ্চতা পাঁচ ফুট এবং তার ‘বডি ম্যাস ইনডেস্ক’য়ের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ৫.৯ কেজি বেশি। ছেলেটির পরিণত বয়সে মূত্রথলিতে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা ১০ শতাংশ বেশি। একই বয়সের আরেকটি ছেলে যে আগের ছেলেটির চাইতে তিন ইঞ্চি বেশি লম্বা, তার জন্য ঝুঁকি কমে দাঁড়াবে ছয় শতাংশে।

এই গবেষণার জ্যেষ্ঠ লেখক ডা. জেনিফার এল. বেকার বলেন, “সহজ করে বলতে হলে, পাঁচ ফুট উচ্চতার দুইজন ১৩ বছর বয়সি ছেলের ওজন যদি ৪২.৫ কেজি ও ৪৮.৪ কেজি হয়, তবে যার ওজন বেশি তার মূত্রথলির ক্যান্সারের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১০ শতাংশ বেশি।”