• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

২২ দিনে শরীয়তপুরে ৩১১ জেলেকে দন্ড

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২৩  

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : মা ইলিশ রক্ষায় ১২ অক্টোবর থেকে ২২ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল সরকার। ২ নভেম্বর রাত ১২ টায় শেষ হয় নিষেধাজ্ঞা। তবে মৎস্য বিভাগে, জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা ও তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। বিগত বছরের তুলনায় এবছর মা ইলিশ নির্বিগ্নে নদীতে ডিম ছাড়তে পেরেছে বলে জানান মৎস্য বিভাগ। এদিকে নিষেধাজ্ঞা শেষে শরীয়তপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে নেমেছে জেলেরা।

জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিনে শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট, ভেদরগঞ্জ, নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় ১২১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ৩১১টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ৩১১ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল দেয়া হয়েছে। ৪ লাখ ৭৬ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে ইলিশ শিকারের সময় জেলেদের কাছ থেকে ৫৯ লাখ ৯৪ হাজার ৩৯০ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পুড়িয়ে ফেলা হয়। উদ্ধার করা হয় ২ হাজার ৯৫২ কেজি ইলিশ। এগুলো স্থানীয় বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদরাসায় বিতরণ করা হয়। এছাড়া মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত ৪৮টি ট্রলার আটক করা হয়। জেলায় কার্ডধারী ২০ হজার জেলেকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে সহায়তা হিসেবে প্রতি জেলেকে ২৫ কেজি করে ৫০০ মেট্টিকটন ভিজিএফ চাল দেওয়া হয়েছে।

গোসাইরহাট ঠান্ডার বাজার এলাকার জেলে শাহিন খা, মাছুম সরদার বলেন, অভিযানের সময় আমাদের চাল দিয়ে সহযোগিতা করেছে সরকার। তবে সংসারে লোকজন বেশি তাই ওই চাল পর্যাপ্ত না। তবুও আমরা সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে ২২ দিন নদীতে মাছ ধরিনি। নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ নদীতে মাছ ধরতে নেমেছি।

ঠান্ডার বাজারের আড়ৎদার মো. সুরুজ ফকির বলেন, সরকারের অভিযান দিলে আমরা আড়তে মাছ কেনা-বেচা বন্ধ রাখি। জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতেও বলি।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহেল বলেন, ২২ দিন যেন জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে না পারে এজন্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। জেলেরা যাতে অভিযানের সময় নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকে তাই বাউল গান, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের ব্যস্ত রাখতে চেষ্টা করেছি। অসাধু জেলেদের আটক করে ভ্রম্যমান আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হয়। আর জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে এবং জব্দকৃত ইলিশ মাছ মাদরাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনূল হক বলেন, অভিযানের আগে ও অভিযানের সময় জেলার নদীর তীরবর্তী হাট-বাজার, আড়ৎ, জেলে পল্লীসহ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ, ব্যানার-ফেস্টুন স্থাপন, মাইকিং, উদ্ভুদ্ধ করণ সভা, সেমিনার চলমান ছিল। তাই বিগত বছরের তুলনায় এবছর মা ইলিশ নির্বিগ্নে নদীতে ডিম ছাড়তে পেরেছে। আশা করি এটি ইলিশ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভালো প্রভাব ফেলবে। জেলায় ২৮ হাজার ১৪৮ জন কার্ডধারী জেলের মধ্যে ২০ হাজার জেলেকে ৫০০ মেট্রিকটন চাল দেয়া হয়েছে। প্রতি জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে।