• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
চাকরির পেছনে না ছুটে যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান ‘সামান্য কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে দেশের সর্বনাশ করবেন না’ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ

‘বাংলাদেশের মাটি থেকে প্রতিবেশি দেশে জঙ্গি হামলা হতে দেবো না’

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮  

আবারও সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থানের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিকে তিনি প্রতিবেশি দেশে জঙ্গি হামলার ঘাঁটি হতে দেবেন না। ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম টাইমস নাউকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, অন্য দেশে হামলায় মদদ দিলে নিজের দেশও আক্রান্ত হতে পারে। শনিবার গণভবনে অনুষ্ঠিত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করাই তার সরকারের অগ্রাধিকার। টাইমস নাউ-এর সাংবাদিক সৃঞ্জয় চৌধুরীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আঞ্চলিক সহযোগিতা, তিস্তার পানি বণ্টন ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও নিজের অবস্থান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

 

গতকাল গণভবনে ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম টাইমস নাউ-এর জাতীয় বিষয়াবলী সংক্রান্ত সম্পাদক সৃঞ্জয় চৌধুরীকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে কোনও ভারতীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ঘাঁটি না থাকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান সাংবাদিক সঞ্জয়। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কোনভাবেই চাই না, আমাদের দেশের মাটিকে ব্যবহার করে অন্য কোনও প্রতিবেশি দেশে সন্ত্রাসী হামলা হোক। সে কারণেই দেশে সন্ত্রাসবাদী কোনও ঘাঁটি আছে কিনা, কিংবা অন্য কোনও তৎপরতা চলছে কিনা; আমরা সবসময় তা খেয়াল করি। তেমন কিছুর খোঁজ পেলে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিই। এটা আমাদের খুব স্পষ্ট অবস্থান।’

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘কেন আমরা আমাদের দেশের মাটিকে সন্ত্রাসী তৎপরতায় ব্যবহৃত হতে দেব?’ 'আপনি যদি অন্য কোনও দেশে সন্ত্রাসী তৎপরতায় মদদ দেন, তো একদিন আপনার দেশই ভোগান্তির শিকার হবে।’ মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।  এ প্রসঙ্গে অস্ত্র চোরাচালানের দৃষ্টান্ত টেনে বলেন, ‘আমাদের দেশ একসময় অস্ত্র চোরাচালানের নিরাপদ ভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।  এখন প্রশ্ন হলো, কেন সেটা আমরা হতে দেব? যদি দিই, একদিন  আমার দেশের মানুষও ভোগান্তির শিকার হবে। কারণ, কোনও না কোনভাবে দেশের কিছু মানুষ ওই তৎপরতায় উৎসাহিত হবে।’ শান্তি আর উন্নয়নকে তার সরকারের অগ্রাধিকার হিসেবে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তি ছাড়া উন্নয়ন হবে না। আমি তাই দেশে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় রাখার চেষ্টা করি। অর্থনৈতিক উন্নয়নই আমাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।’

সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক সৃঞ্জয় প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে যে সংকটগুলো তাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে, তার অনেকগুলোই পাকিস্তানের সৃষ্টি করা। সে সময় ২০১৬ সালের পর বাংলাদেশে আর কোনও জঙ্গি হামলা না হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি। উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন,  ‘সন্ত্রাসীদের কোনও দেশ নাই, কোনও সীমানা নাই। নিজেকে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের শিকার উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, তিনি আর তার বোন শেখ রেহানা ছাড়া পরিবারের বাকি সব সদস্য ৭৫’এর ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের ৬ বছর পরে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে নিজেও বারবার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় তার সমাবেশস্থলে বোমা পুতে রাখা ও ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।

পাকিস্তানের সার্ক সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশ না নেওয়ার প্রসঙ্গ ধরে সাংবাদিক সঞ্জয় প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘ভারতের  আগে আপনি অনুধাবন করেছেন, সার্ক সম্মেলনে যাওয়া যথাযথ নয়।’ জবাবে শেখ হাসিনা জানান, বাংলাদেশের সিদ্ধান্তটি একান্তই নিজেদের। বলেন, ‘প্রতিবেশিদের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক সব সময়ই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত আঞ্চলিক সহযোগিতা। তবে প্রত্যেক দেশেরই তাদের নিজ নিজ ভূমিকার পেছনে নিজস্ব কারণ থাকে। হুম, আমি স্বীকার করছি, আমাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। আমাদের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালেও সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, মানুষ মারার চেষ্টা হয়েছে। সারা বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা দেখা গেছে। তবে আমরা যেটা করেছি, তা হলো আমরা একে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি, কমিয়ে আনতে পেরেছি। তবে পাকিস্তানের চিত্র দেখেন আপনি...’

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক একান্তই তাদের দ্বিপাক্ষিক ব্যাপার। আমি এর মধ্যে ঢুকতে চাই না, কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমি মনে করি, মানুষের কথা ভাবতে হবে আমাদের। সাধারণ মানুষের  কথা। তাদের জীবনযাপন কেমন, তারা কী চিন্তা করছে, তারা কী করে একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারে... সার্কের সাফল্য প্রশ্নে মন্তব্য করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন, আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে তখন, যখন একটি দেশ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। তিনি বলেন, ‘ আমাদের এমন একটি পথ খুঁজে বের করতে হবে যে কোনও দেশ অন্য কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তেক্ষপ করবে না। সেটা নিশ্চিত হলে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হবে।  হস্তক্ষেপ ঘটলে বন্ধুত্ব সম্ভব না’। সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারও তিস্তা সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ নেবে।