• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

সমুদ্রের সম্পদটাও যেন কাজে লাগে: প্রধানমন্ত্রী

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০২০  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা সবসময় চেয়েছি আমাদের এই সমুদ্রসীমা শুধু রক্ষা করা না, সমুদ্রের সম্পদটাও যেন আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজে লাগে। তার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে আমরা ব্লু ইকোনমি এই ধারণা নিয়েছি এবং তার ওপর আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই সমুদ্রের যে সব সম্পদ আমাদের রয়েছে সেই সম্পদ আহরণ করা, সেগুলোকে কাজে লাগানো সেটাই আমাদের লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা ওমর ফারুক’,  ‘আবু উবাইদাহ’,  ‘প্রত্যাশা’,  ‘দর্শক’ এবং ‘তল্লাশী’ এর কমিশনিং প্রদানকালে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী  বলেন, ‘সরকার সমুদ্রসীমা রক্ষার পাশাপাশি সমুদ্র সম্পদ আহরণ করে দেশকে সমৃদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে। সমুদ্র সম্পদ  অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে। আমাদের সেই সুযোগও রয়েছে। সেগুলোকে ব্যবহার করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’

নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজের কমিশনিং (ছবি: আইএসপিআর)

নৌবাহিনীর প্রশংসা

সমুদ্রসীমা ও সম্পদ রক্ষায় নৌবাহিনীর প্রশংসা করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের নৌবাহিনীর সদস্যরা লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা থেকে শুরু করে সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা বিধান করে যাচ্ছেন। এটা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। নৌবাহিনী শান্তিকামী বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশবাসীর আস্থা ও প্রশংসা অর্জন করেছে। বিশেষ করে এবার করোনাভাইরাসের সময়ে আমাদের নৌবাহিনী যথাযথ ভূমিকা রেখেছে। তাছাড়া যেকোনও প্রাকতিক দুর্যোগেও তারা মানুষের পাশে দাঁড়ায় এবং যথাযথ ভূমিকা রাখেন। মানুষকে সাহায্য করে থাকেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু নৌবাহিনী বলে না, আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সবাই অনেক ভালো কাজ করছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের প্রতিরক্ষা নীতিমালা করে দিয়ে গিয়েছিলেন ১৯৭৪ সালে। তার আলোকে আমরা ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন শুরু করেছি।’

শক্তিশালী আধুনিক সশস্ত্র বাহিনী

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে শক্তিশালী আধুনিক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। কিন্তু  যদি বাংলাদেশ কখনো বহিঃশত্রুর আক্রমণ দ্বারা আক্রান্ত হয় তাকে মোকাবিলা করবার মতো সক্ষমতা আমরা অর্জন করতে চাই। তাই আমরা সমুদ্রসীমা রক্ষার জন্য নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলছি। আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। জাতির পিতা আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে বলেছেন- সকলের সঙ্গ বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা সেই নীতিতেই বিশ্বাস করি।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা বলে গেছেন- ভূরাজনৈতিক প্রয়োজনে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠন করা হবে।  আমরা তাঁর (বঙ্গবন্ধু) পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। নৌবাহিনীকে আধুনিক, দক্ষ, শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যুদ্ধ জাহাজ সংগ্রহ এবং বিদ্যমান জাহাজ সমূহের অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমরা বাস্তবমুখী পরিকল্পনা নেই।’

নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজের কমিশনিং (ছবি: আইএসপিআর)

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আমাদের নৌবাহিনীকেও আধুনিক এবং শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা নৌবাহিনীতে বর্তমান প্রজন্মের উন্নত সাবমেরিন, যুদ্ধ জাহাজ, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্র্যাফট, হেলিকপ্টারসহ আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজন করেছি। এর মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা একটি ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী গঠনের প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা এটাই চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আজ যে জাহাজগুলো কমিশনিং হলো সেগুলো আমাদের নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে। নৌবাহিনীর অগ্রযাত্রা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো।’

তিনি বলেন, ‘আজ আমরা পাঁচটি অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজ বানৌজা ওমর ফারুক, আবু উবাইদাহ, প্রত্যাশা, দর্শক এবং তল্লাশী আমরা নৌবাহিনীতে সংযোজন করতে সক্ষম হলাম। আপনারা জানেন গণচীন থেকে তৈরি করা আধুনিক সমরাস্ত্র সজ্জিত দুইটি ফ্রিগেড ও একটি অত্যাধুনিক করবেট এবং আমাদের নিজস্ব খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরি দুইটি আধুনিক জরিপ জাহাজ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নৌবাহিনীর ক্ষমতাকে আরও জোরদার করবে। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’

জাহাজ নির্মাণ সক্ষমতা

নিজ দেশে জাহাজ নির্মাণ সক্ষমতার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজস্ব ইয়ার্ডে জাহাজ তৈরির সক্ষমতা এটা আমাদের আত্ম বিশ্বাসকে বলীয়ান করে। আমরা হয়তো ভবিষ্যতে অন্য দেশের জন্যও জাহাজ তৈরি করতে পারবো এবং দিতে পারবো। সেই সক্ষমতা আমরা অর্জন করবো।’

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান

সবাইকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শীতকাল আসছে। আবার করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। ইউরোপে ইতোমধ্যেই অনেক জায়গায় লকডাউন হয়েছে। আমাদের দেশের মানুষকে আমরা সুরক্ষিত রাখতে চাই। কাজেই এখন থেকেই সচেতন থাকতে হবে। সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

জাহাজ কমিশনিং

চট্টগ্রামে বানৌজা ঈসা খান নৌ জেটিতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জাহাজসমূহের অধিনায়কদের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল।

নতুন কমিশনিং পাওয়া দুইটি আধুনিক ফ্রিগেট বানৌজা ওমর ফারুক, আবু উবাইদাহ; একটি করভেট যুদ্ধজাহাজ প্রত্যাশা এবং দুইটি জরিপ জাহাজ বানৌজা দর্শক ও তল্লাশী বাংলাদেশের জলসীমা সুরক্ষায় এবং নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

যুদ্ধজাহাজগুলো ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এগুলোতে শত্রু বিমান, জাহাজ এবং স্থাপনায় আঘাত হানতে সক্ষম আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কামান, ভূমি থেকে আকাশে এবং ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপনযোগ্য মিসাইল, অত্যাধুনিক থ্রিডি রাডার, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, রাডার জ্যামিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরণের যুদ্ধ সরঞ্জামাদিতে সুসজ্জিত।